বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বেকার যুবক-যুবতী ও মহিলাদের আত্মনির্ভর করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তবে স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য চাই সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা ও কঠোর শ্রম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আত্মনির্ভর ভারত গড়ার জন্য দক্ষতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা আজ রেন্টার্স কলোনীস্থিত দক্ষিণেশ্বরী মিলনায়তনে (কালীবাড়ি) আগরতলা পুরনিগমের ৪২নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত সদ্য সেলাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১০০ জন মহিলার হাতে সেলাই মেশিন, শংসাপত্র ও অফার লেটার তুলে দিয়ে একথা বলেন। গত ২৫ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৫ দিনব্যাপী এই ১০০ জন মহিলাকে সেলাই শেখানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের উদ্যোগে, দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প দপ্তর ও আগরতলা পুরনিগমের যৌথ সহায়তায় মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পে তাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই ১০০ জন মহিলা ইন্দ্রনগরের আইটিআই রোড সংলগ্ন ডিজাইনার ক্রিয়েশান কার্যালয়ে অথবা নিজ নিজ এলাকায় স্বউদ্যোগে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পে প্রতিটি সেলাই মেশিন পিছু ৭ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে।
এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা প্রশিক্ষণার্থী এই মহিলাদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে অনেক যুবক-যুবতী ও মহিলা উপকৃত হয়েছেন। ভবিষ্যতে এ প্রকল্প সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু সেলাই প্রশিক্ষণ নয় বেকার যুবক-যুবতীগণ যাতে মোটর ড্রাইভিং, ইলেক্ট্রিকেল বা অন্যান্য স্ব উদ্যোগী পেশায় স্বাবলম্বী হতে পারেন এ লক্ষ্যে দপ্তর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মূল লক্ষ্য হল আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে তোলা। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের আগে স্বসহায়ক দলের সংখ্যা রাজ্যে নগন্য ছিল। বর্তমানে ৫০ হাজারের উপর স্বসহায়ক দল রয়েছে। ৫ লাখ মহিলা এতে যুক্ত রয়েছেন। ১ লাখের উপর লাখপতি দিদি রয়েছেন। তিনি বলেন, আগে মহিলাদের জন্য সরকারি চাকুরি, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিলনা। ২০১৮ সালের পর বর্তমান রাজ্য সরকার সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য হল এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলা। রাজ্য সরকারও সেই দিশায় কাজ করছে। তিনি বলেন, নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়তে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন ত্রিপুরা গড়ার জন্য সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগ সহ বিভিন্ন ক্লাব ও এনজিও-কে এক সাথে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
*২য় পাতায়
(২)
আলোচনায় অংশ নিয়ে ত্রিপুরা ওবিসি কর্পোরেশন-এর চেয়ারম্যান তাপস মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের প্রজেক্ট হলো দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প ও বিশ্বকর্মা যোজনা। এর সুযোগ বেকার যুবক-যুবতী ও মহিলাদের গ্রহণ করতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা প্রদীপ কে বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রত্যেক মহিলাকে এককালীন ২০০০ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প নিগম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত রিয়াং। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায়, আগরতলা পুরনিগমের ২৯নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর রুমা দাস, বিশিষ্ট সমাজসেবী সুজিত রায়, স্বপ্না দাস প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর শিল্পমন্ত্রী সহ অতিথিগণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের হাতে একটি করে সেলাই মেশিন, শংসাপত্র ও অফার লেটার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আগরতলা পুরনিগমের ৪২নং ওয়ার্ডের কর্পোরেটর সাথী রুদ্র পাল।



