Thursday, September 19, 2024
বাড়িখবরশীর্ষ সংবাদভিক্টর এবং বেদিকা মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানির ১৬ হাজার ৭২০ টাকার জন্য এজেন্টদের...

ভিক্টর এবং বেদিকা মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানির ১৬ হাজার ৭২০ টাকার জন্য এজেন্টদের অস্বাভাবিক মানসিক চাপের কারণে ফাঁসিতে আত্মঘাতী হল ৩৮ বছরের যুবক। ঘটনা খোয়াই লালটিলা এলাকায় ।

বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২৯শে আগস্ট….. একটা সময় ছিল রাজ্যের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে চিটফান্ড গজিয়ে উঠেছিল যাদের পাল্লায় পড়ে অনেক সাধারন মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছিল । বর্তমান সময়ে রাজ্যের প্রত্যেকটি মহকুমা তে গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলি তারা মানুষকে ঋণ প্রদান করেই ঋণ আদায়ের জন্য একাধারে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। অথচ দেখা গেছে সামান্য কিছু টাকার জন্য দুটি মাইক্রো ফাইন্যান্সের লোকেরা উত্তর রামচন্দ্র ঘাট এলাকার লালটিলা কলোনির বাসিন্দা অলক রঞ্জন আচার্জী কে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে অভিযোগ উঠলো খোয়াই শহরের বুকে গজিয়ে উঠা দুটি মাইক্রো ফাইন্যান্স বেদিকা ও ভিক্টর এর বিরুদ্ধে। তেমনি এক ঘটনা ঘটে খোয়াই থানা ধিন উত্তর রামচন্দ্র ঘাট এলাকার লালটিলা কলোনিতে। ঘটনায় বিবরণে জানা যায় এলাকার বাসিন্দা অলক রঞ্জন আচার্য খোয়াই গণকি এলাকার দুটি মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি যথা বেদিকা ও ভিক্টর নামক মাইক্রো ফাইন্যান্স থেকে দুটি কোম্পানি মিলিয়ে ৯০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। শেষে উভয় কোম্পানিতে ঋণ পরিশোধ করে বর্তমানে তাদের ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৭২০ টাকা তার মধ্যে বেদিকা ফাইন্যান্স মৃত অলক আচার্যের কাছে পাবে ১৫ হাজার ৬০০ টাকা অন্যদিকে ভিক্টর ফাইন্যান্স কোম্পানি পাবে ১১২০ টাকা এই টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার জন্য বেদিকা ফাইন্যান্সের লোকেরা প্রতিনিয়ত অলক আচার্যের বাড়িতে ধরনা দিয়ে বসে থাকতো টাকা নেওয়ার জন্য তেমনি ভাবে বুধবার বেশ কয়েকবার বেদিকা ফাইন্যান্সের লোকেরা তার বাড়িতে ১১২০ টাকা নেওয়ার জন্য ঘাপটি মেরে বসে থাকে টাকা না নিয়ে ওরা যাবে না এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে । অন্যদিকে অলক আচার্যের একটি মাত্র ১২ বছরের মেয়ে অসুস্থতার কারণে খোয়াই জেলা হাসপাতালে ভর্তি মেয়েটির সাথে তার মা মিতা গোস্বামী আচার্জী মেয়েটির সেবা করার জন্য হাসপাতালে থেকে যায় । বুধবার বিকেলে ভিক্টর ফাইন্যান্স কোম্পানির লোকেরা অলক আচার্যের বাড়ি গিয়ে ওঠে আবার এবং বাড়ি ঘরের সমস্ত ছবি তুলে পাশাপাশি তার মার ছবি তুলে আনে এবং বলে কিভাবে টাকা না দিয়ে পালিয়ে যায় তারা দেখবে। এবং কোম্পানির লোকেরা মৃত অলক আচার্জির মাকে বলে আসে দরকার পড়লে ছেলেকে বলবেন কিডনি বিক্রি করে টাকা দেওয়ার জন্য এই বলে চলে আসে তারা । শেষে রাতে অলক বাড়ি ফেরার পর তার মা সমস্ত ঘটনাটি তাকে বলে সেই কথা শুনে হয়তো অলক লজ্জায় অপমানে তাদের বাড়ির একটি ঘরে বুধবার গভীর রাতে আত্মহত্যা করে । শেষে বৃহস্পতিবার সকালে আবার সেই ভিক্টর ফাইন্যান্সের লোকেরা তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় এবং খোঁজ নিতে থাকে অলকের । শেষে কোন এক সময়ে যে ঘরে অলক ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছে সেই ঘরের জানলা খুলে দেখতে পায় অলক ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে । তখন এই দৃশ্য দেখে ভিক্টর ফাইন্যান্সের লোকেরা সেখান থেকে পালিয়ে আসে। বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসীরা ঘটনাটি লক্ষ্য করে যে ভিক্টর ফাইন্যান্স কোম্পানির লোকেরা কেন পালিয়ে যাচ্ছে তার বাড়ি থেকে । তখন গিয়ে অলক কে এলাকাবাসী ও বাড়ির লোক ডাকাডাকি করতে থাকে এবং সেই ঘরটি দরজা ভেঙ্গে খুলে দেখতে পায় অলক ফাঁসি তে আত্মহত্যা করেছে। তা দেখেই ভিক্টর ফাইনান্সের লোকেরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ এলাকা বাসির। শেষে উভয় কোম্পানির শাখা সঞ্চালকদের সাথে কথা বললে তারা ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে চালিয়ে দেন এমনকি ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করে । অথচ প্রমাণ রয়েছে ভিক্টর কোম্পানির একটি ছেলে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সকালেও গিয়েছিল টাকা সংগ্রহের জন্য বলে অভিযোগ করে মৃত অলক আচার্জির স্ত্রী মিতা গোস্বামী ।উনি বারবার একটা কথাই বলছিলেন এই ভিক্টর ফাইন্যান্স কোম্পানির কারণেই উনার স্বামী আত্মহত্যা করেছে পাশাপাশি এলাকাবাসী ও এই বিষয়টিকে সহমত পোষণ করছেন। এলাকাবাসী এতটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে আগামী দিনে মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানির এজেন্ট এই এলাকাতে দেখলে হিতে বিপরীত হতে পার এমনকি বেঁধে রাখারও হুমকি দেয় এলাকাবাসী । তবে এই ঘটনায় এলাকার শোকের ছায়া নেমে আসে এবং অলক আচার্যের আত্মহত্যার কারণে আত্মীয় পরিজনের কান্নায় এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তবে খোয়াই জেলা প্রশাসন এইভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স গুলিকে যদি অতিসত্বর তাদের বৈধতা যাচাই না করে এবং কিস্তি আদায়ের পদ্ধতি পরিবর্তন না করে তাহলে আগামী দিন এমন অনেক অলক আচার্জির মতন ব্যক্তিরা ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলির চাপে পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে যা কোনদিনই কাম্য নয় ।অন্যদিকে মৃত অলক আচার্যের স্ত্রী মিতা গোস্বামী বলেন গত দুমাস আগে উনার শ্বশুর মারা গেছে তাতে শ্রাদ্ধের কাজ করতে ব্যাপক বেগে পেতে হয়েছে তাদের । তার মধ্যে হয়ে গেল বন্যা এই বন্যার ফলে তাদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি থেকে উত্তরণের আগেই মাইক্রো ফাইন্যান্স গুলির মানসিক নির্যাতন শুরু হয়েছে সামান্য কিছু টাকার জন্য কোম্পানিগুলির মানুসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ওনার স্বামী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। স্ত্রী এও বলেন উনার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী ভিক্টর ও বেদিকা মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি। তবে এখন দেখার বিষয় এই ঘটনাটি কে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কি ধরনের পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

two × 1 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য