আজ থেকে শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী খার্চী পূজা

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী পূজা ও মেলা উৎসব খার্চী। আজ খয়ের পুরের চৌদ্দ দেবতার মন্দিরে এই পূজার উদ্বোধন করেন জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তীসহ অন্যান্যরা। বলা চলে কয়েক যুগ ধরে এ মন্দিরে খার্চি পূজা হয়ে আসছে। মন্দিরে মোট ১৪ জন দেব-দেবীর প্রতিমা থাকায় একে চতুর্দশ দেবতা মন্দির বলা হয়। এরা সকলে প্রাচীন উপজাতি রাজাদের গৃহদেবতা। এখানে প্রতিবছর বাৎসরিক পূজা হয়ে আসছে। পরবর্তী সময় শুরু হয় মেলা। এই মেলায় প্রতিবছর ত্রিপুরা ছাড়াও উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্য এবং কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গ থেকেও লোক আসেন। এই মন্দিরের কিছু নিয়ম রয়েছে। পূজার দিনগুলোতেই ১৪ জন দেব-দেবীদের দেখার সুযোগ পান দর্শনার্থীরা। আর বছরের বাকি দিনগুলোতে দেব-দেবীদের সিন্দুকের ভেতর তালা বন্দি করে রাখা হয় মন্দিরের সুরক্ষিত স্থানে। মেলায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। বিগত কয়েক বছর করোণা মহামারীর দরুন এই পূজা ও মেলার আনন্দে মেতে উঠা থেকে বঞ্চিত থাকলেও এ বছর করোণা মহামারীর প্রভাব কিছুটা কম থাকায় আয়োজক মন্ডলীর পক্ষ থেকে এই মেলার আয়োজন করা হয় এবং এটাকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ পরিলক্ষিত করা যায়, শুধু তাই নয় মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মেলা প্রাঙ্গণে ১৮টি স্থানে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। পুলিশ, টিএসআর বাহিনীর পাশাপাশি ১শ জন সিভিল ডিফেন্স, ১শ জন স্কাউটস অ্যান্ড গাইড কর্মী, ১শ জন স্বেচ্ছাসেবী কর্মীসহ সাদা পোশাকের কর্মী নিয়োগ করা হয়। যেকোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এড়াতে মেলা প্রাঙ্গণে অস্থায়ী অগ্নিনির্বাপণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া রয়েছে মেলায় আসা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের জন্য চিকিৎসাকেন্দ্র এবং জরুরি প্রয়োজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও। এদিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মন্দিরে পুজো দিতে আসা দর্শনার্থীরা দীর্ঘদিন পর দেবতাদের পুজো দিতে পেরে খুশি ব্যক্ত করেন। এদিন খার্চী মেলাকে কেন্দ্র করে মন্দির প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়।