বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই খোয়াই ২৭ শে অক্টোবর….আমরা বাঙালিরা বারো মাসে তেরো পার্বণ করে থাকি যা বাঙ্গালীদের একটা ঐতিহ্য।তাতে কোন খামতি থাকে না। ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেল বাঙ্গালীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা যা বাঙ্গালীদের বারো মাসে ১৩ পার্বণের মধ্যে মধ্যে সব থেকে বড় পার্বণ।তাইতো এই পারবনে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একাকার হয়ে পুজোর চার দিন আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকে।আর বাঙ্গালীদের সমস্ত পুজো পরবনে প্রথম পুজো হয়ে থাকে আমাদের সিদ্ধিদাতা গণেশ। এবং এই গণেশ বন্দনার মাধ্যমে সমস্ত পূজার সূচনা হয়।আর এই সিদ্ধিদাতা গণেশের সাথে গনেশ তুল্য বিচার করেন আমাদের জন্মদাতা বাবাকে।এখানে এই কথাটির যুক্তি ও রয়েছে বাবা যেমন আমাদের মতন সন্তানদের জন্মদাতা ও প্রত্যেকটি সংসারের কর্ণধার তেমনি সেই বাবা প্রত্যেকটি সংসারের বোঝা বয়ে নিয়ে যায় নিজের কাঁধে করে নিজের সব ধরনের শখ আহ্লাদকে বিসর্জন দিয়ে সংসার প্রতি পালনের জন্য গাধার মতন কেটে চলে জাতে সংসারে শ্রী বৃদ্ধি হয় এবং স্ত্রী পুত্র কন্যারা ভালোভাবে থাকতে পারে।এসব কাজ করতে গিয়ে বাবারা কোনদিন নিজেদেরকে সুন্দর ও সাজ পোশাকে আবৃত করে রাখতে চায় না।ওরা শুধু চিন্তা করে নিজেদের স্ত্রী সন্তানকে কিভাবে ভালো রাখা যায় সেই চিন্তায় মগ্ন থাকে।আর সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে এই সব ক্ষেত্রে বাবারা সবসময়ই বঞ্চিত হয়ে থাকে।তাই খোয়াই জাম্বুর এলাকা এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা করুনা দেবনাথ সেই গনেশ তুল্য বাবাদের কথা চিন্তা করে দশমীর দিন ১০ জন বাবাকে তাদের হাতে ধুতি তুলে দেন কারণ উনার মতে বাবাদের কথা কেউ চিন্তাই করে না তাই।শেষে এই বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষকা করুনা দেবনাথের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি এই অনুষ্ঠানটির নাম রেখেছিলেন “গণেশ বরণ”গনেশায় নমঃ এবং এই কাজটি করে তিনি
সত্যিই অভিভূত এবং তৃপ্তলাভ করেন বলে জানান।
তিনি এও বলেন প্রতি বছর পূজোতে দেখতে পাওয়া যায় যে বস্ত্র বিতরণ
অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।বিশেষ করে মায়েদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণে অনুষ্ঠান মহিমান্বিত হয়ে উঠে। কিন্তু এখানে ভাববার বিষয় যে যিনি পরিবারের কর্নধার অর্থাৎ ‘বাবা,যিনি সবার মনের ইচ্ছা পূরণ করে থাকেন চোখ বন্ধ করে ।যেখানে বাবা শব্দ টি একটি পরিবারের বট বৃক্ষ ন্যায় সেই সংসারে ছায়া প্রদান করে।উনারা নিজের সমস্ত ধরনের শখ আল্লাহকে বিসর্জন দিয়ে দেন শুধু তাই না উনাদের জামা,জুতা টুকু ছিঁড়ে গেলেও উনারা মনের সাধকে মেরে ফেলেন হাসি মুখে সংসারের কথা চিন্তা করে।
তাই বাবাদের নিয়ে ভাবা, সেই রকম কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা শিক্ষিকা করুনা দেবনাথের চোখে ধরা পরেনি কোনদিন ও।তাই তিনি 2023ইং সালের বিজয়া দশমীকে সামনে রেখে ওনার মনে ইচ্ছা জাগে এবং তিনি বলেন তাইত
ঈশ্বর প্রদত্ত শব্দ যেনো আমার মধ্যে এক মন্ত্র উদ্ধিবিত হয় ” গনেশ বরন,, নামকরনে
ওনার এই ইচ্ছার কথা উনাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের
প্রধান শ্রী সুশান্ত দেবনাথ মহাশয়ের কাছে প্রকাশ করন। এবং উনি হাসি মুখে শিক্ষিকা করুনা দেবনাথের ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানান।
তাই সকলের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে ওনার মনের আবদার মিঠাতে দশমীর দিন সন্ধ্যায় দশ জন গনেশ কে অর্থাৎ গনেশ তুল্য বাবাদেরকে ধুতি দিয়ে
বরন করতে পেরে উনি কৃতার্থ হয়েছেন বলে জানান।শুধু তাই না দশমীর দিন সন্ধা রাতে সমস্ত বাবারা এই উপহার পেয়ে খুবই আবেগ আপ্লুত হয়ে যান বলে জানা যায় এবং ওরা বলেন সত্যিই ওদের কথা কেউ চিন্তা করেনা ওরা শুধু সংসার সমাজের বোঝাই বয়ে বেড়ায় সংসার প্রতি পালনের জন্য তাই এই উপহার পেয়ে মন থেকে আশীর্বাদ করেন শিক্ষিকা করুনা দেবনাথ কে।এই বিষয়ে শিক্ষিকা করুনা দেবনাথ কে ওনার মনের ইচ্ছাটি পূরণ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান ঐক্যতান সংঘ জব্বরটিলা ক্লাবের সমস্ত কর্মকর্তাদের ।এবং এই কিছু বিশেষ মুহূর্তের ছবিও ফ্রেম বন্দি করে রাখেন শিক্ষিকা করুনা দেবনাথ বলে জানান।এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষিকা করুনা দেবনাথ এও বলেন এই কাজটা ওনার সামান্য সাধ্যের মধ্যে করেছেন তিনি চান আগামী দিনও যাতে বটবৃক্ষের মতো ছায়া প্রদানকারী বাবাদের জন্য সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকেরা এই ধরনের চিন্তা ভাবনা করে এগিয়ে আসেন।যাতে করে বাবারাও বুঝতে পারে সংসার এবং সমাজের ব্যভার বহন করা শুধু ওদের কাজ না ওরও সমাজের একটি অঙ্গ ওদেরও সব আল্লাহর রয়েছে যা তারা নিজেদের সংসারের কাজে মেরে ফেলে তা যাতে না হয় এবং বাবাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসা এবং দেখিয়ে দেওয়া যে বট বৃক্ষের মতন বাবারা ছায়া প্রদান করে তাদের পেছনে কেউ রয়েছে সেটাই বলতে চাইছেন করুনা দেবনাথ।