স্যন্দন প্রতিনিধি খোয়াই ১২ ই অক্টোবর….একেই বলে ঠেলার নাম বাবাজি।ঠেলায় না পড়লে বিড়াল নাকি গাছে ওঠেনা ।এই প্রবাদ বাক্যটি প্রচলিত রয়েছে আমাদের সমাজে বেশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এবং তার প্রকৃত প্রমাণও পাওয়া যায় ।তেমনি ঘটেছে খোয়ায় পূর্ত দপ্তরের সাথে।দেখা গেছে ২০১৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসে এবং ২০২৩ সালের নির্বাচনেও জয়ী হয় বিজিবি সরকার ।দেখা গেছে নতুন সরকারের সাড়ে পাঁচ বছরের আমলে খোয়াই মহকুমার বিভিন্ন রাস্তাঘাটের অবস্থা ছিল খুবই বেহাল দশায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপি সরকারের প্রায় পাঁচ বছরের মাথায় খোয়াই পুর পরিষদের উদ্যোগে পুর পরিসদ সহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট গুলিকে মেটালিং এবং কার্পেটিং করার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল।আর যেসব ঠিকাদারেরা এই সব টেন্ডার গুলি পেয়েছিল সেই ঠিকাদারেরা টেন্ডার পেয়ে কাজ চালু করতে করতে এবং কিছু কিছু এলাকাতে কাজ করতে গিয়ে ২০২৩ সালের নির্বাচন ঘনিয়া আসে।তা দেখতে পেয়ে পুর পরিষদের পক্ষ থেকে ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে চাপ সৃষ্টি করা হয় যাতে করে টেন্ডার কৃত কাজগুলি অতিসত্বর সম্পন্ন করে।যাই হোক শেষে কাজ সম্পন্ন হয় কিন্তু সেই রাস্তার মেটেলিং ও কার্পেটিং করার ক্ষেত্রে ব্যাপক কার চুপি করা হয়।এই কার চুরি করার ফলে খোয়াই শহরের বিভিন্ন অলি গোলির রাস্তার কার্পেটিং ছয় মাসের মধ্যে উঠে তা গর্তে পরিণত হয়ে যায় ।এরপরই চলে আসে বর্ষাকাল আর এই বর্ষাকালে রাস্তার বাকি অংশটি খারাপ হতে থাকে।আর এই রাস্তা তৈরি ক্ষেত্রে কারচুপি হবেই না কেন পুর পরিষদ অথবা পূর্ত দপ্তরের কোন কাজের টেন্ডার বের হলে সেই টেন্ডারের মালিক অথবা ঠিকাদার কে শতকরা ১০ টাকা করে নিগো মাফিয়া দের কে দিলেই সেই ঠিকাদার কাজের বরাত পেতো। শতকরা দশ টাকা করে চলে গেলে এছাড়া বিভিন্ন খাতে খরচ ঠিক রাখতে গিয়ে ঠিকাদাররা বাধ্য হয় তাদের বিভিন্ন কাজে কারচুপি করতে অথবা নিম্নমানের কাজ করতে বাধ্য হয়। নিগো মাফিয়াদের যে টাকা দিতে হয় সেই টাকা দিতে না হলে হয়তো বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ঠিকাদাররা এই ধরনের কাজে কারচুপি করতনা।যে টাকাটা চলে যায় সেই টাকা তআর ঠিকাদাররা নিজের ঘর থেকে এনে দেবে না সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কারচুপি করতেই হয় তাদেরকে।আর তাতেই কাজের গুনমান কমে যাচ্ছে দিন দিন। এসব করতে করতে খোয়াই মহাকুমার সমস্ত এলাকা রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব বেহাল দশায় গিয়ে পরিণত হয়। এছাড়া গত দেড় বছর ধরে ২০৮ নং জাতীয় সড়কের কাজ চলছিল অন্যদিকে জাতীয় সড়কের কাজের বিভিন্ন মাটি এবং পাথরে বোঝাই গাড়িগুলি খোয়াই শহরের বিভিন্ন রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করতো ।জাতীয় সড়ক তৈরির মাল বহনকারী বিভিন্ন ভারী ভারী লড়ি গুলির চলাচলের ক্ষেত্রে খোয়াই শহরের রাস্তাঘাট গুলির বহন ক্ষমতা তেমন ভালো ছিল না যার ফলে জাতির সড়ক নির্মাণকারী সংস্থার ভারি ভারি গাড়ি গুলির চাপে মহাকুমার বিভিন্ন রাস্তা গুলি ভেঙ্গে বিশাল বিশাল গর্তে পরিণত হয়েছিল এবং নিত্যদিন ছিল পথ দুর্ঘটনার স্বীকার হত জনগণ।এরপর থেকে খোয়াই বাসির স্বার্থে খোয়াই মহকুমার সমস্ত রাস্তা গুলিকে সাড়াই করে দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে একের পর এক খবর প্রকাশ হতে থাকলেও পূর্ত দপ্তর ছিল কুম্ভ নিদ্রায় । শেষে পূর্ত দপ্তর এবং জাতীয় সড়ক নির্মাণকারী সংস্থা মিলে বিভিন্ন ভঙ্গুর রাস্তা গুলিকে কিছুটা সারাই করলেও বর্ষাকালের জন্য রাস্তা গুলি আবার সেই জায়গায় চলে আসে।এই বিষয়ে পূর্ত দপ্তরের সাথে কথা বললে পূর্ত দপ্তর জানায় যে খোয়াই মহাকুমার সবগুলি রাস্তায়ই. জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোয়াই শহরে রাস্তাঘাটের মেরামতির কাজ ওরা করবে না যতদিন না পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বিভাগ খোয়াই শহরের রাস্তা গুলিকে পূর্ত দপ্তরের হাতে হস্তান্তর না করে দেন।এই ঘটনার পেছনে একটি রহস্য রয়েছে যখন জাতীয় সড়ক নির্মাণ সংস্থা রাস্তা তৈরীর জন্য জায়গা দেখেছিল তখন কথা ছিল খোয়াই সহরের উপর দিয়ে যাবে জাতীয় সড়ক। কিন্তু খোয়াই মহকুমা এলাকায় জনগণের বসতি ছিল খুবই ঘন যার ফলে এইসব এলাকার ওপর দিয়ে জাতীয় সড়ক নির্মাণ করতে গেলে হাজার হাজার পরিবারকে তাদের জায়গা থেকে উঠিয়ে অন্যত্র বসতি স্থাপন করে দিতে হবে যার ফলে কেন্দ্র সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হবে এবং ওটা ছিল ব্যয় সাধ্য কাজ।সেই দিক দিয়ে বিচার করে সরকার সিদ্ধান্ত করে খোয়াই শহরের উপর দিয়ে জাতীয় সড়ক নির্মাণ হবে না । জাতীয় সড়কটি হবে সহর লাগুয়া এলাকার উপর দিয়ে এবং বর্তমানে সেই ভাবেই তৈরি হয়েছে জাতীয় সড়ক। যেহেতু জাতীয় সড়কটি খোয়ই শহরের উপর দিয়ে যাবে সেই হিসেবে জাতীয় সড়ক নির্মাণকারী সংস্থা পূর্ত দপ্তর থেকে সেই জায়গা নিয়েছিল ।কিন্তু জাতীয় সড়ক নির্মাণকারী সংস্থাটি সেই জায়গাটি এখনো পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করেনি যার ফলে পূর্ত দপ্তর ও কোন গা লাগায়নি খোয়াই শহরের রাস্তা গুলি ভাঙলো কি ভালো থাকলো। এতে করে বিগত কয়েক মাস ধরে খোয়াই মহাকুমা বাসি ব্যাপক ক্ষোবে ছিল ।প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন সংবাদপত্র খুললেই দেখা যেত খোয়াই শহরের রাস্তাঘাটের কি বেহাল দশা তার খবর প্রকাশ হচ্ছে ।এবং তানিয়া জনগণ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে।এই করতে করতে চলে আসে শরৎকালের দুর্গাপুজো তাতে করে খোয়াই শহরের রাস্তাঘাটের বেহাল দসার কথা জনগণের মুখে মুখে ।আর পূর্ত দপ্তর থেকে শুরু করে পুর পরিষদের চেয়ারম্যান কেও শহরের রাস্তাঘাটের বিষয় নিয়ে অপমানিত লাঞ্চিত হতে হয় । পূজার প্রাগমুহুর্তে বিভিন্ন ক্লাব গুলিকে নিয়ে মিটিং চলাকালীন সময়ে একটি কথাই বারবার উঠে আসছিল খোয়াই শরের রাস্তাঘাট গুলিকে দুর্গাপূজার আগে সারাই করে দেওয়ার জন্য ।যদিও জানা যায় পুর পরিষদের চেয়ারম্যান দেবাশীষ নাথ শর্মা পূর্ত দপ্তরের বাস্তুকারের সাথে কথা বলেন যাতে পুজোর আগে হোয়াই এর সমস্ত রাস্তাঘাট ঠিক করে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে পর পর দুবার খবর প্রকাশ হয়ে যায় রাস্তাঘাট নিয়ে তখন পূর্ত দপ্তরের ঘুম ভাঙ্গে যে পূজোর প্রাক মুহূর্তে যদি রাস্তাঘাট ঠিক করে না দেওয়া হয় তাহলে জনগণের রোষনলের মুখে পড়বে পূর্ত দপ্তরের বাস্তকার আর সহ অন্যান্য কর্মীরা সেই সব চিন্তা করে পূর্ত দপ্তরের উদ্যোগে এক ঠিকাদার কে দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে খোয়াই শহরের সমস্ত রাস্তাঘাট গুলিকে সারাই করার জন্য কাজের বরাত দেওয়া হয় যাতে করে পুজোর আগে সমস্ত রাস্তা গুলি সারাই এর কাজ সম্পন্ন হয়।সেই মুতাবেগ দেখা গেছে বৃহস্পতিবার খোয়াই শহরের বিভিন্ন অলি গলিতে কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।তা দেখে খোয়াই বাসি কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।