গুণগত শিক্ষার প্রসারে উদ্ভাবনী শিক্ষাদান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যে প্রাথমিক স্তর থেকেই উদ্ভাবনী শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণ করে প্রাথমিক স্তরের প্রায় ৯০ হাজার ছাত্রছাত্রীদের মৌলিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে নিপুণ ত্রিপুরা। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষণ সহায়ক উপকরণ প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশের জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। যার অন্যতম লক্ষ্য সঠিক জ্ঞান বিশ্লেষণের মাধ্যমে শিশুদের মৌলিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে প্রাথমিক স্তর থেকে দক্ষ করে তোলা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিপুণ মিশনের কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে টিচিং লার্নিং মেটিরিয়ালের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানে প্রাথমিক স্তর থেকে সঠিকভাবে শিক্ষাদানে টিচিং লার্নিং ম্যাটেরিয়াল অত্যন্ত সহায়ক। যা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নিপুণ ত্রিপুরার মূল চালিকাশক্তি। শিশুদের জন্য শ্রেণীকক্ষে ব্যবহারের একটি অপরিহার্য সামগ্রী হচ্ছে নিপুন ত্রিপুরা মিশনের অন্তর্গত টিচিং লার্নিং ম্যাটেরিয়াল (টিএলএম)। নিপুন ত্রিপুরার লক্ষ্য হচ্ছে ৩ থেকে ৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে শিক্ষার মূল ভিত্তি ও মৌলিক দক্ষতা গড়ে তোলা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মৌলিক স্বাক্ষরতা এবং গাণিতিক দক্ষতা অর্জন করার উদ্দেশ্যে গ্রেড-২ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের ৫ জুলাই দেশব্যাপী নিপুন মিশন চালু করা হয়।
২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর রাজ্যে নিপুন ত্রিপুরা চালু করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে নিপুন মিশনের লক্ষ্য হচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী এবং প্রায় ১২ হাজার শিক্ষকের কাছে এই মিশনের সফলতাকে নিয়ে পৌঁছানো। নিপুন ত্রিপুরা মিশনের আওতায় ৪,২২৭টি সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয় রয়েছে। রাজ্যে নিপুন কর্মসূচিতে বর্তমানে ১০ হাজারের উপর শিক্ষক শিক্ষিকা এবং প্রাথমিক স্তর থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে এই মিশন পৌছানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশে নিপুন ত্রিপুরা মিশন সুনাম অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বারা তৈরিকৃত টিএলএম প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের সাফল্য সম্বলিত একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে নিপুন ত্রিপুরা মিশন নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের সাফল্য সম্পর্কিত একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়। তাছাড়াও টিএলএম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য জেলা, ব্লক এবং জেলা শিক্ষা আধিকারিক, জেলা প্রতিনিধিদের পুরস্কৃত করেন উপস্থিত অতিথিগণ। পুরস্কার প্রদান পর্বে, টিএলএম ছাড়াও আমতলী বিবেকনগরস্থিত, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়কে ফাউন্ডেশনাল লিটারেসি এন্ড নিউমারেসি ক্ষেত্রে বিশেষ অনুসন্ধানমূলক কাজ এবং ৩৬০ ডিগ্রি হলিস্টিক ডেভেল্পমেন্ট প্রোগ্রামের জন্য বিশেষ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বুনিয়াদী শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসসিইআরটি অধিকর্তা এল দার্লং।