আগরতলা বলদাখাল দক্ষিণ পাল পাড়ায় হৃদয়বিদারক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দিনভর কাজ সেরে বাড়ি ফিরে ১২ বছরের ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান মা। যখন সেই ঘটনা তখন ছেলেটির বাবা কর্মস্থলেই ছিলেন। ওই ছাত্রের নাম রুদ্রদীপ সরকার। পাড়ার পরিচিত নাম তাজ। সে স্থানীয় স্বামী দয়ালানন্দ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। ওই দিন সকালে তার মা পিংকি সরকার প্রতিদিনের মতো কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় ফিরে এসে ছেলের ঝুলন্ত দেহ ঘরে দেখতে পান তিনি। তার আগেই অবশ্য বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। তারাই পুলিশকে খবর দেন। রুদ্রদীপের মা বাড়িতে আসার আগেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তারা দাঁড়িয়ে ছিলেন ছাত্রের বাবা-মায়ের অপেক্ষায়। তারা আসার পরেই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তাদের পরিবার ওই এলাকায় ভাড়া থাকে। ছেলের পড়াশোনার জন্য বাবা এবং মা দু’জনেই কাজ করেন। সেই ছেলেই তাদের কিছু না বলে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিবেশী এক মহিলা জানান, সকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মা নাকি ছেলেকে কিছুটা শাসন করেছিলেন। তারা অনুমান করছেন, হয়তো সেই মানসিক চাপে ছেলেটি এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পুলিশ এখনো ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত। মৃতদেহের পাশে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে দেখা হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী তদণ্ড এগোচ্ছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর সমাজে উঠছে এক গভীর প্রশ্ন, ১২ বছরের একটি শিশু এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে কীভাবে বাধ্য হয়? শিশু মনে দুঃখ, অপমান কিংবা মানসিক চাপ কীভাবে এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে? জানা গেছে, ভাড়াটিয়া আরেকটি মেয়ে নাকি প্রথমে ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান। তাদের কথা অনুযায়ী দরজা বন্ধ ছিল বটে, কিন্তু মেয়েটি বারবার ডাক দেওয়ার পরেও সাড়া না দেওয়ায় দরজার নিচ দিয়ে ঘরের ভেতরে তাকানোর পরই রুদ্র দীপের ঝুলন্ত পা দেখতে পায়। মেয়েটির চিৎকারে সবাই ছুটে আসে।