বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ৬ই জুন…….নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা নিশ্চিতকরণের দাবীতে শুক্রবার সকালে খোয়াই বিদ্যুৎ নিগমের খোয়াই সাবডিভিশনের সিনিয়র ম্যানেজার দিবাকর নাথ এর নিকট ডেপুটেশন প্রদান করে সি পি আই এম এর খোয়াই মহকুমা কমিটি।ডেপুটেশন চলাকালীন সময়ে বাইরে চলতে থাকে বিক্ষোভ।এই দিন পার্টির মহকুমা কমিটির উদ্যোগে এই কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়।সাম্প্রতিক সময়ে খোয়াইয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা মারাত্মক বেহাল দশায় এসে উপনীত হয়েছে।ফলে বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।খোয়াইবাসীকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা।ঘন ঘন বিদ্যুৎ চপলতা ছাড়িয়েছে সহ্যের সীমা।বিদ্যুৎ নিগমের কর্মসংস্কৃতি রীতিমতো লাটে উঠেছে।ভোক্তারা কল রেজিস্টারে কলের পর কল দিয়ে যাচ্ছেন।কিন্তু এরপরেও দ্রুততার সাথে লাইনের ত্রুটি সারাইয়ের ক্ষেত্রে গড়িমসি চুড়ান্ত আকার ধারণ করেছে।লাইনের কোন ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিলেও একাধিকবার জানালেও কর্ণপাত করেনা নিগমের সাব ডিভিশন।ইস্টিমেট অনুসারে প্রয়োজনীয় অর্থ সঠিক সময়ে জমা দিলেও বাড়ীতে ডোমেস্টিক বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অযথা দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করা হচ্ছে।
এই অবস্থায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে খোয়াইবাসীর মধ্যে।বিদ্যুৎ ভোক্তারা তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন।বিদ্যুৎ পরিষেবার মানোন্নয়নে এই দিন বিদ্যুৎ নিগমের খোয়াই সাব ডিভিশনের অফিসে ডেপুটেশন প্রদান করা হয়।একইসাথে চলে বিক্ষোভ।এই দিন ডেপুটেশনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন কানন দত্ত, মনোজ দাস, নারায়ণ নমঃদাস, গৌতম পাল, সঞ্জয় বিশ্বাস, বিমল দেববর্মা ও সমরেশ দেববর্মা।তারা নিগমের সিনিয়র ম্যানেজার দিবাকর নাথের সাথে সাক্ষাত করে উনার হাতে দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন।সিনিয়র ম্যানেজার দাবীসনদের সাথে সহমত পোষণ করেন।তিনি জানান, নিগমে কর্মী সঙ্কট চলছে।দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিদ্যুৎ কর্মীর অভাব রয়েছে।এছাড়া প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সামগ্রী ও উপকরণেরও অভাব রয়েছে।তাই পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।প্রতিনিধিরা স্পষ্টতই বলেন যে, কর্মী সঙ্কট বা বিদ্যুৎ উপকরণের অভাবে ভোক্তারা কেন ভুগবে! কর্মীর সঙ্কট কেন থাকবে! কেন কর্মীর অভাব দূর করার উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের! কেন বিদ্যুৎ সামগ্রীর যোগান নেই! এসব কারণে কেন সাধারণ মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে! মানুষ তো বিনে পয়সায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করেনা।তাই নিগমকে কর্মী সঙ্কট ও বিদ্যুৎ সামগ্রীর অভাব দূরীকরণে তৎপর হওয়ার দাবী জানান প্রতিনিধিরা।সে সময় প্রতিনিধিরা নিয়মিত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীনতার সমস্যা দূর করা, লো ভোল্টেজের সমস্যা দূরীকরণ করা, কল পাওয়ার সাথে সাথেই কলে এটেণ্ড করা, নতুন ডোমেস্টিক বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুততার সাথে প্রদান করা, বিদ্যুৎ এর বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করা ও অযৌক্তিক ও কাল্পনিক বিদ্যুৎ বিল ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে না দেওয়া, নিগমে চব্বিশ ঘন্টার জন্য ভোক্তাদের টেলিফোনিক কল রিসিভ করার জন্য ব্যবস্থা রাখা ও বিদ্যুৎ নিগমের কর্মসংস্কৃতির মানোন্নয়ন করার দাবী জানান।ভেতরে ডেপুটেশন চলাকালীন সময়ে বাইরের বিক্ষোভ জমায়েতে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহকুমা সম্পাদক নির্মল বিশ্বাস , রাজ্য কমিটির আমণ্ত্রিত সদস্য পলাশ ভৌমিক ও ডেপুটেশনের প্রতিনিধি দলের পক্ষে মনোজ দাস।বক্তারা বলেন, মডেল রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী বক্তৃতায় বলে থাকেন যে, সারা দেশের মধ্যে নাকি বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য ত্রিপুরা এক ব্যাতিক্রমী মডেল।তিনি বিদ্যুৎ নিগমের বা তার মন্ত্রীত্বের সফলতা প্রচার করতে গিয়ে নৃত্যের তালে তালে নিজের ঢাক নিজে পেটান আর এদিকে বিদ্যুৎ এর অভাবে ভোক্তাদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।জিজ্ঞাসা করা হয় যে বিদ্যুৎ পরিষেবার নামে রাজ্যে যা চলছে সেটাই কি সারা দেশের ব্যাতিক্রমী মডেল! মন্ত্রী বলেন যে, ভোক্তারা নাকি বিল দেয় না।তাহলে সরকার আছে কেন! নিগম কী করছে! বিলের টাকা আদায় করার দায়িত্ব কার! সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। কিন্তু একজন বিল দেয়না বলে আরেকজনকে ভুগতে হবে এটা কীসের নিয়ম! এই রাজ্যে কি হবু চন্দ্র রাজা আর গবু চন্দ্রের রাজত্ব চলছে নাকি! বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ নিগমে কর্মীর অভাবে কাজ হয় না।বিদ্যুৎ উপকরণের অভাবে মানুষ পরিষেবা পায়না।এরপরেও মন্ত্রী কীসের বড়াই করেন! তার মন্ত্রীত্বের সাফল্য কোথায়?