বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ১৩ই নভেম্বর…..বৃহস্পতিবার বিকালে খোয়াই এর রামচন্দ্র ঘাট এলাকার বাসিন্দা ঝন্টু দেবের সাড়ে ছয় বছরের কন্যা জোনাকি দেবকে বিষাক্ত সাপে কামড় দেয় । এই ঘটনাট ওই শিশু কন্যাটির পরিবারের লোক জনকে জানায় ওই শিশু কন্যা জোনাকির দেব। ঘটনার পরবর্তীতে ওই শিশু কন্যাটির শরীরে বিষক্রিয়ার ফলে শারীরিক বিভিন্ন উপসর্গ শুরু হওয়াতে পরিবারের লোকজনের কৌতূহল জাগ্রত হলে, পরিবারের লোকজন শিশু কন্যা থেকে জিজ্ঞেস করলে শিশু কন্যাটি জানায় প্রাইভেট পড়ার থেকে আসার সময় প্রাকৃতিক কাজ করতে গেলে সাপে কামড় দিয়েছে বলে সে ধারনা করছে। যথারীতি পরিবারের লোকজন প্রথমে খোয়াই মহকুমা এলাকার চেবরী প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর চেবরী প্রাথমিক হাসপাতাল ওই শিশু কন্যাটির শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়াতে খোয়াই জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল খোয়াই জেলা হাসপাতালে যখন নিয়ে আসেন তখন শিশু কন্যাটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।খোয়াই জেলা হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হয় তখন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের আর কিছু করার ছিল না। এখানে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন চেবরী প্রাথমিক হাসপাতালে কেন সাপের ছোবলের এন্টি ভেনাম দেওয়া হলো না ওই শিশু কন্যাটিকে। সাধারণ জনগণ থেকে বুদ্ধিজীবী মহলের বক্তব্য সঠিক সময় ঐ শিশু কন্যাটিকে এন্টি ভেনাম দেওয়া হত তাহলে শিশুটি বেঁচে যেত। শিশু কন্যাটির পিতা বহি রাজ্যে কর্মসূত্রে রয়েছেন। শিশু কন্যাটির মৃত্যু কে কেন্দ্র করে পরিবারের লোকজনের কান্নায় খোয়াই জেলা হাসপাতাল চত্বর ভারী হয়ে ওঠে। এই মৃত্যুটি কে কেন্দ্র করে রামচন্দ্র ঘাট এলাকাতেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এখানে পরিতাপের সাথে বলতে হয় এত বড় ঘটনার পরও পরিবারের লোকেরা ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। ইন্টারনেটের যুগে আজও মানুষ যে কত পিছিয়ে আছে আবারও তার প্রমাণ মিলল খোয়াই জেলা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যারাতে। সাধারণ মানুষের একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে সাপে কামড় দিলে ওঝার দ্বারা সেই ব্যক্তিকে বাঁচিয়ে তোলা যায়। আসলে এই ধারণাটা একেবারেই ভুল। কারণ আজ পর্যন্ত কোন ওঝা সাপের কামড়ের ব্যক্তিকে বাঁচাতে পারেনি। সাপের কামড়ের বিষ যখন ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে প্রথমেই সেই বিষের ক্রিয়া শুরু হয় রক্তে এবং ফুসফুসে। একটা সময় সেই রক্ত বিষের কারণে জমাট বাঁধতে থাকে তখন যদি সঠিক এন্টি ভেনাম প্রয়োগ না করা হয় তাহলে ওই রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত। এসব জানার থাকার পরও সাধারণ মানুষ সাপের কামড়ের রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে যেতে চায়। আর তেমনি ঘটনা ঘটলো খোয়াই জেলা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই শিশু কন্যাটি মারা যাওয়ার পরও শিশুটির মা এবং তার পরিবারের লোকেরা ওঝা খুঁজতে শুরু করে শশুরটিকে বাঁচানোর জন্য। যদিও বিষয়টা খুবই মর্মান্তিক এরপর বলব ওঝা দিয়ে এই ধরনের রোগীকে কখনোই বাঁচানো যায় না। তবে সময় মত শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা হয়তো শিশুটিকে বাঁচাতে পারতো বলে ধারণা করছেন অনেকেই। কিন্তু ওঝা বৈদ্যের পাল্লায় পড়ে সাড়ে ছয় বছরের শিশু কন্যাটি মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ল যা এক মর্মান্তিক ঘটনা।



