Friday, October 18, 2024
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদখোয়াই শহরের মৃৎশিল্পীরা বর্তমান সময়ে অসহায়ের মত জীবন যাপন করছেন।সামান্য একটু জায়গার...

খোয়াই শহরের মৃৎশিল্পীরা বর্তমান সময়ে অসহায়ের মত জীবন যাপন করছেন।সামান্য একটু জায়গার অভাবে সঠিকভাবে প্রতিমা প্রস্তুত করতে পারছেন না।তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সাহায্যের আবেদন কড়ছেন মৃৎশিল্পীরা।

বাসুদে ভট্টাচার্য খোয়াই ১৮ই অক্টোবর……একটি প্রবাদ বাক্য আছে বাঙ্গালীদের বারো মাসে তেরো পার্বণ।আর একে কেন্দ্র করে প্রতিটি পার্বণে বাঙালিরা কোন না কোন দেব-দেবীর প্রতিমা বানিয়ে পূজা করে থাকেন।আর এই দেবদেবীর প্রতিমা তৈরি করেন বিশেষ করে খোয়াই মহাকুমার কয়েকজন মৃৎশিল্পীরা।এতে করে বাঙালিরা যেমন বিভিন্ন দেব দেবীর পায়ে পূজার অর্ঘ্য প্রদান করেন তেমনি ভাবে মৃৎ শিল্পরা সেই দেব দেবীর প্রতিমা বানিয়ে বছরের বিশেষ কিছু সময়ে দুটি পয়সায় রোজগার করে তাদের সংসার প্রতিপালন করেন।কিন্তু বর্তমান সময় দেখা যাচ্ছে যে সেই মৃৎশিল্পীরা ভীষণ অসহায়ের মধ্যে জীবন যাপন করছেন।কারণ তাদের নিজ নিজ বাড়ি গুলি সংকীর্ণ হবার ফলে সেই পরিমাণের প্রতিমা তৈরীর কাজ হাতে নিতে পারছেন না বর্তমান সময়ে।আর তাতে করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে তাদের জীবন জীবিকা পালনের ক্ষেত্রে শুধু একটু জায়গার অভাবে।তাই সরকারের কাছে আবেদন রাখছেন যাতে করে খোয়াই মহাকুমার কোন স্থানে তাদের জন্য একটু জায়গা করে দেন যাতে করে তারা আগামী দিন বেশি করে প্রতিমা তৈরি করে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজারী ভক্তদের কে খুশি করতে পারেন।তাই বর্তমানে মৃৎশিল্পীরা তাদের এই শিল্পকে নিয়ে কেমন পরিস্থিতি আছেন জানতে চাইলে খোয়াই মহাকুমার লাল ছরা নিবাসী এক মৃৎশিল্পী মরণ চন্দ্র রুদ্র পালের সাথে কথা বললে তিনি সুবিস্তারে তাদের মনের দুঃখের কথা সংবাদ প্রতিনিধিকে জানান যে বর্তমান সময়ে মৃৎ শিল্পীরা ভালো নেই।আগের মতন প্রতিমা তৈরির কাজ পান না এবং পেলেও সেই কাজের অর্ডার রাখতে পারেন না শুধু জায়গার অভাবে যার জন্য অনেক প্রতিমা তরীর কাজ হাত ছাড়া হয়ে যায় বা ছেড়ে দিচ্ছেন।এই সব করনের বর্তমান সময় ওনাদের পরিবারের অন্যান্য লোকেরাও মূর্তি তৈরীর কাজ ছেড়ে পেটের দায়ে অন্য কাজে নিযুক্ত হয়ে যাচ্ছেন এমনকি ওনার পরিবারের সাথেও হয়েছে।এছাড়া খোয়াই সহরে হাতে গোনা ৭ থেকে ৮ জন মৃৎশিল্পীরা রয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই একই অবস্থা জায়গা সংকুলনের জন্য কাজ করতে পারেন না।এর জন্য মহাকুমার বাইরের কোন ক্লাবের বড় দুর্গা প্রতিমা বানানোর কাজ পেলেও তা রাখতে পারেন না। শিল্পী মরন চন্দ্র রুদ্র পাল বলেন একটা সময়ের পর কোন একদিন উনারা থাকবেন না এর পরে শিল্পীটা হয়তো লুপ্ত হয়ে যাবে এছাড়া বর্তমানে তেমনটাই ঘটে চলেছে।তবে সব কিছুর মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে তিনি খুবই খুশি যে সারা রাজ্যের মধ্যে খোয়াই মহকুমাতে আলোর দিশারি নামক মহিলা মৃৎশিল্পীদের একটি স্ব সহায়ক দল রয়েছে ।এই দলের ১৫ জন সদস্যা রয়েছেন যারা মূর্তি বানানোর কাজ করছেন তাদেরকে তিনি প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং উনার সাধ্যমত সাহায্য করছেন।এদের মধ্য থেকে কয়েকজন মেয়ে ও মহিলা বর্তমান সময় উনার সাথে প্রতিমা বানানোর কাজ করছেন সহকারী হিসেবে নমিতা রুদ্রা পাল ও মাম্পি সরকার।যদিও সরকার আলোর দিশারী নামক স্ব সহায়ক দলের মহিলা মৃৎশিল্পীদের সরকারি সাহায্য দেওয়ার ফলে কিছুটা স্থিতিশিল পরিস্থিতিতে রয়েছে ওরা।শিল্পী মরন চন্দ্র রুদ্র পাল বলেন তাদের বাড়িঘর গুলি সংকীর্ণতার কারণে সেখানে বড় প্রতিমা বানাতে পারেন না তার জন্য তাদেরকে অন্য জায়গা ভাড়া করে প্রতিমা বানানোর কাজ করতে হয় তাতে করে তাদের একটা ভালো টাকা খরচ হয়ে যায় ।এ বিষয়ে শুধু উনার না প্রত্যেক মৃৎশিল্পীদের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটছে।তাই তিনি এবার তেমন বেশি দুর্গা প্রতিমা বানাননি সাধ্য থাকলো করতে পারছেন না জায়গার অভাবের কারণে।তাই তিনি এবার লক্ষ্মী প্রতিমার মূর্তির দিকে বেশি নজর দিয়েছেন যার ফলে ওনার বাড়িতে প্রায় দেড় হাজার লক্ষ্মী মূর্তি বানাচ্ছেন খোয়াই বাসির স্বার্থে এই কাজে ওনার স্ত্রী ও হাত লাগাচ্ছেন লক্ষ্মী মূর্তি বানানোর কাজে।তাই তিনি খুবই আক্ষেপের সাথে বলেন যে ওনার ৬৬ বছর বয়স হয়েছে।এই বয়সে দেখতে পেয়েছেন তাতে অনেক সরকার এসেছে এবং গেছে কিন্তু তাদের মত মৃৎশিল্পীদের দিকে কেউ মুখ তুলে তাকায় নি যা একটি শিল্প খোয়াই বাসীদের জন্য।অথচ দেখা গেছে চিড়া, মুড়ি,মাছ ,মাংস,সবজি বিক্রেতাদের জন্য নিজ নিজ সেড ঘর রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে কিন্তু একটি প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন মৃৎশিল্পীদের জন্য খোয়াই মহকুমাতে কোন জায়গা হলো না যে লোকে দেখতে বা জানতে পারে এখানে প্রতিমা তৈরীর কাজ হয়। শিল্পী মরণ চন্দ্র রুদ্র পাল বলেন তিনি বেঁচে থাকতে দেখতে পারবেন না যে তাদের মত মৃৎশিল্পীদের একটি স্থান হয়েছে ।তাই তিনি রাজ্য সরকার এবং খোয়াই পুর পরিষদের নিকট আবেদন রাখেন যাতে করে তাদের মতো যারা মৃৎশিল্পীরা রয়েছেন খোয়াইতে তাদের জন্য মহকুমার কোন একটি স্থানে জায়গা তৈরি করে দেন অস্থায়ীভাবে ও হলে চলবে যাতে তারা স্বাচ্ছন্দে বেশি করে প্রতিমা বানাতে পারেন।এবং এই শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখা যায় তাই এই আবেদনটি সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা রাজ্য সরকার এবং খোয়াই পুরো পরিষদেকে জানানো যাতে তাদের এই সমস্যা নিরসনের সরকার এবং পুর পরিষদ এগিয়ে আসে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

20 − eleven =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য