মেডিক্যাল এডুকেশনের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ দেশের যে কোনও মেডিক্যাল কলেজের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। চিকিৎসক, অধ্যাপক সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিক পরিশ্রমের ফলেই এই কলেজ ক্রমশ উন্নতির পথে এগুচ্ছে। আজ হাপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও ড. বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতালের ১৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে একটি ওপেন জিম, শিশুপার্ক এবং ব্যাডমিন্টন কোর্টেরও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ভাষণ রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ২০০৫ সালে একই সঙ্গে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেডিক্যাল কাউন্সিলের লেটার অব পারমিশন একবছর পরে পাওয়ায় ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের যাত্রা ২০০৬ সালে শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এই কলেজ থেকে ১৩টা ব্যাচের ছাত্রছাত্রী পাশ করে বের হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে বর্তমানে অনেক সুব্যবস্থা রয়েছে। সে বিষয়ে রাজ্যের জনগণকে অবগত করার প্রয়োজন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে বহিরাজ্যে রোগী রেফারের সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। বর্তমানে রাজ্যেই কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট, প্লাস্টিক সার্জারি সহ বহু জটিল রোগের অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে। আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি গুণগত শিক্ষাও প্রদান করা হচ্ছে। তাতে লাভবান হচ্ছেন রাজ্যের জনগণ।
মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষের জন্য চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে হবে। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে আপনাদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস জাগ্রত হয়। মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রতিক রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন বলে ভাষণে উল্লেখ করেন। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সর্বতো সাহায্য করা হবে বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, গত ১৮ বছর ধরে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে আসছে। রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতিতে হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর ইন্ডোর হলে যে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছিল তার পরিচালনার দায়িত্ব ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়েছিলেন। তাদের সকলের প্রচেষ্টায় সে সময় খুব ভালোভাবে করোনা মোকাবিলা করা হয়েছিল যা প্রশংসিতও হয়েছিল। রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেখানে গিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও ভাষণ রাখেন ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন সাহা, সোসাইটি ফর ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. প্রমথেশ রায়, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর (ডা.) অরিন্দম দত্ত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষায় সকল ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার স্বরূপ তাদের মেডেল ও শংসাপত্র প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিগণ।