Monday, November 11, 2024
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদগত ৪-৫ দিনের বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে বন্যার ফলে বহু মানুষ ত্রান শিবিরে...

গত ৪-৫ দিনের বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে বন্যার ফলে বহু মানুষ ত্রান শিবিরে আশ্রয় নেয়। নদীর জল কমতেই জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সমস্ত কৃষকদের

বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২৩শে আগস্ট …..গত চার পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্য তথা খোয়াই বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারি জনগণকে বন্যার কবলে পড়তে হয়েছে। খোয়াই এর নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী অধিকাংশ জনগণের বাড়ি ঘরে বন্যার জল প্রবেশ করেছে, বন্যা কবলিত এলাকার জনগণকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়েছে। আবার বন্যা কবলিত এলাকার বড় একটা অংশের জনগণ ত্রাণ শিবিরে অংশগ্রহণ না করলেও বাড়ি ঘরে বন্যার জল ঢুকার কারণে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। খোয়াই মহকুমা এলাকার যে সমস্ত এলাকাগুলি বন্যায় কবলিত হয়েছেন সেগুলি হল খোয়াই মরানদী এলাকা, বনকর, তাঁত চৌমুন, পশ্চিম সোনাতলা, চেবরী, রামচন্দ্র ঘাট, জামিরা , ঘিলাতলি কল্যাণপুর সহ আরো বিভিন্ন এলাকা বন্যায় কবলিত হয়েছে। খোয়াই জেলার মধ্যে সর্বমোট একশত ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল। যদিও বন্যা পরিস্থিতিটা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ভালো সংখ্যক বন্যা কবলিত এলাকার জনগণ ত্রাণ শিবির ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তারপরও ভালো সংখ্যক জনগণ এখনো নিজেদের বাড়ি ঘরে যেতে পারছেন না। কারণ বন্যার জল চলে যাওয়ার পরও বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে সাধারণ জনগণের বাড়ি ঘরের অবস্থা একেবারে বিপন্ন হয়ে থাকে বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে অর্থাৎ বাস করার মত উপযুক্ত করে তুলতে কিছুটা সময় লেগে যায়। তারপরও আশা করা যাচ্ছে আগামী ২-৩ দিনে মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার জনগণ নিজেদের বাড়ি-ঘরে চলে যেতে পারবে, যদি প্রকৃতি তাদের সাহায্য করে ।

এখানে উল্লেখ করতে হয় বন্যা চলাকালীন সময়ে সাংবাদিকরা যখন খোয়াই মহকুমা এলাকা বন্যা কবলিত এলাকার জনগণের জন্য যেই ত্রাণ শিবির গুলি খোলা হয়েছিল সেগুলিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা হয়ে যায় খোয়াই জেলা স্বাস্থ্য অধিকারীক নির্মল সরকার ও খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে সাংবাদিকরা ত্রাণ শিবিরে আগত বন্যা কবলিত জনগণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তারা জানায়, এখন কোন সমস্যা নেই কিন্তু বন্যা শেষ হওয়ার পর জল সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। যদিও জেলা স্বাস্থ্য অধিকারীক বললেন এই সমস্ত সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর প্রস্তুত রয়েছেন।

অন্যদিকে অপ্রত্যাশিত বন্যার ফলে প্রচুর পরিমাণ ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে স্থানীয় কৃষক ও মৎস্য চাষী রা। প্রচুর সংখ্যক কৃষকের জমি ফসল বন্যার জলে তলায় চলে যায় এবং মৎস্য চাষীদের মাছ চাষের পুকুর বন্যার জলে সমস্ত মাছ চলে যায়। আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতে হয় খোয়াইয়ের চেবরী, কল্যাণপুর, মহরছড়া সহ আরো অন্যান্য এলাকাতে একটা বৃহৎ অংশের মৎস্য চাষীরা রেনু উৎপাদনের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, ওই সকল রেনু উৎপাদনকারী মৎস্য চাষীদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে এই বন্যার ফলে তাতে প্রচুর পরিমাণ মাছ ও রেনু বন্যার জলে ভাসি নিয়ে যায়। এতে বাজারে কাঁচা সবজি ও মাছ এর দাম আকাশ ছোঁয়া হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। মৎস্য চাষী এবং কৃষকদের যেই ক্ষতি হয়েছে তার জন্য সাধারণ জনগণকেও এর খেসারত দিতে হবে। বর্তমানে বাজারে কাঁচা সবজির ব্যাপক আকাল দেখা দিয়েছে। যদিও কিছু পরিমাণ সবজি বাজারে থাকলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরায় তাদের কৃষি জাত জমি ও মাছ চাষের পুকুরে পুনরায় চাষবাস করতে কতটুকু সময় লাগে এবং স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে সেটাই দেখার বিষয় । তবে এই বন্যার ফলে সমস্ত খোয়াই জেলা জুড়ে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । শতকরা ৯০ ভাগ কৃষি জমি বন্যার পলি মাটির নিচে চাপা পড়ে শেষ হয়ে গেছে এইসব দৃশ্য দেখে প্রত্যেকটি কৃষক কে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদিতে দেখা গেছে । কারণ এই কৃষি যাত জমি থেকে কৃষকরা একটি টাকাও বের করতে পারবে না ।শুধু তাই না বন্যার জল কম হতেই বিভিন্ন কৃষি জমিতে লেগে থাকা বন্যার পলিমাটির কারণে সমস্ত কৃষি খেতের ফসলের গাছগুলি মরতে শুরু করেছে কাঁচালঙ্কা ,বরবটি, কার কল ঝিঙ্গে পটল , চাল কুমড়া,পুইশাক এই ধরনের সমস্ত গাছগুলি মরে গেছে যার ফলে আগামী দিন বাজারে সবজির আকাল দেখা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।এতে করে কৃষকরা খুবই কঠিন পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

1 + six =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য