তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি–
দীর্ঘ কয়েক বছর পর ফের কি তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে বর্তমান পরিস্থিতি এমনটাই বোঝা যাচ্ছে। হঠাৎ করে ম্যালেরিয়া রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে দিন গুজরান করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গিরিবাসিরা। একদিকে শারদ উৎসবে মাতোয়ার যখন গোটা খোয়াই জেলার স্বাস্থ্য দপ্তর ঠিক তখনই ম্যালেরিয়ার থাবা বসাতে শুরু করল তেলিয়ামুড়া মহকুমার অত্যন্ত অঞ্চল গুলিতে। মুঙ্গিয়াকামি ব্লকের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীন ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে এক বছরের শিশু থেকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ মহিলা সহ পাঁচজন চিকিৎসাধীন তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে।
ঘটনায় জানা যায় দীর্ঘ এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় ঘরে পড়ে রইল বেশ কয়েকজন রিয়াং সম্প্রদায়ের শিশু থেকে বৃদ্ধ মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের তুইকর্মা এডিসি ভিলেজের তীর্থমনি এলাকায়। গত দু তিন দিন ধরে তাদের অবস্থা খারাপ দেখে খবর দেওয়া হয় তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স কে। অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে তাদেরকে তীর্থমনি এলাকা থেকে নিয়ে আসে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য। শুধু তীর্থমনি নয় কাকড়া ছড়া এডিসি ভিলেজেও ম্যালেরিয়া থাবা বসাতে শুরু করেছে। সেখানকার হাজরা পাড়ার নিরেজ জয় রিয়াং নামে সাত বছরের একটি শিশুর শরীরেও ম্যালেরিয়ার জীবাণু সনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। তীর্থমনি এলাকার যারা বর্তমানে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাদের নাম হলো এক বছরের শিশুকন্যা লারী রুঙ রিয়াং। পিতা গঙ্গা জয় রিয়াং। তিন বছরের শিশুকন্যা মারি রুঙ রিয়াং পিতা খজেন্দ্র রিয়াং। তের বছরের সুনীল জয় রিয়াং। এবং ৬৫ বছরের বৃদ্ধ মহিলা মোসলা বতি রিয়াং। এদের পাঁচজনেরই চিকিৎসা চলছে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে। এ ব্যাপারে বলতে গিয়ে গঙ্গা জয় রিয়াং জানান,, তাদের জর না কমায় খবর দেয় তেলিয়ামুড়া হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ই অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে তাদের নিয়ে আসে তেলিয়ামুড়া মহকুম হাসপাতালে। এলাকা সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিন ধরেই ঐ সকল এলাকাগুলিতে কোন ধরনের স্বাস্থ্য শিবির হচ্ছে না।স্বাস্থ্যকর্মীরাও ম্যালেরিয়া জুন বলে আখ্যায়িত একসময়ের বিলাই হাম কাঁকড়াছড়া তীর্থমনি জায়গাগুলিতে এখন আর কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না। তারা এও জানান আরো অনেক বৃদ্ধ থেকে শিশু জরে আক্রান্ত হয়ে গ্রামে পড়ে আছে টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসছে না তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে। কারণ সেখান থেকে গাড়ি করে তেলিয়ামুড়া হাসপাতালে আসা প্রচন্ড ব্যয়বহুল যা দিন এনে দিন খাওয়া সহজ সরল মানুষ গুলির কাছে দুঃসাধ্য ব্যাপার। উল্লেখ্য ২০১৫-১৬ সালে ওই সকল এলাকাগুলিতে ব্যাপক ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছিল একাধিক শিশু থেকে বৃদ্ধের। তখনকার সময়ে মহকুমা শাসক শাসকের তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য শিবির অস্থায়ী স্বাস্থ্য শিবির এবং তেলিয়ামুড়া হাসপাতালকে কাজে লাগিয়ে এক প্রকার ম্যালেরিয়া রোগকে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেছিল। অনেকাংশে সফলও হয়েছিলেন মহকুমা শাসক। তবে বিগত ৬-৭ বছর ধরে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব তেমন দেখা না গেলেও বর্তমানে ঐ সকল এলাকাগুলিতে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। সময় থাকতে যদি বর্তমানে ফের একবার ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাবকে নিয়ন্ত্রণে না আনা হয় তাহলে হয়তোবা ভবিষ্যতে এই মরণব্যাধি ম্যালেরিয়া আরো বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে শুভ বুদ্ধি মহলের অভিমত। এদিকে ওই এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা চিন্তিত কবে নাগাদ তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা করা হবে।