Friday, October 18, 2024
বাড়িখবররাজ্যভারত - বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের উদ্বোধন এ উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন পর্যটন শিল্পকে আরও...

ভারত – বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের উদ্বোধন এ উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে

পর্যটনশিল্প শুধু বিনোদনের জন্যই নয় , শিক্ষার প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে করে । রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে । পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে । রাজধানীর উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে আজ সন্ধ্যায় ভারত – বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের উদ্বোধন করে একথা বলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা । তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই পর্যটন উৎসব শেষ হবে আগামী ১৯ এপ্রিল । তিনদিনের এই উৎসবে সাংস্কৃতিক কর্মসূচি ছাড়াও রয়েছে আরও বিভিন্ন কর্মসূচি । উদ্বোধকের বক্তব্যে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন , ত্রিপুরার সাথে সবদিক দিয়ে বাংলাদেশের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে । সাংস্কৃতিক কিংবা সংগীত ছাড়াও ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মানুষের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে । বর্তমান সরকার ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায় । ত্রিপুরাতে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অনেক জায়গা রয়েছে । এই প্রসঙ্গে ছবিমুড়া , জম্পুই হিল সহ রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী । তিনি বিশেষভাবে দু’দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে সম্পর্কের উন্নতির কথা তুলে ধরেন । ভৌগলিক দিক দিয়েই নয় , বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে ত্রিপুরার । মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার জনসাধারণের বিশাল ভূমিকা ছিল । তিনি বলেন , এই রাজ্য ছোট হলেও মানুষের মনটা বিশাল । আগামীতেও ত্রিপুরায় বাংলাদেশের মানুষকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি । ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার আহ্বান জানান উপমুখ্যমন্ত্রী । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে পর্যটনমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন , ভারতবর্ষ বহু সংস্কৃতি ভাবাপন্ন মানুষের দেশ । এই দেশ কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির পরম্পরা নিয়ে চলছে । বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের অর্থনীতি পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে চলছে । আগামী কিছু দিনের মধ্যে ত্রিপুরাতে নারকেলকুঞ্জ একটি অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হতে চলেছে । ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সেখানে হ্যালিপেডের উদ্বোধন হয়েছে । এর পাশাপাশি আগামীতে সাব্রুমের ফেনী নদীর ব্রীজ বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার সংযুক্তি করতে চলেছে । এর মধ্যদিয়ে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে । এতে শুধু ত্রিপুরা নয় বাংলাদেশও লাভবান হবে । এছাড়া দাউদকান্দি দিয়ে ত্রিপুরার সাথে যুক্ত হতে চলেছে বাংলাদেশ । আখাউড়া নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত দিয়েও দু’দেশের মধ্যে রেল পরিষেবার সংযোগ হতে চলেছে । অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের সাংসদ তথা কমটি অন এস্টিমেইটসের চেয়ারম্যান ড . মহম্মদ আব্দুস সহিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার মানুষের সার্বিক সহায়তার কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন । তিনি বলেন , ভারত – বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে । এই উৎসব দু’দেশের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে । তিনি বলেন , অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পর্যটন শিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । * ২ য় পাতায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন , ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের আত্মিক যোগাযোগ রয়েছে । পর্যটন শুধু আর্থিক দিক থেকে নয় , সংস্কৃতিকেও বিকশিত করে । এর মধ্যমে সংস্কৃতির নিজস্বতা আরও পরিব্যপ্ত হয় । পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্কৃতির সুফলও তৈরি হয় । এর মধ্যদিয়ে এই রাজ্যের কৃষ্টি সংস্কৃতিকে বিদেশেও তুলে ধরা সম্ভব হবে । রাজ্য সরকারও পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরার জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । তিন দিনব্যাপী ভারত – বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গল উপজেলার চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় , ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে , বাংলাদেশের আগরতলাস্থিত এসিস্টেন্ট হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ , উত্তর – পূর্বাঞ্চলের পর্যটন মন্ত্রকের আঞ্চলিক অধিকর্তা শঙ্খ শুভ্র দেববর্মণ সহ বিশিষ্ট জনেরা । এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিদল সহ পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের ট্যুর অপারেটরগন । এছাড়া অংশ নিয়েছেন হোটেল মালিক , পর্যটন আধিকারিক , স্বাধীনতা সংগ্রামী , কবি , শিল্পী , সাহিত্যিক , বুদ্ধিজীবী সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ । উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রকমারি খাদ্য উৎসবের আয়োজন করা হয় । আগামীকাল বাংলাদেশ , পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর – পূর্বের রাজ্যগুলি ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখানো হবে । ১৯ এপ্রিল শেষ দিনে গীতাঞ্জলি পর্যটন আবাসের মিলনায়তনে দু’দেশের পর্যটন বিষয়ক আদান প্রদানের ও ব্যবসায়িক বিষয়াদি নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে মতবিনিময় সভা ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

two × 5 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য