জনসাধারণের মনের ভাব প্রকাশ করার অধিকারকে সুনিশ্চিত করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার । শুধু মনের ভাব প্রকাশ নয় রাজ্যের জনসাধারণকে যথার্থ সম্মানও দিয়েছে এই সরকার । সরকার জনগণের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে বদ্ধপরিকর । আজ মোহনপুর মহকুমার তারাপুর হাই স্কুল মাঠে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । মুখ্যমন্ত্রী আজ প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করেও অনুষ্ঠানে সমবেত অগণিত মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়ে তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা শুনেন । মোহনপুরে কিষাণ সম্মন নিধির সুবিধাভোগী ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা – গ্রামীণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , বর্তমান রাজ্য সরকার জনতার সরকার । জনগণের সার্বিক কল্যাণো গুচ্ছ প্রকল্প রূপায়ণ করছে এই সরকার । তিনি বলেন , বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে জনসাধারণ যেসকল সুবিধা ভোগ করছেন , তা মনে রাখার পাশাপাশি বিগত দিনে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সেটাকেও মনে রাখা দরকার । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , প্রধানমন্ত্রীর প্রদর্শিত পথেই বর্তমান রাজ্য সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়িত করছে । করোনা অতিমারীর সময়ে প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে টিকাকরণের মাধ্যমে মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্নভাবে সুবিধা প্রদান করছেন । প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর , জলজীবন মিশনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ , উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস সংযোগ , সৌভাগ্য যোজনায় বিদ্যুৎ , গরীবদের জন্য বিনামূল্যে চাল , রাস্তাঘাট সহ জনকল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে । এছাড়াও জাতীয় সড়ক উন্নয়ন , এমবিবি বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন চালু করা , বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে স্কুলকে সিবিএসসি’র আওতায় আনা সহ পরিকাঠামো উন্নয়নে সর্বক্ষেত্রে সুবিধা প্রদান করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় মোহনপুর বিধানসভা এলাকায় ৮ হাজারের বেশী সুবিধাভোগী পরিবার ঘর পেয়েছেন । 2021-22 অর্থবছরেই প্রায় ৪৫০০ ঘর এই এলাকায় মঞ্জুর হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ২০১৯ সালে জলজীবন মিশন শুরু হয়েছে । এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রত্যেকটি বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে । তবে বর্তমান রাজ্য সরকার প্রতিটি বাড়িতে বিনামূল্যে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে অনুরূপ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল । এক্ষেত্রে তিনি গুরুত্ব আরোপ করে বলেন , সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প সমূহের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যেমন সরকারের দায়িত্ব তেমনি এই প্রকল্পগুলি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে । ২ য় পাতায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন , প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে ৬০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে । মোহনপুর অঞ্চলে প্রায় ২৫০০ জন কৃষক প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন । এছাড়াও বর্গাদারদের সুবিধার্থেও প্রকল্প রূপায়িত করছে রাজ্য সরকার । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , বর্তমান সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সামাজিক ভাতা বৃদ্ধি করেছে এবং আগামী দুর্গাপূজার আগে তা ২০০০ টাকা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । তিনি আরও বলেন , হোমগার্ডদের বেতন ৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮ হাজার টাকা করা হয়েছে । টিএসআরদের চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৬০ বছর করা সহ সরকারি কর্মচারিদের এডহক ভিত্তিতে পদন্নোতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার । রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসারে রাজ্য সরকার কর্তৃক রূপায়িত বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রকল্পসমূহের ফলে শিক্ষার্থীরা যেসব সুবিধা পাচ্ছে সেই বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন । অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ , কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন । ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় । মতবিনিময় অনুষ্ঠানপর্ব শেষে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ও জন সুবিধাভোগীর বাড়ি পরিদর্শন করেন । মুখ্যমন্ত্রী তাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রত্যক্ষ করেন । মুখ্যমন্ত্রী এদিন একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন ।



