বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ 73 বছর বয়সে আগরতলা জিবি হাসপাতালেৱ ট্রমা সেন্টারের আই সি ইউ তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন খোয়াইয়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি দলের রাজ্য কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ দত্ত। বিগত এক সপ্তাহ ধরে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে জিবির আইসিওতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন পুর খাওয়া রাজনীতিবিদ 50 বছর ধরে রাজনীতির সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিলেন ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির হাতেখড়ি দেওয়া শুরু হয়েছিল উনার এক কালে সুবক্তা ও ছিলেন প্রয়াত বিশ্বজিৎ দত্ত। শুধু তাই না রাজনীতির পাশাপাশি নাট্যচর্চা যাত্রা গান করা বিভিন্ন বইয়ে লেখা এগুলো ছিল উনার অন্যতম শখ,, শুধু তাই না যাত্রাপালা তে ত্রিপুরা রাজ্য জুড়ে উনার সুনাম রয়েছে,, রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক মূলক কাজেও উনাকে এগিয়ে আসতে দেখা গেছে । 2016 সালের 28 শে আগস্ট খোয়াইয়ের বিধায়ক সমীর দেব সরকার মারা যাওয়ার পর ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে সিপিআইএম দলের প্রার্থী হিসেবে প্রায় 14000 ভোট পেয়ে বিশ্বজিৎ দত্ত বিধায়ক হয়েছিলেন। বিগত নির্বাচনগুলোতে শ্রমিরদেব সরকার 6 থেকে 7 হাজার ভোটে জয়ী হতেন উপনির্বাচনের দাঁড়িয়ে বিশ্বজিৎ দত্ত দ্বিগুণ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন যা ছিল উনার রাজনীতি ব্যক্তিত্বের পরিচয় এর ফল। পরবর্তীতে 2018 বিধানসভা নির্বাচনের সময় সিপিএম দল উনাকেই আবার প্রার্থী করেছিল। কিন্তু সেই সময়ে সিপিএম দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সুস্থ বিশ্বজিৎ দত্ত কে জোর করে অসুস্থ বানিয়ে নিজ বাড়ি থেকে এক প্রকার জোর জবরদস্তি করে জিবি হাসপাতালেৱ আইসিইউতে ভর্তি করিয়ে দেন মহকুমা ও রাজ্য কমিটির সিপিএম নেতৃত্বরা। এক সময় উনাকে জিবির আইসিইউতে মেরে ফেলার চেষ্টাও করা হয় বলে উনার অভিযোগ ছিল। শেষে সিপিএম দল বিশ্বজিৎ দত্ত কে সরিয়ে দিয়ে নির্মল বিশ্বাস কে দলীয় টিকেট দেন 2018 সালের বিধানসভা নির্বাচনে। তারপর থেকেই এই প্রয়াত বিধায়ক বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তিনি রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর যোগদান করেন বিজেপি দলে। গত 4 বছর ধরে তিনি বিজেপি দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সদস্য হিসেবে ছিলেন। অথচ রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বরা উনাকে এই চার বছরের মধ্যে একজন পুর-খাওয়া রাজনীতিবিদ কে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেননি। এমনকি কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পর্যন্ত দেয়নি,, এ নিয়ে উনার গুণগ্রাহীদের মধ্যে ব্যাপক খোব ছিল কেন একজন বয়স্ক পুর খাওয়া রাজনীতি বিদের সাথে রাজ্য বিজেপি দল এমন কাজ করলো এই প্রশ্নটা প্রায় সময় উঠতে দেখা গেছে বিভিন্ন মহল থেকে। শেষে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটে নাগাদ প্রয়াত বিশ্বজিৎ দত্তের মরদেহ খোয়াই মন্ডল কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এবং সেখানে প্রয়াত বিশ্বজিৎ দত্তের মরদেহ ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজ্য ক্রীড়া সচিব অমিত রক্ষিত, খোয়াই মন্ডল সভাপতি সুব্রত মজুমদার হোয়াই পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান দেবাশীষ নাথশর্মা, এছাড়া বিজেপি দলের সমস্ত কার্যকর্তা ও নেতৃত্বরা উনাকেক শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে উনার মরদেহ নিয়ে সমস্ত বিজেপির নেতৃত্বরা পায়ে হেঁটে নিয়ে যান উনার নিজ বাড়ি দুর্গানগরে। সেখানে আগে থেকেই প্রয়াতঃ বিশ্বজিৎ দত্তের আত্মীয় পরিজন বন্ধুবান্ধব পাড়া-প্রতিবেশী উপস্থিত ছিলেন। উনার বাড়িতে গিয়ে খোয়াই সিপিএম দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নেতৃত্বরা শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন। শেষে সিঙ্গি ছড়া স্থিত বেলতলী শশান ঘাটে ওনার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শেষে এটা বলা যায় বিশ্বজিৎ দত্তের মতন এমন পুর খাওয়া রাজনীতিবিদ ও অভিভাবক খোয়াইতে আর নেই,,উনার প্রয়াণে খোয়াই সহ বিজেপি দলের ও মারাত্মক ক্ষতিসাধন হল বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।