আমাদের রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে প্রায় ৪ লক্ষ শিশু রয়েছে। রাজ্য সরকার রাজ্যের সবকয়টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে লেখাপড়া, পুষ্টি সরবরাহের পাশাপাশি বিদ্যুৎ, পানীয়জল, শৌচালয় স্থাপনসহ সব্জিচাষ ও খেলাধূলার ব্যবস্থা সম্প্রসারণের প্রয়াস নিয়েছে। রাজ্য সরকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে আপগ্রেড করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সমাজ কল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিস্কু রায় আজ উজান অভয়নগরস্থিত বাক পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রাঙ্গনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ অ্যাপ’র সূচনা করে একথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি বাক পুনর্বাসন বিদ্যালয়টিকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীতকরণেরও উদ্বোধন করেন। এই বিদ্যালয়ে মূক ও বধির ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী বিনামূল্যে থাকা ও পড়াশুনার সুযোগ পাবে। পরবর্তী সময় এই বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত উন্নীত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষামন্ত্রী টিস্কু রায় বলেন, রাজ্যের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে মা ও শিশুদের সমস্ত পরিষেবাগুলি ঠিকমত দেওয়া হচ্ছে কিনা সেটা বাস্তব সম্মতভাবে প্রযুক্তির সহায়তায় পর্যবেক্ষণ করার জন্য এই অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এই অ্যাপ এর মাধ্যমে যদি কেউ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে চান তাহলে তাকে ঐ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৫০ মিটার এলাকার ভেতরে গিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিবরণ দাখিল করতে হবে। এই অ্যাপ’র মাধ্যমে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সমস্ত বিবরণ নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট তৈরী করে নেবে এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সমস্ত তথ্য ঐ অ্যাপে সংরক্ষিত থাকবে। এই অ্যাপ-এর মাধ্যমে দপ্তরের সুপারভাইজারসহ অন্যান্য স্তরের কর্মীরা প্রতি মাসে কয়টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন সেটা স্থির করা যাবে এবং সেই লক্ষ্য কতটুকু পূর্ণ হল সেটাও পরীক্ষা করা যাবে। এই অ্যাপ-এর আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল এতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিভিন্ন আঙ্গিকের ছবি আপলোড করা যাবে। ফলে ঐ কেন্দ্রের প্রকৃত অবস্থা প্রত্যক্ষ করে দপ্তরের মন্ত্রী, সচিব, অধিকর্তা ও অন্যান্য আধিকারিকগণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেগুলিতে শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি ও উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে ওজন ও উচ্চতা পরিমাপ করা হয়। মা ও শিশুর সমস্ত তথ্য সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে মিশন সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি এবং পোষণ ২.০ এর প্রত্যেক স্তরের কর্মীদের মোবাইল ফোন দেওয়া হয়। এই মোবাইল ফোনের পোষণ ট্র্যাকার অ্যাপের মাধ্যমে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সমস্ত পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য মোবাইলে লিপিবদ্ধ করেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুরনিগমের কাউন্সিল সদস্য হীরালাল দেবনাথ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস। অনুষ্ঠানে মন্ত্রীসহ অতিথিগণ সম্পারী দেববর্মা সহ ৫ জন গর্ভবতী মহিলাকে ও ৫ জন অপুষ্টিজনিত বালিকার হাতে পুষ্টি কিট তুলে দেন। এছাড়া মন্ত্রীসহ অতিথিগণ একজন প্রসূতি মাকে সাধ খাওয়ান এবং একজন বাচ্চাকে অন্নপ্রশন খাওয়ান। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা এল রাঞ্চল। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের আবাসিক ছাত্রীগণ।