Sunday, September 8, 2024
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদসিমেন্ট, বালি, পাট, রড দিয়ে অভিনব এক বক্স খাট বানিয়ে খোয়াই বাসীকে...

সিমেন্ট, বালি, পাট, রড দিয়ে অভিনব এক বক্স খাট বানিয়ে খোয়াই বাসীকে তাক লাগিয়ে দিলেন লাল ছড়া নিবাসী গোপাল রুদ্র পাল।

বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২০শে জুলাই…….কথাই বলে মনের অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে মানুষ যেকোনো ধরনের অসাধ্য কাজকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারে।তেমনি এক অসাধ্য কাজ করে দেখালেন খোয়াই লাল ছড়া কলেজ রোড স্থিত ৭৪ বছরের এলাকার বাসিন্দা গোপাল রুদ্র পাল তিনি পাট, বালি,নেট সিমেন্ট ও রড দিয়ে একটি সিমেন্টের বক্স খাট বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন খোয়াই বাসিকে।সাধারণত আমরা কাঠ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র এবং খাট বানাতে দেখেছি তাতে প্রচুর পরিমাণে সূক্ষ্ম কাজের নকশা তৈরি করা থাকে সেটি কাঠ বলেই সম্ভব হয়।কিন্তু এমন সূক্ষ্ম কাজ সিমেন্টের তৈরি খাটে যে করা যায় সেটা দেখিয়ে দিলেন গোপাল রুদ্র পাল।পেশায় তিনি একজন রাজমিস্ত্রি বাড়িতে ফিল্টার,ভেন্টিলেটর,পিলার সহ বিভিন্ন ধরনের সিমেন্টের জিনিস বানিয়ে থাকেন নিজ বাড়িতেই।উনার সাথে এক সাক্ষাতে তিনি জানান আজ থেকে ৪০ বছর আগে তিনি মৃীত শিল্পীর কাজও করতেন যদিও বর্তমানে সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সিমেন্টের কাজে হাত লাগিয়েছেন।এবং প্রায় সময় চিন্তা করতেন কোন নতুনত্ব জিনিস বানানো যায় কিনা শেষে চিন্তা করলেন কাঠ দিয়ে তো বক্স খাট তৈরি করা যায় তবে এবার তিনি সিমেন্ট দিয়ে খাট তৈরি করবেন এই কথাগুলো কথারচ্ছলে অনেকেই বলেছিলেন ।কিন্তু যারা শুনেছে ওরা ওটাকে অবাস্তব বলে মেনে নিয়ে বলেছে যে এইভাবে খাট তৈরি হয় না সিমেন্ট দিয়ে। নাছোড় বান্দা শিল্পী গোপাল রুদ্র পাল বিষয়টাকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেছেন আমি খাট বানিয়ে দেখাবো। যেমন বলা তেমন কাজ শেষে তিনি নিজের বাড়িতেই পাট ,সিমেন্ট,নেট,রড দিয়ে একটি বক্স খাট বানাতে শুরু করেন এবং অবশেষে সেটি তৈরি ও হয়ে যায়।একটি কাঠের বক্স খাট যে ধরনের নকশা তৈরি করা থাকে সেইভাবে সিমেন্টের বক্স খাট টিতে ও সেই ধরনের নকশা ফুটিয়ে তুললেন এই দৃশ্য না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না যে ওটাও কি সম্ভব।কি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছেন এই খাট তৈরীর ক্ষেত্রে উত্তরে গোপাল রুদ্র পাল বলেন কোন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেননি তিনি, শুধু ব্যবহার করেছেন শুধুমাত্র একটি চায়ের চামচ।সেই চামচ দিয়ে সমস্ত খাটের নকশা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন সবাইকে যারা এই বিষয়টাকে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিল ওনার সাথে।এই সিমেন্টের বক্স খাটটি চারটি ভাগে বিভক্ত মানে চারটি পার্ট খোলা যায় তাতে সবদিকে নাট বল্টু দিয়ে খাটটিকে বক্স খাটের মতন সংযুক্ত করে রেখেছে তবে খাটের মেঝের জায়গাটা ফ্লাইওড দিয়ে তৈরি করেছেন জিনিসপত্র রাখার জন্য যা অন্যান্য বক্স খাটের ক্ষেত্রে থাকে ।এবং শেষে সম্পূর্ণ খাটটিতে সোনালী কালারের রং দিয়ে শেষ তুলির টান টানেন তাতেই অবিশ্বাস্যভাবে ফুটে ওঠে একটি কাঠের বক্স খাটের মত সেই সিমেন্টের খাঁটি।দূর থেকে দেখে এমনকি স্পর্শ করেও কেউ বুঝতেই পারবে না সেটি সিমেন্টের খাট অসাধারণ এক প্রতিবার উদাহরণ।গোপাল রুদ্র পাল বলেন এই খাটটিকে অনেকে দেখেছে কিন্তু বলতে পারিনি কি জিনিস দিয়ে তৈরি সবাই ভেবেছে কাঠ দিয়ে তৈরি সেটাই ওনার প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ ।তবে তিনি জানান খাটটির ওজন প্রায় আড়াইশো কেজির মত এরপরও খাটটিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়া যায় এর জন্য কিছু লোক লাগে ।চারিদিকের নাট বল্টু খুলে দিলে তাটে চারটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এরপর সেটাকে যেখানে খুশি সেখানে নেওয়া যায় তবে একটু ভারী হওয়ার কারণে বেশ কয়েকজন লোক লাগে বলে জানান তিনি।বর্তমানে খাটটি তিনি ওনার ঘরে নিয়ে ফিট করে রেখেছেন এবং ব্যবহার করছেন।শুধু তাই না সরকারিভাবে তিনি একটি ঘর পেয়েছেন সেই ঘরের জানলা এবং দরজার চৌখাট গুলিও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করেছে যা বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না।তিনি আরেকটা কথা বলেছেন আগামী দিন প্রাকৃতিকভাবে একটি ফ্রিজ তৈরি করবেন যেখানে কোন বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে না তবে ঠান্ডা থাকবে অনেকটা ফ্রিজের মতন এর জন্য তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রেখেছেন এবং সফলও হয়েছেন আগামী দিন সেই প্রাকৃতিক ফ্রিজটি বানাবেন বলে জানান ।এছাড়া তিনি সিমেন্টের মাধ্যমে টিন বানিয়েছেন যদিও সেটি ছয় ফুটের বেশি লম্বা করার সম্ভব নয় বলে জানান এই সিমেন্টের টিন এবং সিমেন্ট দিয়ে দরজার চৌকাঠ বানিয়ে অনেক জায়গায় বিক্রি করেছেন বলে তিনি জানান তাতে খরচও অনেক কম কাঠের তুলনায়।তবে সিমেন্টের খাটটি বানাতে কত টাকা খরচ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার মতন খরচ হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে কেউ যদি খাট বানানোর জন্য অর্ডার করে তবে তিনি তা বানিয়ে দিতে পারবেন তাতে একটু খরচ বেশি হবে।এছাড়া গোপাল রুদ্র পাল এও বলেন নিজের জন্য খাটটি বানানোর কারণে তেমন কোন সুক্ষ ডিজাইন করেন নি যদি কারোর অর্ডার পান তিনি আরো সূক্ষ্মভাবে ডিজাইন করে দিতে পারবেন।এরপর বলতে হয় এই সিমেন্টের খাটটিতে যে ধরনের ডিজাইন তিনি করেছেন কাঠের বক্স খাটের ডিজাইন কেও হার মানায় ।এক সিমেন্টের খাট বানিয়ে অসাধারণ কাজ করলেন খোয়াই লাল ছড়া কলেজ এলাকার বাসিন্দা গোপাল রুদ্র পাল এক অসাধারণ শিল্পী।বর্তমান সমাজে গোপাল রুদ্র পাল দের মত এমন শিল্পীরা রয়েছে বলেই এই ধরনের শিল্পটা বেঁচে রয়েছে ভালো থাকুন আপনাদের মত এরকম শিল্পীরা।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

2 × one =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য