স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে পাথেয় করে চলতে পারলেই মানব ধর্মের মূল উদ্দেশ্য উপলব্ধি করা সম্ভব। স্বামীজী বলে গেছেন মানব সেবার মাধ্যমেই ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যভিত্তিক জাতীয় যুব উৎসব-২০২৪ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় যুব দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে যুব সমাজের মধ্যে রাষ্ট্রচেতনা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করা। স্বামীজীর আদর্শকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। স্বামীজী ছিলেন জাগরণের অগ্রদূত, কল্যাণব্রতী দেশনায়ক, চিন্তানায়ক ও যুগনায়ক। তাই আজকের এই সময়ে স্বামীজীর চিন্তা, ভাবনা ও দেশের প্রতি ভালবাসা খুবই প্রাসঙ্গিক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যৌবনকাল হচ্ছে মানুষের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময়েই নিজের অন্তর্নিহিত প্রতিভা ও শক্তির বিকাশ ঘটে। যুবশক্তিকে সঠিক দিশা দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়। যুব সমাজ হচ্ছে দেশের মূল শক্তি। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নেশা থেকে যুব সম্প্রদায়কে দূরে থাকতে হবে। নেশার বিরুদ্ধে জনজাগরণ সৃষ্টি করতে যুব সম্প্রদায়কে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার যুবশক্তির বিকাশে পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যেও বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে যুবশক্তির বিকাশে প্রয়াস নিয়েছে। এজন্য গুণগত শিক্ষা সম্প্রসারণের পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রেও যুবাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র পড়াশুনা করলেই হবে না যুবক যুবতীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী স্বামীজীর জীবনের বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করে বলেন, স্বামীজী চেয়েছিলেন দেশে একটি সুস্থ ও শক্তিশালী যুবসমাজ গড়ে উঠুক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, জাতীয় যুব দিবসে আমাদের সংকল্প নিতে হবে নেশা থেকে দূরে থাকার। যুব সম্প্রদায়ের উদ্যোগেই নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রামকৃষ্ণ মিশনের (বিবেকনগর) সম্পাদক স্বামী শুভকারানন্দ মহারাজ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস, পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, টিআইডিসি’র চেয়ারম্যান নবাদল বণিক, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, দপ্তরের অধিকর্তা এস বি নাথ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল যুবক যুবতীদের এবং নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার কাজে যে সমস্ত ক্লাব কাজ করছে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিগণ তাদের হাতে সম্মাননা ও শংসাপত্র তুলে দেন। তাছাড়াও স্বাবলম্বন প্রকল্প ও পিএমইজিপি প্রকল্পে বেকার যুবক যুবতীদের হাতে ঋণের চেক তুলে দেওয়া হয়। যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, এই দুই প্রকল্পে ৬৬৪ জনকে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে।