বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ১৮ই জুন…….বুধবার দুপুরে খোয়াই পশ্চিম সিঙ্গি ছাড়া জাতীয় সড়কের পাশে এ আর ডিডি প্রকল্পের অন্তর্গত খোয়াই জেলা পশু হাসপাতালের উদ্বোধন করলেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস। এই হাসপাতাল তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। বুধবার দুপুরে উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস। এছাড়া অনুষ্ঠানের মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যাণী রায়, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি শ্রীমতি অপর্ণা সিংহ রায়, খোয়াই পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান টিংকু ভট্টাচার্য, জিলা পরিষদের সদস্য অনুকূল দাস, খোয়াই পুর পরিষদের চেয়ারম্যান দেবাশীষ নাথ শর্মা ও দপ্তরের আধিকার নিরজ চঞ্চল সহ ওই এলাকার প্রধান উপপ্রধান সহ বিভিন্ন পশু পালকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদ্বোধক তথা মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন এই হাসপাতালটি জেলা পশু হাসপাতাল হিসেবে আগামী দিন থেকে কাজ করা শুরু করবে। তাতে করে এলাকার পশু পালকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । তিনি বলেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর তিনটি বিষয়ের উপর কাজ করে থাকে। প্রথমত রাজ্যের যত পশু পাখি আছে তাদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হয়। তাও আবার দুটি ভাগে। একটি প্রিউরিটিভ মেজারে এবং অন্যটি একুউরিটিভ মেঝারে। এর মানে পশু পালকদের পশুপাখিরা যাতে অসুস্থ না হয় এর জন্য সারা বছর বিভিন্ন ধরনের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে বিভিন্ন অসুস্থ পশুপাখিদের এই ধরনের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা করা হয় ওই দুটি মেজরের মাধ্যমে। একজন মানুষকে যেভাবে চিকিৎসা পরিচালনা দেওয়া হয় যেমন প্রথমে কোন রোগীকে আমরা সাব সেন্টারে নিয়ে যাই তারপর সেখান থেকে প্রাথমিক হাসপাতাল এরপর সেখান থেকে জেলা হাসপাতাল সেখানে রোগী ভালো না হলে রোগীকে রেফারেল হাসপাতাল আমরা যেমন প্রেরণ করি ঠিক একই প্রক্রিয়ায় এই ধরনের হাসপাতালে রোগ গ্রস্ত পশু পাখিদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। ওনার দপ্তর পশুপালন বিষয়ক এবং বিভিন্ন ফার্মাস দের সুবিধার্থে কথা চিন্তা করে অনেক ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তার মধ্যে আজ উদ্বোধন হলো জেলা পশু হাসপাতালের। তাতে করে এলাকার পশুপালকদের জন্য অনেকটা সুবিধা হয়ে গেছে। এখানে নানা ধরনের পশুর চিকিৎসা করা হবে। তাছাড়া আগামী দিন একটি গাভীকে কিভাবে সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো হয় সে ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে। তার জন্য একজন চিকিৎসক ফার্মেসি এক্সরে মেশিন, সোনোগ্রাফির মত বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হবে কিছুদিনের মধ্যে বলে তিনি জানান। তাছাড়া কিভাবে পশু পালন করতে হয় পশু পালনের মাধ্যমে গ্রামের পশু পালকদের উন্নতি কিভাবে সম্ভব তা নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। তার মধ্যে বিভিন্ন ফার্মিং যেমন শুকর, পোল্ট্রি ফার্ম, ফিশারির ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন গ্রামের পশুপালকরা তাদের আয় উন্নতি করতে পারে। এর জন্য কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকার মিলে উনার দপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করছে। কারণ গ্রামের উন্নতি হলে শহরের উন্নতি হবে, আর শহরের উন্নতি হলেন দেশের উন্নতি হবে। এই দিশাকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে গ্রামীন এলাকায় বসবাসকারী অর্থাৎ পশুপালকদের আর্থিক উন্নয়নের স্বার্থে ।অনেক ক্ষেত্রে এসব দিক দিয়ে রাজ্য অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। গ্রামকে উন্নত করতে হলে সেখানকার পশু পালকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যাতে করে তারা পোল্ট্রি ফার্মিং, শুকর পালন, গরু পালন, পোল্ট্রির ডিম উৎপাদন, মৎস্য চাষ, উন্নত মানের গাভীর পরিচর্যা করে দুধের মাধ্যমে নিজেদেরকে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে হবে। তাতে করে গ্রামীন এলাকার শিক্ষিত যুবকরা কর্মসংস্থানের পথ দেখবে। এছাড়া তিনি এও বলেন উন্নত মানে গাভী প্রজননের জন্য বিশেষ করে মহিলা দুধ প্রদানকারী গাভীর জন্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর থেকে স্ট্র এর মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন করিয়ে বেশি পরিমাণ দুধ দেয় সেই সমস্ত গাভীর উৎপাদন করা চলছে। তার জন্য প্রত্যেকটি পশু পালকদের ২৫ টাকা করে দিতে হয় সেই স্ট্র এর জন্য। এবং সেই গাভী থেকে উৎপাদিত গাভীর বাচ্চাটিকে পরিচর্যা করার জন্য বাৎসরিক সাড়ে চার হাজার টাকার উপর আর্থিক সাহায্য করা হয়ে থাকে। এই ধরনের অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর। তাছাড়া কোন শিক্ষিত বেকার যুবক যদি প্রাণিসম্পদের দপ্তরে জানিয়ে পশু পালন করতে চায় তার যত টাকা লোন নিতে হয় তার অর্ধেক টাকা সাবসিডি হিসেবে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সাহায্য করে থাকে। কোন বেকার যুবক যদি সেই ধরনের কোন পোলট্রি ,শুকর ইত্যাদি ফার্মিং করতে চায় তার জন্য যদি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা নিতে হয় সেই টাকার ৫০ লক্ষ টাকা সাবসিডি হিসেবে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর সেই বেনি ফিসারিকে দিয়ে থাকে। বাকি ৫০ লক্ষ টাকা, সেই বেনীফিসারিকে দিতে হবে। এই ধরনের অনেক প্রকল্প হাতে নিয়ে রেখেছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর বলে জানান মন্ত্রী শতাংশ দাস। এই ধরনের ব্যবসা করে অনেক বেকার যুবক-যুবতিরা তারা বছরে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে বলে তিনি জানান। দপ্তরের মাধ্যমে সবকিছু করা হলেও দেখা গেছে মৎস চাষ এবং দুধ উৎপাদনের দিক দিয়ে রাজ্য এখনো পিছিয়ে রয়েছে বলে তিনি জানান। যদিও এর জন্য পরিকল্পনা চলছে আগামী কিছুদিনের মধ্যে এসব ক্ষেত্রে রাজ্য স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী।এরপর মন্ত্রি সুধাংশু দাস হাসপাতালটি ঘুরে দেখেন ও ওখানকার চিকিৎসকদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং কিভাবে একটি গাভীকে ট্যাগ পড়ানো হয় সেটাও প্রত্যক্ষভাবে অনুধাবন করেন।