স্বামী ও শাশুড়ির অত্যাচারে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মঘাতী হলেন রত্না বেগম(২২)নামে এক গৃহবধূ।পরে চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে শেষ রক্ষা হয়নি রত্নার।ঘটনাটি ঘটে বক্সনগর পঞ্চায়েত অন্তর্গত দক্ষিণপাড়া ২নং ওয়ার্ড এলাকায়।ঘটনার বিবরণে জানা যায় শুক্রবার দুপুর দুই ঘটিকার সময় বক্সনগর দক্ষিণপাড়া (2)নং ওয়ার্ড এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে দ্বীন ইসলাম ও তার মা মালঞ্চা বিবি রত্না বেগমকে প্রচন্ড ভাবে মারধর করে।এই মারধরের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বলে এলাকার সূত্রের খবর। কিন্তু শুক্রবারের মারধরের ঘটনা আর সহ্য করতে পারেনি রত্না।আর জীবনে নেমে আসে এক কালো অন্ধকারময় দিন।অর্থাৎ শ্বশুর বাড়ির মারধরের ঘটনার সহ্য করতে না পেরে রত্না বেগম সিলিং এর সাথে কাপড় দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে অভিমানে আত্মহত্যা করার ঝুঁকি নিয়ে যায় এবং বাড়িতেই কাপড় দিয়ে ফাঁস লাগায়।কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন রত্নাকে ঘরে গিয়ে দেখতে পায় ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে।তখন বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি রত্নাকে উদ্ধার করে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে।কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পায় এর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই ওই গৃহবধূকে আর বাঁচানো যায়নি।এই নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে হয়েছিল গোলযোগ। তৎক্ষণাৎ ছুটে আসে আত্মঘাতী গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন।স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে থানায় মামলা করবে বলে জানায় আত্মঘাতি গৃহবধুর পরিবার পরিজনেরা। জানা যায় আত্মঘাতী গৃহবধূ এলাকার সেলফ হেলফ গ্রুপের লিডারও ছিলেন। গ্রামের শিক্ষিত মহিলাদের মধ্যে তিনি ছিলেনএকজন।তার পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।বিয়ের দু’বছর পর থেকেই স্বামী বিদেশে থাকাকালীন সময়ে তার শাশুড়ি তার উপর নির্যাতন অত্যাচার চালাত। জানা যায় গত দু’মাস আগে স্বামী দ্বীন ইসলাম বিদেশ থেকে বাড়িতে আসে।তারপর থেকে তার উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।অত্যাচার করতে করতে গতকাল রাতেও নাকি স্বামী দ্বীন ইসলাম তার উপর প্রচন্ড মারধর করে।রাতভর অত্যাচারের পর সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করে ওই গৃহবধূ। রাত না পোহাতেই আবার শুরু হয় অত্যাচার।স্বামী দ্বীন ইসলাম নিজেই স্বীকারোক্তি দেন নামাজে যাওয়ার আগেও নাকি তার স্ত্রীকে দুটি থাপ্পড় মেরে যায়।নামাজ থেকে এসে আবার তাকে অত্যাচার চালাতে থাকে।আর এই ঘটনার জেরেই গৃহবধূ তার নিজ ঘরেই সিলিং এর সাথে কাপড় দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নেন। অপরদিকে গৃহবধুর বাপের বাড়ির অভিযোগ তাদের মেয়েকে প্রথমে প্রচন্ড মারধর করে পরে গলায় টিপে হত্যা করে ফাস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়।এলাকার লোকজনেরও দাবি গত কয়েক বছর ধরে এই গৃহবধূকে শাশুড়ির দ্বারা নির্যাতন হতে হচ্ছে।ঘটনার পরপর শাশুড়ি ও স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।পরবর্তী সময়ে কলমচৌড়া থানার পুলিশ স্বামী দ্বীন ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।অপরদিকে স্ত্রী রত্না বেগম বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মর্গে রয়েছে। আগামীকাল তার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার পর পরিবার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে খবর।এলাকাবাসীর অভিযোগ চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও প্রায় ২০ মিনিট পরে আত্মঘাতী মহিলাকে চিকিৎসা করার জন্য যায়।শেষ রক্ষা হয়নি রত্নার।এখন দেখার বিষয় পুলিশি তদন্তে ঘটনাটি কোন দিকে মোর নেয়।