বাসুদেব ভট্টাচার্জী খোয়াই ৪ঠা অক্টোবর…. আজ থেকে আট বছর আগে তেলিয়ামুড়া থানা ধিন হদ্রাই বাড়ি এলাকার ১৫ বছরের এক নাবালিকা মেয়েকে গণধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে খোয়াই এর এক আদালত এক ব্যক্তিকে যাবত জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল বৃহস্পতিবার । যা ছিল তেলিয়ামুড়া থানার এক বড় সাফল্য ।সেই তথ্য তুলে ধরতে শুক্রবার দুপুরে প্রেসমিট করলেন জেলা পুলিশ সুপার রমেশ চন্দ্র যাদব ।শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার রমেশ চন্দ্র যাদব উনার অফিস কার্যালয়ে এক প্রেস মিটে মিলিত হন উক্ত প্রেসমিটে জেলা পুলিশ সুপার ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রবীর পাল তেলিয়ামুড়ার পুলিশ আধিকারিক পান্নালাল সেন । উক্ত প্রেস মিটে জেলা পুলিশ সুপার রমেশ চন্দ্র যাদব সাংবাদিকদের জানান আজ থেকে আট বছর আগে ২০১৬ সালে তেলিয়ামুড়া থানা ধিন হদ্রাই বাড়ি এলাকায় ১৫ বছরের এক নাবালিকা মেয়েকে গণ ধর্ষণ করে খুন করা হয় । ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান ২০১৬ সালের ৯ই মে তেলিয়ামুড়া থানাধীন হদ্রাই বাড়ি এলাকার এক পনেরো বছরের নাবালিকা মেয়ে ঐদিন সন্ধ্যে পাঁচটায় পাশের গ্রাম দার্জিলিং টিলায় তার এক বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ছিল। এবং ঐদিন রাতে আর মেয়েটি বাড়িতে ফিরে আসেনি । শেষে পরের দিন সকালে ১০ই মে দার্জিলিং টিলার শ্মশান ঘাটের সামনে নাবালিকা মেয়েটির মৃতদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী শেষে খবর দেওয়া হয় তেলিয়ামুড়া থানায়। ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয় । এবং দেখতে পায় মেয়েটির মাথায় আঘাত রয়েছে সারা শরীরের কাপড় ছেঁড়া শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে তা দেখে পুলিশের প্রথম ধারণা হয়েছে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছ হয়ত। শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ নিয়ে আসলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে এই রিপোর্ট উঠে আসে । এর পর মৃত নাবালিকা মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ঐদিন তেলিয়ামুড়া থানায় সাত জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয় যার কেইস নম্বর ছিল 50/2016 এবং এই মামলার ধারা গুলি ছিল 376
(D) 302 and 34
IPC along with pocso 6 act এই ধারায় মামলা নিয়ে তেলিয়ামুরার পুলিশ তদন্ত নেমে পড়ে এই মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন তৎকালীন সময়ে তেলিয়ামুড়া থানার এস আই সুমন উল্লা কাজী এবং তৎকালীন সময়ের তেলিয়ামুড়ার পুলিশ আধিকারিক লাকি চৌহান । তদন্ত নেমে পুলিশ মামলা করা সেই সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেফতার করে এরা হলেন সালফা জমাতিয়া বীরবল জমাতিয়া , বিনয় জমাতিয়া, থাইল্যান্ড জমাতিয়া শুভ্রাই জমাতিয়া , করিনা জমাতিয়া এই ছয়জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অন্যদিকে এই ধর্ষণ কান্ডের আরেক আসামি খাক চান মুন্ডা পলাতক ছিল তাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি আজও সে পালাতক । তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় খাক চান মুন্ডাকে তার এলাকাতে ঘোরাঘুরি করতে মাঝে মধ্যে দেখা গেছে । যাইহোক শেষে পুলিশ তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় । তাতে করে দীর্ঘ আট বছর এই মামলার শুনানি পর্ব চলে তাতে করে মোট ৪৭ জন সাক্ষী দেন আদালতে দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে এই মামলা চলাকালীন সময়ে বীরবল জমাতিয়া ও বিনয় জমাতিয়া মারা যায় এবং মামলা চলাকালীন সময়ে করিনা জমাতিয়া সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে আদালত থেকে মুক্তি পায় । আদালতের নিকট ৪৭ জনের সাক্ষীর সত্যতার উপর ভিত্ত করে খোয়াই এর এক আদালত বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করার অভিযোগে সালফা জমাতিয়াকে যাবত জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত করল । আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব ধারা গুলি লাগানো হয়েছিল তাতে 376(D এবং পকসো ৬ ধারায় কুড়ি বছরের জেল হজতের শাস্তি দেন এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা কেরেন,অনাদায়ে আরো পাঁচ মাসের জেলের আদেশ দেন । অন্যদিকে 302 ধারায় যাবত জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন এবং অনাদায় আরও দশ মাসের জেল হাজতে থাকার আদেশ দেন আদাল । তেলিয়ামুড়া থানার দুই অফিসারের তদন্তক্রমে এই ঘটনার এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দন্ডিত করল আদালত । এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তেলিয়ামুড়া থানা এবং তদন্তকারি সেই দুই অফিসার বলে জানান পুলিশ সুপার রমেশ চন্দ্র যাদব । তবে আদালতের এই রায় মৃত নাবালিকা মেয়ের পরিবার টি কিছুটা হলেও মানুসিক দিক দিয়ে শান্তি পাবে ।অন্যদিকে আদালতের এই রায়ের কারণে সমস্ত জেলা বাসি আদালতের উপর ব্যাপক খুশি। আদালতের এই রায় প্রদানের করনে আদালতের উপর সাধারণ জনগণের বিশ্বাসটা আরও বেড়ে গেল ।