Friday, November 14, 2025
বাড়িখবররাজ্যবন্দে মাতরম গানের ১৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন আমাদের আগামী প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম বোধকে...

বন্দে মাতরম গানের ১৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন আমাদের আগামী প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম বোধকে জাগ্রত করার নতুন অঙ্গীকার: মুখ্যমন্ত্রী

‘বন্দে মাতরম’ গান ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের মানুষের স্বাধীনতার আন্দোলনে মুক্তির মন্ত্র হিসেবে পরিগণিত হয়। আসমুদ্র হিমাচল ভারতীয়দের মধ্যে দেশাত্মবোধের ভাবনার উন্মেষে ‘বন্দে মাতরম’ গানের অবদান অবিস্মরণীয়। আজ সচিবালয় প্রাঙ্গণে বন্দেমাতরম গান রচনার ১৫০ বছর পূর্তির রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ভারতমাতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর এই গানের প্রেক্ষাপট নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ১৫০ জন শিল্পী বন্দে মাতরম গানটি পরিবেশন করেন। বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠান সচিবালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

অনুষ্ঠানের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা বলেন, গত ১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০তম বর্ষপূর্তি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে এই গানটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্মরণ করে দেশ জুড়ে এর ১৫০ বছর পূর্তি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টে পাধ্যায় ‘বন্দে মাতরম’ রচনা করেন। ১৮৯৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে এই গানটি গেয়ে শোনান। ধীরে ধীরে এই গানের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাছে মুক্তির মন্ত্র হিসাবে পরিণত হয়। ১৯০৫ সালে এই গানটি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। আজাদ-হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্রের সময়েও ‘বন্দে মাতরম’ গানটি গাওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি স্বাধীন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ গণ পরিষদে বলেছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘বন্দে মাতরম’-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে ‘বন্দে মাতরম’-ও জাতীয় সঙ্গীত জন-গণ-মন এর সমান মর্যাদা পাবে এবং সমানভাবে সম্মানিত হবে।

মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা এই অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বলেন, ৭ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে ৭ নভেম্বর, ২০২৬ পর্যন্ত সমগ্র দেশজুড়ে চারটি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘বন্দেমাতরম’ গান রচনার ১৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আজ রাজ্যের সব কয়টি জেলা সদর, সব মহকুমা ও ব্লকের পাশাপাশি সব পুর ও শহুরে স্থানীয় সংস্থাগুলোতেও ‘বন্দেমাতরম’ গান রচনার ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানটি উদ্যাপিত হচ্ছে। ‘বন্দেমাতরম’ এর তাৎপর্য সর্বস্তরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা বছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বন্দেমাতরম’ এর জন্য বিশেষ সমাবেশ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, পোষ্টার তৈরী, ক্যুইজ ইত্যাদি কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে। রাজ্য পুলিশের ব্যান্ডের মাধ্যমে জনবহুল স্থানে ‘বন্দেমাতরম’ এবং অন্যান্য দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এছাড়া ‘বন্দেমাতরম’-এর উপর প্রদর্শনী, মশাল দৌড়ের আয়োজন, বৃক্ষরোপন অভিযান, যুব ম্যারাথন এবং স্কুল কলেজ, এন সি সি ইত্যাদি ব্যান্ড দ্বারা ক্যাম্পাসে ‘বন্দেমাতরম’ সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই উদ্যাপন আমাদের আগামী প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম বোধকে জাগ্রত করার এক নতুন অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বন্দেমাতরম’ গান রচনার ১৫০ বছর পূর্তি উৎসব উদযাপনের আহ্বান সকল ভারতবাসীকে দেশাত্মবোধের ভাবনায় নতুনভাবে উদ্বেলিত করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ বন্দেমাতরম গান নিয়ে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে আয়োজিত একটি চিত্র প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী সহ রাজ্য প্রশাসনের প্রধান সচিব, সচিব, অধিকর্তাসহ সর্বস্তরের আধিকারিকগণ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

19 − ten =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য