চোখের এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে গোড়া থেকে সচেতন না থাকলে হারিয়ে যেতে পারে সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি। কিন্তু এই রোগ নিয়ে সচেতনতা প্রায় নেই বললেই চলে, জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।বিশ্বজুড়ে প্রকোপ বাড়ছে এই অসুখের। গ্লুকোমা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই বেছে নেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ দিন। আজ, ১২ মার্চ বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস। রোগ এড়াতে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানোর বার্তা দিতেই পালিত হয় এই দিনটি।
গ্লুকোমা কী?
চোখের একাধিক রোগকে একত্রে গ্লুকোমা বলা হয়। এই রোগগুলির প্রতিটিই অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপের জন্য চোখের ভিতরের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তির উপর। তৈরি হয় একাধিক ব্লাইন্ড স্পট, যার ফলে নষ্ট হয় দৃষ্টিশক্তি। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, আগে থেকে সতর্ক না হলে এই রোগের ফলে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
একটি তথ্য বলছে, ভারতে ১১ মিলিয়নের বেশি ৪০ ঊর্ধ্ব নাগরিক গ্লুকোমায় আক্রান্ত। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এর জন্য কোনওরকম চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। উন্নত দেশের তুলনায় ভারতের ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিমাণ গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগী বিনা চিকিৎসায় থাকেন বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি। যা নিয়ে আশঙ্কায় তাঁরা। প্রথম দিকে পেরিফেরাল বা আশপাশের দৃষ্টিক্ষতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখনও রোগটিকে বিশেষ আমল দেওয়া হয় না। পরে যখন সেন্ট্রাল ভিশন বা আসল দৃষ্টিশক্তি নিয়ে সমস্যা হয়, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। শুধু বয়স্ক নয়, অনেক শিশুদেরও এই সমস্যা দেখা যায়।
বেশ কয়েকটি ভাবে গ্লুকোমাকে ভাগ করা যায়। বেশ কিছু উপসর্গও রয়েছে। অনেক সময় টানা মাথা ব্যথা করে। অনেকের কিছুদিন অন্তর অন্তর চোখের পাওয়ার সংক্রান্ত সমস্যা হয়। সেই কারণে কিছু দিন পরপরই চশমা বদল করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে আলোর উৎসের দিকে তাকালে কালো বা অন্য রঙের ছিট-ছিট বিন্দু আছে বলে মনে হয়। অত্যধিক ডায়াবেটিস থাকলে গ্লুকোমার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।
আগে থেকেই নজর
গ্লুকোমার কোনও ওষুধ হয় না বলেই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আগে থেকে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাই গ্লুকোমা ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। চোখ নিয়ে সামান্য সমস্যা হলেই উপেক্ষা না করে ডাক্তারে কাছে যাওয়া উচিত। একদম ছোট থেকে শুরু করে ৪০ বছর বয়স পেরোলে নিয়মিত এই অভ্যাস রাখতে হবে। তাহলেই ঠেকানো যাবে যন্ত্রণাদায়ক এই অন্ধত্ব।