বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ৪ঠা সেপ্টেম্বর.…… একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এবং ইন্টারনেটের যুগেও মানুষ মধ্যযোগিও বরবড়তা করতে পিছপা হয় না। তেমনি এক ঘটনা ঘটল খোয়াই পহড়মুরা বৈদ্যনাথ চৌমুহনী এলাকায়।
ডাইনি অপবাদ দিয়ে ২৬ বছরের এক যুবতী গৃহবধূর হাত পুড়িয়ে দিল শশুর বাড়ির লোকজন। অসহায় ওই গৃহবধু ও স্বামী স্বরনজৎ ঝরা সুস্থবিচার চায় পুলিশের কাছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় বাইজাল বাড়ি থানার অন্তর্গত পূর্ব বেল ছড়া এলাকার বাসিন্দা সুনীল ঝরার মেয়ে সনজিতা ঝরা কে খোয়াই ধলাবিল পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রহর মুড়া এলাকার বাসিন্দা স্বরনজৎ ঝরা কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই সন্জিতা ঝড়া কে শশুর বাড়ির সদস্যরা অর্থাৎ গৃহবধুর স্বামী সরনজিৎ এর ভাই, ভাইয়ের বউ এবং বোনেরা সরনজিৎ এরৌ স্ত্রী সঞ্জিতা ঝড়া কে ডাইনি বলে সন্দেহ করতেন বিয়ের পর থেকেই। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পরিবারের লোকজন তাদের সমাজের উঝার কাছে সনজিৎ এর বউ এর ডাইনির বিষয়টি জানতে গেলে ওঝাও নাকি বলেছেন সঞ্জিতা ডাইনি। এর পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার দিন গৃহবধূ সন্জিতা ডাইনি কি না সেটা পরীক্ষার জন্য গৃহবধূর পিতা সুনীল ঝড়া কে ডাকেন শশুর বাড়ির লোকজন। যথারীতি গৃহবধুর পিতা ও স্বামীকে ঘরের বাইরে রেখে এবং দরজা বন্ধ করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মধ্যযুগীয় বর্বরতা অবলম্বন করে ডাইনি কিনা পরীক্ষা করতে।
শেষে গোটা ঘটনাটি বৃহস্পতিবার বিকেলে খোয়াই জেলা হাসপাতালে সাংবাদিকদের ক্যামেরা সামনে সঞ্জীতার পিতা সুনীল ঝরা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন। সুনীল ঝড়া বলেন আমাকে এবং মেয়ের জামাইকে ঘর থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে, ডাইনি পরীক্ষা করার জন্য একটি মোমবাতি জ্বালান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শশুর বাড়ির লোকের বক্তব্য যদি সনজিতা ডায়নি না হয় তাহলে মোমবাতির আগুনে হাত পুড়বে না। আর যদি ডাইনি হন তবে হাত পুড়ে যাবে এই বলে সনজিতার হাত জোড় করে দেবর অঞ্জন ঝরা, রঞ্জন ঝরা অন্জিৎ ঝরা মোমবাতির আগুনে ধরে রেখে দেন যতক্ষণ না পর্যন্ত মোমবাতি পুড়ে শেষ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত জোর করে হাতটি ধরে রাখেন। অন্যদিকে রঞ্জন ঝরা, অঞ্জন ঝরা আর আরেক দেবর অন্জিৎ ঝরা কাশর, ঘন্টা জোরে জোরে বাজাতে থাকেন। যাতে সন্জিতার আত্মচিৎকার বাইরের কোন মানুষ শুনতে না পান। ঘটনার পরবর্তীতে গৃহবধুর সন্জিতা তার পিতা সুনীল ঝরা স্থানীয় পঞ্চায়েতের তথাকথিত মুরুব্বিদের সমস্ত ঘটনাটি জানান। এই ঘটনাটি খোয়াই মহিলা থানায় জানান অসহায় পরিবারটি। এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন ভূমিকা নিয়েছে কিনা সেটা পরিষ্কার না ।তবে গোটা ঘটনাটি নিয়ে অসহায় পরিবারের লোকজনরা বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের দ্বারস্থ হন। এখন দেখার বিষয় এইরকম মধ্যযুগীয় বর্বরতার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কি ভূমিকা গ্রহণ করে এবং ঐ এলাকার পন্চায়েত কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে ঘটনার সাথে জড়িত ঐ ধরনের বিকৃত মস্তিষ্কের ওঝাদের বিরুদ্ধে।সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে অত্যাচারিতা গৃহবধু সন্জিতা ঝরা।