ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশে বিদ্যালয়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। নিজেদেরকে চেনার বিষয়টি বিদ্যালয় থেকেই ছাত্রছাত্রীরা আয়ত্ত করে। আজ তুলসীবতী উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মহারাণী তুলসীবতী উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে ২০২৪ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম পাঁচজন করে ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে তাদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাছাড়াও অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ইনসা আক্তারকে জাতীয় স্তরে কলা উৎসবে তৃতীয় স্থান অধিকার করার জন্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আরও বলেন, নারী শিক্ষার উন্নয়নে মহারণী তুলসীবতীর অবদান অনস্বীকার্য। সেই সঙ্গে রাজ্যের উন্নয়নে মহারাণীর অবদান আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। মহারাণী তুলসীবতী উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় রাজ্যের বনেদি বিদ্যালয়গুলির মধ্যে অন্যতম।১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে মহারাণী তুলসীবতীর নামে এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়। মহারাণী তুলসীবতী সংগীত, আবৃত্তি সহ সংস্কৃতি চর্চায় সচেষ্ট ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও যোগা চর্চায় মনোনিবেশ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পথ ধরে গোটা দেশে যোগা দিবস পালন ও যোগা চর্চা হচ্ছে। এবিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা নিতে হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসারে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এনসিইআরটি পাঠক্রম চালু, শিক্ষার উন্নয়নে অভিন্ন প্রশ্নপত্র চালু, শিক্ষার মান উন্নয়নে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় চালু করা, সুপার থার্টি প্রকল্প, মুখ্যমন্ত্রী মেধা পুরস্কার, ছাত্রীদের স্কুলে আসার জন্য সাইকেল দেওয়া, প্রয়াস প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা, ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে মুখ্যমন্ত্রী মেধা পুরস্কার চালু করা হয়েছে, স্মার্ট ক্লাস চালু এসমস্ত পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম। তিনি বলেন, ত্রিপুরার মেয়েরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আজ প্রতিষ্ঠিত। আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনে রাজ্য ও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা নৃপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা বলেন, রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসারকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, আগরতলা পুরনিগমের কর্পোরেটর রত্না দত্ত, সদর মহকুমার মহকুমা শাসক মালিক লাল দাস, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিক রূপেন রায়, সমাজসেবী সঞ্জয় সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দন সরকার। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ বিদ্যালয়ের ডায়েরির আবরণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।