Sunday, December 21, 2025
বাড়িখবররাজ্যসবার মধ্যেই মেধা রয়েছে, সেই মেধাকে অধ্যাবসায়, পরিচর্যা, পরিশ্রম এবং চেষ্টার মাধ্যমে...

সবার মধ্যেই মেধা রয়েছে, সেই মেধাকে অধ্যাবসায়, পরিচর্যা, পরিশ্রম এবং চেষ্টার মাধ্যমে বিকশিত করতে হবে

রাজ্যের একমাত্র সরকারি ডেন্টাল কলেজ স্থাপন রাজ্যবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা ও স্বপ্ন পূরণের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। রাজ্যের সরকারি ডেন্টাল কলেজটি প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের তৃতীয় প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য, একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পুরোনো আই.জি.এম. হাসপাতাল ভবনের ভূমিকম্প প্রতিরোধকমূলক সংস্কার ও পুনরুদ্ধার কাজের উদ্বোধন করেন এবং পরবর্তী সময় আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও আই.জি.এম. হাসপাতালের নতুন ভবনের ভূমিপূজন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই সরকারি ডেন্টাল কলেজের যাত্রা শুরু হয় ২০২৩ সালে। বর্তমান রাজ্য সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিক সহযোগিতায় এই কলেজ সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা উন্নত দন্ত চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে এবং রাজ্যবাসী উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিগত দিনের অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। এর আগে কোনও সরকার এত অল্প সময়ে এরকম কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বর্তমান মানুষের চাহিদা, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন সবকিছু বিচার করে রাজ্যের বর্তমান সরকার অতি অল্প সময়ে ডেন্টাল কলেজ শুরু করেছে। সারা দেশব্যাপী এই ডেন্টাল কলেজ আজ সমাদৃত। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজটিতে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে বি.ডি.এস. কোর্সে পঠনপাঠন শুরু হয়। বর্তমানে আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৩টি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সরকার রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সংস্কারমূলক কাজেও সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুরোনো আই.জি.এম. হাসপাতালের সংস্কার করা হবে কিন্তু তার ঐতিহাসিক মাহাত্ম্যকে রক্ষা করে। এই সংস্কার কাজ এবং নতুন ভবন নির্মাণ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোনও একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা দিবস ঐ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকা সবার কাছে খুবই উল্লেখযোগ্য এবং গর্বের দিন। তবে প্রতিষ্ঠানের গর্বকে ধরে রাখার দায়িত্ব ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা সবার রয়েছে। সবার গঠনমূলক কর্মসূচি এবং চিন্তাধারার মাধ্যমেই কলেজের মর্যাদা উচ্চতার শিখর অর্জন করতে পারবে। মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবার মধ্যেই মেধা রয়েছে, সেই মেধাকে অধ্যাবসায়, পরিচর্যা, পরিশ্রম এবং চেষ্টার মাধ্যমে বিকশিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের কাছে বৈষম্যের কোনও স্থান নেই, চিকিৎসা পরিষেবাকে সবার কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেবার মানসিকতা নিয়ে চলা প্রয়োজন। একজন চিকিৎসকের সমাজের প্রতি অনেক দায়িত্ব রয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকারও স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ সুবিধাগুলি সমাজের সকলস্তরের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইনি ব্যবস্থা সমস্ত ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে রাজ্য আগামীদিনে নতুন ত্রিপুরা গড়ে উঠার পথে অগ্রসর হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, রাজ্য সরকার প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে চলছে। রাজ্যের মানুষ বিগত দিনের তুলনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হচ্ছেন। বর্তমানে ত্রিপুরাতে প্রায় ৮২ শতাংশ মানুষ সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করছেন। যা উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতিফলন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষা ডা. শালু রাই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা দেবাশ্রী দেববর্মা, মেডিক্যাল এডুকেশনের অধিকর্তা এইচ. পি. শর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, রাজ্য স্বাস্থ্য মিশনের মিশন ডাইরেক্টর সাজু বাহিদ এ.। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক ইনচার্জ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. পূজা দেবনাথ।

অনুষ্ঠানে ডেন্টাল কলেজের বিভিন্ন বর্ষে সাফল্য অর্জনকারী ছাত্রছাত্রীদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী স্মারক উপহার এবং শংসাপত্র তুলে দেন। উল্লেখ্য, ভারত সরকারের ডোনার মন্ত্রকের অধীনে পি.এম. ডিভাইন স্কিমে এই আধুনিক ডেন্টাল কলেজ তৈরি করা হবে। এরজন্য মোট ব্যয় হবে ২০২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় একটি একাডেমিক ও প্রশাসনিক ব্লক নির্মাণের পাশাপাশি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বয়েজ ও গার্লস হোস্টেল গড়ে তোলা হবে। কলেজে ইউ.জি. ও পি.জি. ক্লিনিং, রেডিওলজি ইউনিট, ফার্মেসি, সেমিনার হল, অডিটোরিয়াম সহ আধুনিক শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা থাকবে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

seventeen − eleven =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য