ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, এবং লেখক। তিনি বাংলা রেনেসাঁসের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। বিদ্যাসাগর তাঁর অসাধারণ বিদ্যা, মানবিকতা এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করার কারণে বিখ্যাত ছিলেন। সেজন্যই আজকেও পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মানুষের মাঝে বিরাজমান এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই রাজ্য তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরে উদ্যোগে রাজধানীর ড্রপ গেট স্থিত বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম জয়ন্তী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হল।
পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শুধু বিদ্যার দিক থেকেই নয় সামাজিক কর্মকাণ্ডের দিকেও যথেষ্ট অবদান রেখেছিলেন তাঁর প্রধান অবদানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন: বিদ্যাসাগর সমাজে বিধবা নারীদের অবস্থা পরিবর্তন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন এবং ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন করাতে সহায়তা করেন।
- মেয়েদের শিক্ষার প্রসার: তিনি মেয়েদের শিক্ষার প্রচলন ও উন্নতির জন্য কাজ করেন। তাঁর উদ্যোগে কলকাতায় প্রথম বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
- বাংলা ভাষার সংস্কার: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ব্যাকরণের সহজীকরণ এবং ভাষার প্রমিতকরণে অবদান রাখেন। তিনি বাংলা ভাষার বর্ণমালা এবং ধ্বনিগত কাঠামোকে আরো সুশৃঙ্খল করেন।
- বই রচনা: বিদ্যাসাগর “বেতাল পঞ্চবিংশতি” ও “শকুন্তলা”র মতো বই বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন, যা আজও জনপ্রিয়। তাঁর লেখা “বর্ণপরিচয়” বইটি বাংলা শিক্ষার ইতিহাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এদিন তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৪ তম জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলা সভাধিপতি বলাই গোস্বামী, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী, এবং তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলা সভাধিপতি বলাই গোস্বামী সমাজ সংস্কারে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নীতি আদর্শ মেনে চলার জন্য সকলের নিকট আহ্বান রাখেন।
বলা যায় পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনের প্রতিটি দিকই ছিল দৃষ্টান্তমূলক। তাঁর কাজ এবং আদর্শ আজও শিক্ষার উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচিত হয়।