সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনার জন্য রাজ্যের সব জেলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ এবং ব্যবস্থার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন পরিবহণমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। আজ সচিবালয়ের ২নং কনফারেন্স হলে ১৭তম স্টেট রোড সেফটি কাউন্সিলের সভায় পরিবহণমন্ত্রী রাজ্যের সড়ক দুর্ঘটনার সাম্প্রতিক তথ্য এবং জেলা রোড সেফটি কাউন্সিলের গৃহীত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন। মূলত সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ আদালতের নীতি নির্দেশিকা রূপায়ণ, নগদহীন চিকিৎসা পরিষেবা কার্যক্রম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে একমাসব্যাপী জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা মাস উদযাপনের বিষয়সমূহ নিয়ে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে জেলাস্তরে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং ভবিষ্যতে রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তার খসড়া তৈরি করার জন্য পরিবহণমন্ত্রী জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন। বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জাতীয় সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে গুণগতমান বজায় রাখা, পথচারীদের জন্য নির্দিষ্ট জোন, ফুটপাথ তৈরি করা এবং যথাযথ নিকাশি ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য বৈঠকে উপস্থিত এন.এইচ.আই.ডি.সি.এল.-এর কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করির কাছেও চিঠি দেবেন বলে বৈঠকে উল্লেখ করেন।
সড়ক নিরাপত্তা, ক্রেতা সুরক্ষা এবং নেশার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুল এবং কলেজস্তরের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এবছরও ‘জাগৃতি’ শীর্ষক এক কর্মসূচি রাজ্যে আয়োজন করা হবে বলে বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জানিয়েছেন। তিনি গত বছর প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যাপক সাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবছরও প্রতিটি জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজকে যুক্ত করে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরজন্য পরিবহণ দপ্তর, খাদ্য দপ্তর এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে যুক্ত করে এই জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের রূপরেখা প্রণয়ন করতে তিনি পরামর্শ দেন।
রাজ্যের প্রত্যেক জেলা ও মহকুমায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যুক্ত করে আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা মাস উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পরিবহণমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের বলেন। বৈঠকে পথ দুর্ঘটনা হ্রাস করার ক্ষেত্রে জনসচেতনতার পাশাপাশি আইনি নজরদারি ব্যবস্থা কঠোর করা এবং জরিমানা আদায় সহ ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্ড করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। রোড সেফটি কাউন্সিলের আজকের বৈঠকে রাজ্যের ৮ জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারগণ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন এবং এই বিষয়ে জেলার সর্বশেষ তথ্যাবলি তুলে ধরেন। পরিবহণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী স্টেট রোড সেফটি কাউন্সিলের বিস্তারিত কর্মসূচি সভায় সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব অপূর্ব রায়, খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব দেবপ্রিয় বর্ধন, রাজ্য পুলিশের আই.জি.পি. (আইন শৃঙ্খলা) মঞ্চাক ইপার, ট্রাফিক দপ্তরের সুপার কান্তা জাঙ্গির, খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা সুমিত লোধ, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা অনিমেষ দেববর্মা, পরিবহণ দপ্তরের যুগ্ম সচিব মৈত্রী দেবনাথ, পূর্ত দপ্তর এবং এন.এইচ.আই.ডি.সি.এল.-এর প্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন আধিকারিকবৃন্দ।



