বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২৪শে আগস্ট…… গত ২০ শে আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের মানুষ এক ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করেছে। ওই সময়তে রাজ্যজুড়ে এক ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল ।এই বন্যার ফলে রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষ এই কয়েকটা দিন দুর্দশার মধ্যে কাটাতে হয়েছে । বিভিন্ন এলাকায় বন্যার ফলে নিম্ন অঞ্চলের প্রচুর মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় ।এই বন্যার ফলে কি পরিমান ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে খোয়াই জেলা জুরে তারই এক হিসাব দিতে শনিবার বিকেল চারটায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেলাশাসক চন্দ্রানী চন্দ্রন । এই ক্ষয় ক্ষতির হিসাব শুনে সবারই কপালে চোখ উঠেছে । শুধু মৎস চাষী, এবং সবজি চাষীদের ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ 2 শত ৮০ কোটি টাকার উপরে বলে জানান তিনি । বন্যায় খোয়াই জেলা জুড়ে কি পরিমান ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তারই খতিয়ান তুলে ধরতে শনিবার বিকেল চারটায় জেলা শাসকের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেলাশাসক চাঁদনী চন্দ্রন এবং উনার সাথে ছিলেন খোয়াই মহাকুমা শাসক মেঘা জৈন তেলিয়ামুরার মহকুমা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা ।এই দিন বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করতে গিয়ে খোয়াই জেলাশাসক চান্দনি চন্দ্রন বলেন সারা রাজ্যের বন্যার পরিস্থিতির পাশাপাশি গত ২১ এবং ২২ শে আগস্ট এক ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় খোয়াই জেলা জুরে। ওই সময় খোয়াই নদীর জল বিপদ সীমা অতিক্রম করে যার ফলে সমস্ত খোয়াই জেলা জুড়ে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় । জেলার বিভিন্ন নিম্ন অঞ্চলের বাড়ি ঘরে নদীর জল ঢুকে পড়ে তাতে কর শত শত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে চলে আসে । তাদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭২টি ত্রান শিবিরের ব্যবস্থা করা হয় এই ত্রাণ শিবিরে জেলার প্রায় ১০ হাজারের উপর লোক আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এই বন্যার কারণে । যদিও বর্তমানে খোয়াই নদীর জল অনেক নিচে নেমে গেছে এরপরও খোয়াইতে ২৫ টি ত্রাণ শিবির এখনো খোলা রয়েছে ।আর এই ত্রান শিবিরে থাকা লোকদেরকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত ।এর মধ্যে অনেকেই বাড়ি ঘরে চলে গেছে আবার অনেকে বাড়ি ঘরে ফিরে যেতে পারিনি কারণ তাদের বাড়িঘরে নদীর পলি মাটি কাদা ইত্যাদি জমা থাকার কারণে বাড়ি ফিরতে পারছে না । অন্যদিকে বন্যার কারণে খোয়াই জেলা জুড়ে সব থেকে বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের তার মধ্যে রয়েছে মৎস্য চাষী এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষিরা। জেলাশাসক বলেন ক্ষয় ক্ষতির হিসাব করলে দেখা যায় সমস্ত খোয়াই জেলার মৎস্য চাষীদের ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ ১৮০ কোটি টাকা অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষী ও ধান চাষীদের সব মিলিয়ে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার উপর যা এক বিশাল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খোয়াই জেলাতে বলে জানান জেলা শাসক চান্দনি চন্দ্রন ।তাছাড়া এই বন্যার ফলে পাঁচ হাজারের উপর লোকের বাড়ি ঘর নষ্ট হয়ে গেছে যার মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে, তেলিয়ামুড়া মহকুমাতে এরপর খোয়াইতে । এছাড়া জেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট সহ জাতীয় সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ যার জন্য জাতীয় সড়কে ট্রাফিক লোড বাড়তে পারে বলে কিছু দুনিয়ার জন্য জাতীয় সড়কে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মেরামত করার জন্ন আর অন্যান্য রাস্তা গুলিতে মেরামতের কাজ চলছে। সাধারণত দেখা যায় বন্যার পর বিভিন্ন জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব এবং মহামারীর আশঙ্কা থাকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে । সেই দিক দিয়ে চিন্তা করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা করা হবে যাতে করে বন্যা কবলিত এলাকার জনগণ ওই জল বাহিত রোগ গুলি থেকে মুক্ত থাকে এর জন্য অতিসত্বর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান জেলাশাসক ।এই বন্যা পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনকে সার্বিকভাবে সাহায্য করার জন্য জেলা সমস্ত সাধারণ নাগরিক ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এনডিআরএফ-এর দল জেলা পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সমস্ত সাংবাদিকরা যেভাবে জেলা প্রশাসনকে সাহায্য করেছে এই দুর্গম পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য তাই জেলাশাসক চাঁদনী চন্দ্রন সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানান ।