পিএম-জনমন প্রকল্পে রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় ৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয় ১০ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা মঞ্জুরি দিয়েছে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায় একথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন সাফল্যের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৫৬টি আইসিডিএস প্রকল্প রয়েছে। ধলাই জেলার গঙ্গানগর ব্লকে নতুন আরও একটি আইসিডিএস অফিস খোলার অনুমোদন গৃহীত হয়েছে এবং অতিসতুর তা খোলা হবে। উক্ত আইসিডিএস প্রকল্পগুলির অধীনে রাজ্যে মোট ১০,২২২ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে মোট ২,৯০,৬৫৯ জন শিশু (৬মাস-৬বছর) এবং ২৬,৪৫৮ জন গর্ভবতী মহিলা ও প্রসূতি মা নথীভুক্ত রয়েছেন। রাজোর ১০,২২২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ৯২১০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব পাকা বাড়ি রয়েছে। ভারত সরকারের ডোনার মন্ত্রকের নর্থ ইষ্ট স্পেশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট স্কিমের (NESIDS) অধীনে ৪৭টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য মঞ্জুরী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৩২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি ১৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। এতে মোট ৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। এছাড়াও এম জি এন রেগা প্রকল্প এবং ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয়ের যৌথ অর্থানুকূল্যে ২৬০টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মাণের মঞ্জুরী পাওয়া গেছে। তাতে মোট ৩১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে সমাজ কল্যাণমন্ত্রী জানান, ধলাই জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উন্নীত করার লক্ষ্যে ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয় মোট ২ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে, যা দিয়ে পোষণ ভাটিকা, আরও ফিল্টার, রঙ্গীণ এলইডি টিভি এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। এছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আরও ২৭৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে সঙ্গম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উন্নীত করার লক্ষ্যে ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রনালয় মোট ২ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা অনুমোদন দিয়েছে। তিনি জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোতে আইসিডিএস প্রকল্প সুচারুরূপে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য ‘অঙ্গনওয়াড়ি পরিদর্শন এবং মনিটরিং সিস্টেম’ (AIMS) অ্যাপ আজ থেকে চালু করা হয়েছে। সমাজ কল্যাণমন্ত্রী আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মাতৃপুষ্টি উপহার প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৮০ জন গর্ভবতী মহিলাকে মোট ৪ কোটি ২১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মাত্র বন্দনা যোজনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের এখন পর্যন্ত ৩৮১৮ জন গর্ভবতী মহিলাকে মোট ৪ কোটি ৬৪ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর ৩৩টি বিভিন্ন ধরণের সামাজিক ভাতা (তিনটি জাতীয় এবং ৩০টি রাজ্যস্তরের) প্রদান করছে। বর্তমানে রাজ্যে মোট ৪ লক্ষ ৩ হাজার ৫৭৭ জন ভাতা প্রাপক সামাজিক ভাতার আওতাধীন রয়েছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সামাজিক ভাতা প্রদানে মোট ৭৮৬ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। উজান অভয়নগরস্থিত সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধীন মূক ও বধির শিক্ষর্থীদের জন্য প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইংরাজী মাধ্যম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আরও জানান, জনজাতি এলাকার শিশুদের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ধলাই জেলায় এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে অমরপুরের টিটিএডিসি এলাকার ডালাকে দুটি শিশু নিবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই দুটি শিশু নিবাসের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই দুটি কাজের জন্য ২ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। এছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ঊনকোটি জেলায় শিশুনিবাস নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।