Thursday, September 19, 2024
বাড়িখবররাজ্যকালীমূর্তি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রানিরবাজারে

কালীমূর্তি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রানিরবাজারে

গন্ডাছড়ার পর এবার ষড়যন্ত্রের শিকার হলো জিরানিয়া মহকুমার রানির বাজারের একাংশ। রানির বাজার কৈতরাটিলায় একটি কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে সামাজিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় উভয় সম্প্রদায়ের লোক পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও রাতে বহিরাগতদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক পরিবার। অভিযোগ রয়েছে গণহারে আগুন দিয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া সহ গবাদি পশু পুড়িয়ে মারা এবং লুটপাটের।স্থানীয় মহলের দাবি রাতে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিল পুলিশ। গিয়েছিলেন মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। মন্ত্রী গিয়ে এক দফায় পরিস্থিতি শান্ত করেন। কিন্তু মন্ত্রী ফিরে আসার পরে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রানিরবাজার দুর্গানগরে রাতের উত্তেজনায় ১০টির বেশি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ৯টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। ৫ টির বেশি বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর এবং লুটপাট হয়েছে বলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সূত্রে জানা গেছে। খবর পেয়ে রাতে এই ঘটনাস্থলে প্রথমে ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার ডঃ কিরণ কুমার। জেলা পুলিশ সুপার কৈতরাটিলায় পরিবেশ শান্ত করার মধ্যেই হামলা শুরু হয় দুর্গানগরে। সেখানেই বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর রয়েছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ত্রিপুরা পুলিশের ডিজি ইন্টেলিজেন্স অনুরাগ ধনকর । ডিজির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ টিএসআর এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকাতে নেমে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঘটনার পর চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকাতে। ঘটনার বিবরণে মহকুমার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন ১১ মান্দাই বিধানসভা কেন্দ্র এবং ১০ মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বর্ডার এলাকা কৈতরাটিলা এবং দুর্গানগর। সেখানে হিন্দু-মুসলিম এবং জনজাতি লোকেদের বসবাস। কৈতরাটিলায় ৩৫ বছরের পুরনো একটি কালী মন্দির রয়েছে। সেই কালী মন্দির রবিবার বিকেল পর্যন্ত ঠিক ছিল। সন্ধ্যার পর এক মহিলা মন্দিরে গিয়ে দেখতে পান কালী মূর্তির মাথা সহ শরীরের একাংশ ভাঙ্গা রয়েছে। তারপরেই সাময়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একাংশ অভিযোগ তোলেন ভিন্ন ধর্মের লোকেরা সনাতনী মন্দিরে হামলা করেছেন। যদিও স্থানীয় লোকেদের দাবি দীর্ঘ বছর এই এলাকায় মন্দির এবং মসজিদ অক্ষত রয়েছে। কোনদিন এলাকার কেউ ধর্মীয় স্থানে হামলা করেনি। মন্দিরের হামলার ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয় বরং ষড়যন্ত্রমূলক বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় হিন্দু মুসলিম এবং জনজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন তৎক্ষণাৎ আলোচনার মাধ্যমে সোমবার সকালে বৈঠক ডেকে বিষয়টি সমাধান এবং ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের ঘন্টাখানেক পরেই শুরু হয়ে যায় হামলা হুজ্জতি। প্রথমে কৈতরাটিলা এলাকায় উত্তেজিত লোকেদের জমায়েত হয়। সেখানে এসপি এবং মহাকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে পুলিশ পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিলে হামলাকারীরা দুর্গানগর এলাকায় গিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেখানেই বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে। পুরো ঘটনাস্থল ১১ মান্দাই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রয়েছে। এলাকার বিধায়িকা স্বপ্না দেববর্মা সহ মন্ডল নেতৃত্ব ঘটনার সুস্থ তদন্তক্রমে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি তুলেছেন। জিরানিয়া মহাকুমা পুলিশ এই ঘটনায় সুয়োমোটো মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে । প্রসঙ্গত ইতিপূর্বে গন্ডাছড়াতেও এই ধরনের সামাজিক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

16 − eleven =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য