ভোক্তাদের ভোক্তা সুরক্ষা আইন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তাই খাদ্য দপ্তরকে ভোক্তা সুরক্ষা আইন সম্পর্কে আরও বেশি করে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যভিত্তিক ভোক্তা সচেতনতামূলক সেমিনার এবং বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় স্তরে গঠিত কনজিউমার ক্লাবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভোক্তাদের যেকোনও জিনিস কেনার সময় সঠিক ক্যাশমেমো সংগ্রহ করার উপর সচেতন থাকতে হবে। তাহলে ভোক্তাদের সঠিক ও দ্রুত আইনি পরিষেবা পেতে সুবিধা হবে। ফ্ল্যাটবাড়ি ক্রয়, অনলাইনে জিনিসপত্র ক্রয় সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতারণার শিকারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই ধরণের সচেতনতামূলক কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। উল্লেখ্য, খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যের ১০০টি বিদ্যালয়ে এবং ১৮টি মহাবিদ্যালয়ে কনজিউমার ক্লাব গঠন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে জনগণকে পরিষেবা প্রদানে সব সময় আন্তরিক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণবন্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ই-পিডিএস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পুরোনো রেশনকার্ডগুলোকে পিভিসি কার্ডে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, যেগুলি সহজে নষ্ট হবে না। অনুষ্ঠানে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ত্রিপুরা ছোট রাজ্য হলেও গণবণ্টন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে বিশেষ সুনাম রয়েছে। প্রকৃত ভোক্তারা যাতে তাদের রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারেন তারজন্য গণবন্টন ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে। পাশাপাশি গণবন্টন ব্যবস্থাকে আরও জনমুখী করার জন্য দপ্তর সচেষ্ট রয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবছর ভোক্তাদের বিনামূল্যে ১ কেজি চিনি, ২ কেজি ময়দা ও ৫০০ গ্রাম সুজি প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে দপ্তর। এছাড়াও খাদ্য দপ্তরের প্রায় ৬০০-র উপর শ্রমিকদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে রাজ্য ভোক্তা কমিশনের সভাপতি তথা ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম লোধ বলেন, ডিজিটাল যুগে ভোক্তাদের ভোক্তা সুরক্ষা আইন সম্পর্কে সচেতন করা খুবই সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, ভোক্তাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্যের ৪টি জেলায় ভোক্তা কমিশন খোলা হয়েছে। বাকি ৪টি জেলাতেও ভোক্তা কমিশন চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভোক্তা সুরক্ষা আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ১০০টি বিদ্যালয়ে ও ১৮টি মহাবিদ্যালয়ে কনজিউমার ক্লাব গঠন করা হয়েছে। এই ক্লাবগুলো নিয়মিত আলোচনাচক্র ও কর্মশালার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত করবে, যাতে তারা সমাজে সচেতন ভোক্তা হিসেবে অন্যদেরও সচেতন করতে পারে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার ও খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে খাদ্য দপ্তরের ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘ভোক্তা সংবাদের’ প্রথম সংস্করণের আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী। খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভোক্তা অধিকার সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খাদ্য দপ্তরের শ্রমিকদের ২ হাজার টাকা করে পূজা অনুদান প্রদানের কর্মসূচির সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিনামূল্যে সুজি, ময়দা ও চিনি বিতরণ কর্মসূচির সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।