করোনা আবহে আজ সংসদে বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। এরপর প্রথমে লোকসভা ও পরে রাজ্যসভায় পেশ হয় আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট। যেখানে জিডিপি বৃদ্ধির একটি বড় ঘোষণা করা হয়েছিল। এই নতুন বাজেটে চলতি অর্থবর্ষের জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, শিক্ষাক্ষেত্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, ট্যাক্স, জ্বালানির দাম-এ কী পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার তা আজ জানানো হয়েছে বাজেট পেশের মাধ্যমে। কোভিড এর কারণে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে এখনও লড়াই করছে দেশ। যদিও জনমুখী বাজেট পেশের মাধ্যমে সেই চাপ কিছুটা মুক্ত করতে পারেন নির্মলা সীতারমন, এমনটাই আশা। আজ সকাল ১১টায় ২০২২-২৩-এর সাধারণ বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রথম পর্বের বাজেট অধিবেশন চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্বের বাজেট অধিবেশন ১৪ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। করোনাকালে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে মোদি সরকার কোন পথে হাঁটে তার উত্তর যেমন এই অধিবেশনে পাওয়া যাবে, এমনটাই মত অর্থনৈতিক মহলের। ঘোষিত হওয়া নতুন বাজেটে করদাতাদের জন্য রয়েছে দারুণ সুখবর। বাজেট ঘোষণায় আয়কর রিটার্ন নিয়ে নতুন নিয়ম ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। পরিবর্তন আসছে IT রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়মে। আয়কর রিটার্নের সময়সীমা বাড়ল ২ বছর।কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেট বক্তৃতায় বলেন, এখন থেকে জমা দেওয়ার ২ বছর পরেও রিটার্নে বদল করা যাবে। IT রিটার্নে কোনও ভুল থাকলে তা ঠিক করে ২ বছরের মধ্যে জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন করদাতারা। ২ বছরের মধ্যে আপডেটেড রিটার্ন ফাইল করা যাবে। এরফলে করদাতাদের রিটার্ন ফাইলের ক্ষেত্রে অনেকখানি সুবিধা হবে।এদিন নির্মলা সীতারমণ বলেন, প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থায় সংস্কার আনা হচ্ছে। কর ব্যবস্থা সরলীকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। করদান প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সরল করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সাযুজ্য আনতে জাতীয় পেনশন স্কিম প্রকল্পে মালিকের তরফে দেওয়া অংশে করছাড়ের সীমা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করা হচ্ছে। এরফলে রাজ্য় ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত সুবিধাগুলি একই স্তরে উন্নীত হবে।এর পাশাপাশি, স্টার্টআপ সংস্থাগুলিকে করছাড় দেওয়া হচ্ছে। করছাড় দেওয়া হল সমবায় সংস্থাগুলিকেও। সমবায় সংস্থাগুলির উপর থেকে সারচার্জের বোঝা কমল। কো-অপারেটিভের ক্ষেত্রে সারচার্জ ১২ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশ করা হল। অন্যদিকে কর্পোরেট সংস্থাগুলির সঙ্গে কো-অপারেটিভ সোসাইটির সামনঞ্জস্য বজায় রাখতে সমবায় কর ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে আয়কর কাঠামো অপরিবর্তিত থাকবে। তাছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেটে একাধিক বড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ৪০০টি নতুন ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ঘোষণা করলেন নির্মলা সীতারমণ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ১০০টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণের ঘোষণাও করলেন তিনি। তাছাড়া ৭৫ হাজার কিলোমিটার হাইওয়ে, ৪টি জায়গায় লজিস্টিক পার্ক নির্মাণের ঘোষণাও করেন তিনি। এছাড়া নির্মলা সীতারমণ আরও জানান, ন্যাশনাল রোপওয়ে প্রোগ্রামের আওতায় পাহাড়ি অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার রোপওয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। ‘One Station One Product’ পলিসি লাগু করবে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি সংসদের যৌথ অধিবেশনের ভাষণেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ জানান, ভারতীয় রেলকে অত্যাধুনিক করতে সর্বত ভাবে কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত সাত বছরে ২৪ হাজার কিলোমিটার রেলপথ বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের আশা, এবারের বাজেটে ৭ হাজার কিলোমিটার রেলপথে বিদ্যুৎ সংযোগের লক্ষ্যমাত্রা নিতে পারে কেন্দ্র। এর জন্য বরাদ্দ হতে পারে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি
এদিনের বাজেটে ৬০ লক্ষ নতুন চাকরি, আবাস যোজনায় ৮০ লক্ষ বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা। প্রতি ঘরে নলবাহিত জল পৌঁছতে বরাদ্দ ৬০ হাজার কোটি। পেনশনে মিলবে আয়কর ছাড়। আয়কর রিটার্নে ভুলচুক হলে বকেয়া মেটাতে ২ বছরের বাড়তি সময় দিল সরকার। এবার সকলের নজর থাকে কোন জিনিসের দাম কমল, আর বাড়লরই বা কীসের। তারও আভাস মিলল অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশে।
দাম কমছে
হিরে
মোবাইল ফোন
মোবাইল চার্জার
পোশাক
চর্মজাত দ্রব্য
জুতো
বিদেশ থেকে আনা যন্ত্র
কৃষিকাজের সরঞ্জাম
দাম বাড়ছে
বিদেশি ছাতা
ইস্পাতজাত দ্রব্য
আজকের বাজেট পেশে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, চালু হচ্ছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি। চালু হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মধ্যে লেনদেনের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অনুমোদিত ডিজিটাল কারেন্সি। ‘রাজ্যগুলিকে বিনিয়োগের জন্য সাহায্য করা হবে’। এবারও বাজেটে অপরিবর্তিত আয়কর কাঠামো। একই থাকছে ব্যক্তিগত কর কাঠামো। কো-অপারেটিভ সোসাইটির সারচার্জ কমানো হচ্ছে। জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস দিলেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। দ্রুততার সঙ্গে নিজের আর্থিক অবস্থাকে শক্তিশালী করছে ভারত।