Tuesday, December 23, 2025
বাড়িখবররাজ্যমুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শিলান্যাস হলো খোয়াই জেলা হাসপাতাল ও নেশা মুক্তি কেন্দ্রের...

মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শিলান্যাস হলো খোয়াই জেলা হাসপাতাল ও নেশা মুক্তি কেন্দ্রের তৎসহ ডঃ স্যামাপ্রস মুখার্জির আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন অনুষ্ঠান সহ ১১ টা প্রকল্পের উদ্বোধন সম্পন্য হয়।

বাসুদেব ভট্টাচার্যী খোয়াই ২৩শে ডিসেম্বর.……কাজের কোন বিকল্প নেই,মানুষের জন্য কাজ করার নামই হলো রাজনীতি এই কথাগুলো বলেই শুরু করলেন উনার বক্তব্য । তিনি এও বলেন উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রে সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতির কোন স্থান নেই।প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনের মধ্য দিয়েই রাজ্যের সরকার কাজ করে চলেছে।বলে জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা।মঙ্গলবার খোয়াইয়ের ধলাবিল এলাকায় খোয়াই জেলা হাসপাতালের নতুন পাকা ভবন ও পঞ্চাশ শয্যার নেশা মুক্তি কেন্দ্রের শিলান্যাস করে তিনি এই বক্তব্য রাখছিলেন।এই দিন একই মঞ্চ থেকে রিমোট টিপে ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই অনুষ্ঠানে মঞ্চে ওঠার আগে মুখ্যমন্ত্রী অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে ধর্মীয় মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে ভূমি পূজন পর্ব সম্পন্ন করেন।এই দিনের পুরো অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার সরকারী মূখ্য সচেতক কল্যানী সাহা রায়, বিধায়ক পিনাকী দাসচৌধুরী , খোয়াই এর বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি অপর্ণা সিংহরায় , খোয়াই পুর পরিষদের চেয়ারম্যান দেবাশিস নাথ শর্মা, রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে, জেলা শাসক রজত পন্থ। জেলা পুলিশ সুপার রানাদিত্ত দাস সহ অন্যান্যরা।এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, সময় যতো এগোচ্ছে দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রেই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে।সরকার,বিভিন্ন স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, আমলা অফিসার ও তৃণমূল স্তরের কর্মীদের নিয়ে এই সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কাজ চলছে।সরকারের ভুলভ্রান্তি হতে পারে।সবাইকে নিয়েই এই অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি সংশোধন করেই কাজ চলছে।রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, পানীয় জল, সেচ, নিকাশী ব্যবস্থা , আবাসন, বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ সহ সর্বক্ষেত্রেই রাজ্যের মধ্যে উন্নয়নের দিগন্তজোড়া কর্মযজ্ঞ চলছে।ডাবল ইঞ্জিনের সরকার চলছে এখানে।মানুষের কাছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসা সহ সব ধরনের সার্বিক পরিষেবা প্রয়োজনীয়তার নিরিখে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার কাজে আমরা বদ্ধপরিকর।মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার সুযোগ নেই।গৃহহীনে গৃহ,তৃষ্ণার্ত মানুষকে পানীয় জল , যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন রাজনীতি থাকবে সেই প্রশ্নটাই তুললেন আমরা তাতে মোটেই প্রশ্রয় দিই না।বিরোধীরা উন্নয়ন কাজ নিয়ে শুধু অহেতুক বিরোধীতা করে চলেছে।চোখে না দেখে শুধু ওরা অনর্থক সমালোচনা করে চলেছে।তাদেরকে বলবো নিজের চোখে দেখে সমালোচনা করুন।উন্নয়ন কাজগুলো নিজের চোখে দেখে আসুন।আমরা কিন্তু উন্নয়নের কাজে বিরোধীদেরও সার্বিক সহায়তা ও সুপরামর্শ চাই।


মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চল ও দেশের মধ্যে বিরল নজির স্থাপন করেছে ত্রিপুরা।উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এক বাক্যে এই বিষয়টা স্বীকার করেন।স্বল্প সময়ের মধ্যে দিগন্ত জোড়া উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে ত্রিপুরায়।ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অষ্টলক্ষীর সার্বিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তদারকীর দায়িত্বও এখন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সঁপে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সহ কেন্দ্রের সরকার।ডোনার মন্ত্রক ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এই উত্তর পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ দেখভালের জন্য দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন।


তিনি বলেন,প্রাণী সম্পদ বিকাশ, পর্য্যটন , বন সৃজন ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে কাজ চলছে।কিন্তু মনে রাখতে হবে একটা কাজ করা খুব সহজ।অর্থের সংস্থান থাকলে কাজটা সম্পন্ন করা খুব একটা কঠিন কিছু নয়।কিন্তু উন্নয়নের পরিকাঠামোকে সযত্নে রক্ষা করা ও দেখভাল করার কাজটা কঠিন।সাধারণ মানুষকেই পরিকাঠামো ‌গুলো দেখে রাখতে হবে।তিনি আরো বলেন, রাজ্যের সরকার প্রতি বছরেই তার বাজেট বৃদ্ধি করে চলেছে।গত বছর যেখানে আমাদের রাজ্যের বাজেটের পরিমাণ ছিল সাতাশ হাজার কোটি টাকা।এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে বত্রিশ হাজার কোটি টাকা।পরিকাঠামোর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নিজেও গুরুত্ব দিয়েছেন।আমরা রাজ্যের সরকারও এতে গুরুত্ব দিয়েছি।রাজ্যে এখন শান্তি শৃঙ্খলা বিরাজ করছে।সন্ত্রাসবাদী সমস্যা নেই।ফলে রাজ্যে এখন বহির্রাজ্যের অনেকেই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে চলতি বছরে।তার মধ্যে পনেরো হাজার কোটি টাকাই ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে যে নতুন জেলা হাসপাতাল ও নেশা মুক্তি কেন্দ্রসহ যে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও শিলান্যাস হচ্ছে তার জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে মোট একশো তেরো কোটি টাকা।এর মধ্যে তিপ্পান্ন কোটি টাকা দিচ্ছে কেন্দ্রের সরকার।বাকী টাকার সংস্থান করা হচ্ছে রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে।কেন্দ্রের তিপ্পান্ন কোটির মধ্যে এখন পর্যন্ত আটচল্লিশ কোটি টাকা এসে গেছে।রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।আমরা আমলা অফিসার ও সরকারী কর্মীদের জন্য সরকারী ভাবে কোয়ার্টার কমপ্লেক্স নির্মাণ করে দিচ্ছি।জেলা হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের সাথে সাথেই আমরা চিকিৎসকদের জন্য কোয়ার্টার কমপ্লেক্সও নির্মাণ করে দেবো।স্বাস্থ্য পরিষেবার বিভিন্ন উপকরণাদির ব্যবস্থা করার জন্য এখন পর্যন্ত দশ কোটি টাকা রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছ এই দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বৈদ্যুতিক স্যুইচ টিপে খোয়াই জেলায় আরো বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন।যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ধলাবিলে জেলা টি বি সেন্টার, জেলা শাসকের কোয়ার্টার কমপ্লেক্স, তেলিয়ামুড়ায় ডি সি এম ও বি ডি ও কোয়ার্টার কমপ্লেক্স, কল্যানপুরের ডি সি এম অফিস, খোয়াই দূর্গানগরের মোটর স্ট্যাণ্ডে পিঙ্ক টয়লেট, কল্যানপুর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের পোর্টাল ইত্যাদি।এর পর খোয়াই পুর পরিষদের উদ্যোগে তবলা চৌমুহনীতে তৈরি ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর আবক্ষ মর্মর মূর্তির উৎভোধন করেন।এর পর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ফুড পার্ক ও সেল্ফি পয়েন্টের উৎভোধন করেন এবং সেখানে সবার সাথে সেল্ফি তুলেন এবং পার্কটি পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে ফিরে চলে যান বাইজাল বাড়ি স্কুল মাঠে মহিলা মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত মা বোন দের নিয়ে আয়োজিত জন জাতি দিদি দের মহাসভায় দলিয় কর্ম সুচিতে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, মিনি মজুমদার , রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক শ্রীমতি কল্যাণী সাহা রায়, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী বিজেপি দলের রাজ্য সভাপতি রাজিব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

two × five =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য