খোয়াই প্রতিনিধি ২৭শে নভেম্বর….সোমবার সকাল ১১ টা খোয়াই থানা চত্বরে পালিত হলো সাব ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ মল্লিকের দ্বিতীয় শহীদ দিবস অনুষ্ঠান।এই দিন খোয়াই থানাতে শহীদ সত্যজিৎ মল্লিকের শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব সূত্রধর, পুলিশ আধিকারিক প্রসন কান্তি মজুমদার,খোয়াই থানার ওসি সুবির মালাকার,খোয়াই মহিলা থানার অফিসার এবং উভয় থানার অন্যান্য কর্মীবৃন্দরা।এরপর শহীদ সত্যজিৎ মল্লিকের প্রতিকৃতিতে সমস্ত পুলিশকর্মী ও উপস্থিত সাংবাদিকরা ফুলের তোড়া ও পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধ জানান একে একে। কেন শহীদ দিবস পালন করা হচ্ছে তার প্রেক্ষাপট জানতে হলে আজ থেকে দু বছর পিছিয়ে যেতে হবে ।দিনটি ছিল ২৬শে নভেম্বর ২০২১ সালের রাতের ঘটনা ।খোয়াই থানাধিন শেওড়াতলি গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ দেব রায় ঐদিন রাতে উন্মত্ত অবস্থায় রাত বারোটা নাগাদ প্রথমে তার এক বছরের কন্যা সন্তান অদিতি দেব রায় কে খাটের স্ট্যান্ডদিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে এর পর সাত বছরের বড় মেয়ে মন্দিরা দেবরায় কে কাঠের পিড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে তারপর স্ত্রীকে মারতে গেলে স্ত্রী তখন পালিয়ে আত্মরক্ষা করে এইসব দেখে তখন প্রদীপ দেব রায়ের বিকলাঙ্গ বড় ভাই অমলেশ দেবরায় এগিয়ে আসলে প্রদীপ দেব রায় ঘর থেকে একটি বড় শাবল নিয়ে এসে সেই শাবল দিয়ে বড় ভাই অমলেশ দেব রায়ের গলা কেটে দেয় আর তাতে বাড়ির উঠান রক্তে লাল হয়ে যায় এই খবর পেয়ে খোয়াই থানার সাব ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ মল্লিক শেওরাতালি গ্রামে যান দেখতে পান ওই গ্রামের মানুষ প্রদীপ দেব রায়ের উন্মাদনার কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে রয়েছে তার ধারে কাছে কেউ আসতে পারছে না ভয়ে শেষে প্রদীপ দেব রায় কে দেখতে পেয়ে এগিয়ে যান সত্যজিৎ মল্লিক আর কিছু বলার আগেই প্রদীপ দেব রায়ের হাতে থাকা শাবল দিয়েসত্যজিৎ মল্লিকের মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন যখন দেখতে পান তিনি মারা যাননি তারপর সেই শাবল দিয়ে ওনার বুকে আঘাত করে গ্রামের গ্রামবাসীর চিৎকার চেঁচামেচিতে তখন বীর চৌহমুনির দিকে পালিয়ে যায় সেখানে গিয়ে এক অটোচালক কে হত্যা করে ওই শাবল দিয়ে প্রদীপ দেব রায় সেই রাতে তান্ডব চালিয়েছিল শেষে যদিও সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।অন্যদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সত্যজিৎ মল্লিককে ঐদিন রাতেই খোয়াই জেলা হাসপাতালে আনা হয় এরপর জীবিতে নিয়ে গেলে রাত ২ টা ৩০ মিনিট নাগাদ সেখানে ওনার মৃত্যু হয়। কিন্তু সেই দিন রাতে যে তাণ্ডব লীলা চালিয়েছিল তাতে করে পাঁচটি তাজা প্রাণ এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় খুনি প্রদীপ দেব রায়ের নৃশংসতার জন্য।আর তার নিশংসতা এতই ছিল যে তার বর্ণনা করা খুবই কষ্টকর। শেষে গেল বছর বাইশে সেপ্টেম্বর খোয়াইয়ের এক আদালত প্রদীপ দেব রায় কে মৃত্যুদন্ডের সাজা ঘোষণা করে ।কিন্তু সত্যজিৎ মল্লিক একজন সৎ ,নিষ্ঠাবান কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন তিনি যেমন মানুষকে ভালোবাসতেন তেমনি খোয়াই বাসি উনাকে তেমনি ভালোবেসেছেন যার ফলে ওনার মৃত্যুর পর ২৭ শে নভেম্বর ২০২১ সালে যখন উনার মরদেহ খোয়াই থানাতে নিয়ে আসে তখন দেখতে পাওয়া যায় উনার অগণিতা ভক্ত ও হাজার হাজার মানুষ খোয়াই খানাতে ওনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন কিন্তু সেদিন খোয়াই থানা চত্বরে লোক ধারণের জায়গা ছিল না সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকটি লোক চোখের জলে তাদের প্রিয় অফিসারটিকে শেষ বিদায় জানিয়ে ছিল ।তাই উনার এই আত্ম বলিদান কে কে মনে রাখতে খোয়াই থানার উদ্যোগে প্রতিবছর সত্যজিৎ মল্লিকের শহীদ দিবস পালন করা হয়। এবছর তা করা হলো শ্রদ্ধার সাথে।