রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। এজন্য সরকার প্রচেষ্টা নিয়েছে। রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা সহ প্রান্তিক এলাকায় উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তর ত্রিপুরা, ঊনকোটি ও গোমতী জেলা হাসপাতালে ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরির ভিত্তিপ্রস্তরের আবরণ উন্মোচন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত হেলথ ইনফ্রাস্ট্রাকচার মিশনে এই ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরিগুলি স্থাপন করা হবে। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. মনসুখ মান্ডভিয়া, আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডা. হেমন্ত বিশ্বশর্মা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভাগবন্ত খুবা, ভারত সরকারের ফার্মাসিউটিক্যাল দপ্তরের সিনিয়র ইকোনমিক অ্যাডভাইজার আদেশ কুমার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া অনুষ্ঠানে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরা শাখার অধিকর্তা ডি কে চাকমা, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. অনুপ কুমার সাহা সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অনেকগুলি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করা হয়।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে সকলের জন্য উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করা সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। জনগণের কাছে সহজলভ্য ও উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভারত সরকার বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরি জেলা পর্যায়ে রোগ নিরীক্ষণ, নির্ণয় এবং চিকিৎসার উন্নতি সাধনে কাজ করবে। প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন পরীক্ষাগারকে একই ছাদের তলায় নিয়ে আসা হবে। এতে রোগ নিরীক্ষণ দ্রুত হবে। তিনি বলেন, রোগ সণাক্তকরণ, প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সময় উপযোগী পদক্ষেপ নিতে মূল্যায়ন, গবেষণা এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরিগুলির সঠিক এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করা যাবে। এসব তথ্য চিকিৎসায় সহায়ক হবে। ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরিতে প্রায় ১৪৭টি পরীক্ষার সুযোগ থাকবে।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য প্রতিটি জেলায় ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরি স্থাপন করা। এখন পর্যন্ত দুটি জেলায় ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরি স্থাপন করা হয়েছে এবং যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে ধলাই এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায়। শীঘ্রই এগুলি চালু করা হবে। খোয়াই জেলা হাসপাতাল এবং সিপাহীজলা জেলার মেলাঘর মহকুমা হাসপাতালে ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেলথ ল্যাবেরোটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. মনসুখ মান্ডভিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. মনসুখ মান্ডভিয়া বলেন, প্রায় ১,১০২ কোটি টাকার মোট ৮৫টি প্রকল্পের আজ শিলান্যাস ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিকাশে আগে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর লুক ইস্ট এর পরিবর্তে অ্যাক্ট ইস্ট নীতি কার্যকর করে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিকাশে কাজ করছেন। উত্তরপূর্বাঞ্চল ও পাবর্ত্য রাজ্যগুলির বিভিন্ন গ্রামে ভাইব্রেন্ট ভিলেজের মতো প্রকল্প চালু করে উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন ভারত নির্মাণ হচ্ছে। দেশের সমস্ত নাগরিকদের কাছে সহজলভ্য ও সাশ্রয়মূল্যে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।