গাড়িতে ফেলে রেখে যাওয়া এক যাত্রীর তিন লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার পূর্ব থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে নিজের সততার পরিচয় দিল এক অটোচালক ।তার নাম সুজিত সরকার ,বাড়ি রাজধানীর আড়ালিয়ার শান্তি পাড়া এলাকায় ।রবিবার পূর্ব থানার পুলিশ পুষ্পস্তবক হাতে তুলে দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করল এই সৎ অটোচালককে। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবপ্রসাদ রায় ,পূর্ব থানার ওসি রানা চ্যাটার্জি সহ অন্যান্যরা।
ডট কমের এই যুগেও দূষণের যাঁতাকলে হারিয়ে যায়নি চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা। তেমনি হারিয়ে যায়নি মানুষের মূল্যবোধ ও সততা ।আজ চারদিকে যখন চলছে মারামারি ও হানাহানি ঠিক তখনই নিজের সততা আর মূল্যবোধের পরিচয় দিয়ে নজীর স্থাপন করলো এক হতদরিদ্র অটোচালক। তার নাম সুজিত সরকার, বাড়ি রাজধানীর আড়ালিয়া শান্তি পাড়া এলাকায় ।গত ১৫ আগস্ট রাতে আগরতলা থেকে অটো রিজার্ভ করে সুতপা সাহা নামে এক মহিলা জিরানীয়ার এনআইটি কমপ্লেক্সে যান ।সুতপার হাতে একটি ব্যাগ ছিল ।ব্যাগটি তিনি অটোর পেছনের ডিকিতে রেখে দেন ।অটোটি এলাকায় পৌঁছলে অটোর ভাড়াও চুখিয়ে দেন তিন। কিন্তু ভুলে যান বেগটির কথা। এই অটোরই চালক ছিলেন সুজিত সরকার ।রাতে বাড়ি ফিরে অটো রাখতে গিয়ে তার নজরে পড়ে ডিকিতে পড়ে থাকা ব্যাগটি ।ব্যাগটি খুলে দেখারও প্রয়োজন মনে করেনি তিনি ।পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার অটো সিন্ডিকেট সহ একাধিক অটোচালক কে এই কথাটি জানান। কিন্তু কেউই সিন্ডিকেটে ব্যাগ হারানোর কথা জানাতে আসেননি। শেষপর্যন্ত শুক্রবার রাতে ব্যাগটি পূর্ব থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন অটোচালক সুজিত সরকার ।এদিকে অটো য় ব্যাগ হারিয়ে ফেলায় পূর্ব থানায় অভিযোগ জানান স্বর্ণালঙ্কার শহর ব্যাগের মালিক সুতপা সাহা ।পুলিশ তাকে ডেকে এনে বেগটি দেখালে তিনি তা চিহ্নিত করেন এবং প্রমাণ দিয়ে ব্যাগটি থানা থেকে নিয়ে যান। রবিবার পূর্ব থানা কর্তৃপক্ষ অটোচালক সুজিত সরকারকে থানায় ডেকে পাঠান ।সুজিত থানায় এলে পুলিশ আধিকারিকরা তার হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন ।এই অনুষ্ঠানে ছিলেন সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ডিপি রায় ,পূর্ব থানার ওসি রানা চ্যাটার্জি সহ অন্যান্যরা। এদিন এই প্রসঙ্গে সদর এসডিপিও ডিপি রায় কুর্নিশ জানান অটোচালক সুজিত সরকারকে ।তিনি বলেন, সুজিত হতেই পারেন পেশায় অটোচালক ।কিন্তু তার সততা এবং মূল্যবোধ বিশেষভাবে প্রশংসারযোগ্য।
উল্লেখ্য দেশের সম্প দ নানানভাবে লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন একদল মানুষ। ফ্যাসাদে পরে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন তারা ।তাদের কিন্তু সততার পরিচয় দিতে হয় না। কারণ তারা ধনবান ।এই দেশে সততার পরিচয় দিতে হয় একমাত্র গরিবদেরই। অটোচালক সুজিত তার সততার পরিচয় দিয়ে প্রমাণ করল সে ধনী নয় মোটেই বরং নিতান্তই গরিব। আর গরিব বলেই সে সৎ।