Wednesday, October 16, 2024
বাড়িখবররাজ্যবন্যায় প্রাথমিক রিপোর্টে পূর্ত দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১,৮২৫ কোটি টাকা

বন্যায় প্রাথমিক রিপোর্টে পূর্ত দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১,৮২৫ কোটি টাকা

সাম্প্রতিক বন্যায় রাজ্যে ৪,৬৫৮.৮৬ কিমি সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাতে সড়ক, সেতু, কালভার্টের ক্ষতি সহ পূর্ত দপ্তরের এখন পর্যন্ত ১,৮২৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্ত ও স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এ সংবাদ জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, ভারী বর্ষণের ফলে রাজ্যের ৪,৬৪৪টি স্থানে ভূমিধস হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪,০৮-৭টি স্থানে ভূমিধুস সরানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভূমিধস সরানোর কাজে ৩২ ১টি জেসিবি। ডজার/ ডাম্পার, টিপার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ভূমিক্ষয়ের ফলে ৩,৭৩৯টি স্থানে সড়ক, সেতু ও কালভার্ট ভেঙ্গে পড়েছে। এর মধ্যে ১,০৪৮টি স্থানের প্রাথমিক পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভূমিধুস সরানো এবং সড়ক, সেতু ও কালভার্টের পুনরুদ্ধারের কাজে ১,৮৫০ জন শ্রমিক/ হেল্পার/ ড্রাইভার ২২৮টি এজেন্সির মাধ্যমে নিযুক্ত করা হয়েছে। ভূমিধস ও পুনরুদ্ধারের কাজগুলি ২০০ জন ইঞ্জিনীয়ার সরাসরি তদারকি করছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্ত দপ্তরের সচিব জানান, ভারী বর্ষণের ফলে রাজ্যের প্রধান ১১টি নদীর মধ্যে ১০টি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়েছিল। ফলে ৯৭.৩৪ কিমি বাঁধ ফুঁটো/ ক্ষয়/ ফাটল দেখা দিয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতির সময় নদীর পাড়গুলোতে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বালির ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তিনি জানান, ভারী বর্ষণের ফলে উদয়পুর, ঋষ্যমুখ, কৈলাসহর, সাব্রুম সহ বেশ কয়েকটি স্থানের বাঁধগুলি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জলসেচের বিভিন্ন উৎসের যেমন ডাইভারসন, লিফট ইরিগেশন, হাইপাওয়ার লিফট ইরিগেশন, ডিপ টিউবওয়েল, স্মলবোর টিউবওয়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাতে জলসম্পদ দপ্তরের এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যসচিব কিরণ গিত্যে জানান, স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে বন্যা পীড়িত এলাকায় স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা এখন পর্যন্ত ১,১০৭ বার ত্রাণ শিবিরগুলিতে পরিদর্শন করেছেন।

স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ১,৬৫০টি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। তাতে ৪২,১৫৫ জন স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের মাধ্যমে ২৩, ১৬৫টি পরিবারের ৩৫,৪৭৭ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব জানান, স্বাস্থ্য শিবিরগুলিতে ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, ত্বক সংক্রমণ, জ্বর, আঘাত ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানীয়জল ফুটিয়ে পান করার জন্য বন্যায় দুর্গত মানুষদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত ৭৩৯ ব্যাগ ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডায়রিয়া, ত্বক সংক্রমণ, সাপে কামড়ের ঔষধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনীয়ার রাজীব দেববর্মা, জলসম্পদ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনীয়ার শ্যামলাল ভৌমিক, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরার মিশন ডিরেক্টর রাজীব দত্ত প্রমুখ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

18 − seventeen =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য