তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি :-
অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহের জেরে পারিবারিক কলহ এবং দাম্পত্য জীবনে অশান্তির বহু ঘটনার নজির রয়েছে। আবারো একই ধরনের ঘটনার স্বীকার হয়ে অকালে ফাঁসিতে মৃত্যু বরণ করে নেয় ১৭ বছর বয়সী এক নাবালিকা গৃহবধূ। মৃত ওই নাবালিকা গৃহবধুর নাম কোয়েল ঘোষ। ঘটনাটি ঘটে তেলিয়ামুড়া থানাধীন ডি.এম কলোনি এলাকায় শুক্রবার।
পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ মূলে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই স্বামীর বাড়িতে প্রতিনিয়ত কলহ সহ নানাহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল ১৭ বছর বয়সি ওই নাবালিকা গৃহবধূ কোয়েল ঘোষ। জানা যায়, আজ থেকে প্রায় দুই বছর পূর্বে রাজধানী আগরতলার আড়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা গোপাল বণিকের ছেলে গোবিন্দ বণিকের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্ব-ইচ্ছায় নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল ওই নাবালিকা কোয়েল ঘোষ। অভিযোগ, বিয়ের কিছু মাস পর থেকেই নিজ শ্বশুর গোপাল বণিক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নানা রকম মানসিক নির্যাতন শুরু করে নাবালিকা ওই গৃহবধুর উপর। তৎসঙ্গে, স্বামী গোবিন্দ বণিকও গৃহবধুর উপর মানসিক নির্যাতনের ধারা অব্যাহত রাখে। বেশ কয়েকদিন পূর্বে পরিবারে এই সকল ঝামেলার জেরে নিজ শ্বশুরবাড়ি থেকে তেলিয়ামুড়ার ডি.এম কলোনী স্থিত দাদুর বাড়িতে চলে আসে ওই নাবালিকা গৃহবধূ কোয়েল ঘোষ। মৃতার ভাইয়ের অভিযোগ, দাদুর বাড়িতে আসার পর শ্বশুরবাড়ি থেকে বারবার ওই গৃহবধূর উপর শ্বশুর বাড়ির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে চাপ সৃষ্টি করছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। গত বৃহস্পতিবার এনিয়ে ফোনে দীর্ঘক্ষন শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে ওই গৃহবধুকে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। পরবর্তীতে শুক্রবার দুপুর নাগাদ যখন মৃতার দাদু যখন নিজ কাজ শেষে বাড়ি ফিরে আসে তখন প্রত্যক্ষ করতে পারে, ঘরে একটি কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে রয়েছে কোয়েলের দেহ। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পেরে তৎক্ষণাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হলে এলাকার লোকজন ছুটে আসে এবং ঘটনার খবর দেয় তেলিয়ামুড়া থানায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং ইতিমধ্যেই আগরতলা থেকে একটি ফরেন্সিক টিম ঘটনার তদন্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে আসছে বলে জানানো হয় তেলিয়ামুড়া থানার একটি সূত্রে। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহটি উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে ময়নাতদন্ত করে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের লোকজনের হাতে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক নাবালিকা গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকা জুড়ে।।