৮ দফা দাবিকে সামনে রেখে শনিবার আমরা বাঙালি সদর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে আমরা বাঙালি দল। এদিন সাংবাদিকদের সম্মুখে গত ৩রা অক্টোবর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা কর্তৃক বাংলাভাষা সহ মারাঠি, পালি, প্রাকৃত ও অসমিয়া ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি প্রদান করার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সভাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায় আমরা বাঙালি দল। এদিন সাংবাদিকদের আমরা বাঙালী ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল জানান উল্লেখিত খবরে দলমত নির্বিশেষে বাঙালী জাতিসহ সংশ্লিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর সব ভাষাপ্রেমী মানুষ দারুনভাবে উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। আমরা বাঙালী দলের পক্ষ থেকে আমরা, সবার সঙ্গে এই আনন্দ ভাগকরে নিতে চাই। তাছাড়া বাঙালীদের মাতৃভাষা বাংলা ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত-২২টি ভাষার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠভাষা, নোবেল পুরস্কারের ভাষা, আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত বিশ্বের মধুরতম ও কোমলতম ভাষা হলেও ধ্রুপদীভাষা হিসাবে স্বীকৃতি আদায় করতে আমাদেরকে অনেক লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমাদের পরবর্তী আন্দোলনের ধাপ হচ্ছে- বাঙালীদের বাসস্থান, নাগরিকত্ব তথা সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা। বস্তুতঃ এরাজ্যে ও পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ‘আমরা বাঙালী’ দলের ধারাবাহিক আন্দোলন ছাড়াও ত্রিপুরার ‘বাংলা একাডেমি’ সহ সমগ্র বাংলার অঞ্চল জুড়ে বাংলা ভাষাপ্রেমী বিদ্বত সমাজের প্রচেষ্টা এই কৃতিত্ব অর্জনের পেছনে বিরাট অবদান রয়েছে। তবে বাংলাসহ ঘোষিত ভাষাগুলি ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়াই শেষ কথা নয়। সংশ্লিষ্ট ভাষাগুলির যাতে প্রচার-প্রসার ও ধারাবাহিক উন্নতি বজায় থাকে তারজন্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়ন ছাড়াও আরো কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ , ভারতের বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলের বাংলা ভাষার উন্নয়ণে পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ ও ভাষা গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন।ধ্বংস হওয়া বাংলাভাষার, প্রাচীন পান্ডুলিপি সহ স্মৃতি চিহ্নগুলি যথাযত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।বাংলা ভাষার প্রাচীন লোকগাথা, লোকসংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারের ব্যবস্থা করা ।বাংলাভাষার সাহিত্যিক, শিল্পী কলাকুশলীদের উৎসাহব্যঞ্জক পুরস্কারের ব্যবস্থা সহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ সহ বাঙালী অধ্যুষিত কোন অঞ্চলে বাংলামাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করা।
বিদ্যালয় থেকে কলেজ তথা বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত বাংলাভাষার বিষয় শিক্ষক নিয়োগ করা ।
জয়েন্ট এন্ট্রাসহ কর্মপ্রাপ্তির সমস্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরদানের ব্যবস্থা বাংলা ভাষায় করা।
অফিস-আদালত, থানা-প্রশাসনসহ সমস্ত সরকারী কাজে ও রেল, বিমান, ডাক এবং ব্যাংক পরিষেবায় বাংলাভাষা ব্যবহার ইত্যাদি গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আমরা মনে করি বলে জানান তিনি।