Saturday, October 18, 2025
বাড়িখবররাজ্যএমবিবি কলেজ লেকের কৃত্রিম সৌন্দর্যায়ন পরিবেশে প্রভাব ফেলবে

এমবিবি কলেজ লেকের কৃত্রিম সৌন্দর্যায়ন পরিবেশে প্রভাব ফেলবে

কৃত্রিম সৌন্দর্যায়নের ফলে বিনষ্ট হয়েছে এমবিবি কলেজ লেকের জৈব বৈচিত্র। আগরতলা পৌর নিগম সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এমনটা করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাদুর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখিদের । শনিবার রাজ্য সরকারের ল্যান্ড এন্ড রেভিনিউ দপ্তর এর সমীক্ষকরা এমবিবি কলেজ লেক পরিদর্শনে গিয়ে এমনটাই জানান।

আগরতলা স্মার্ট সিটি প্রকল্পে এমবিবি কলেজের জলাশয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহা এর উদ্বোধন করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায় কে ধ্বংস করে কৃত্রিম উপায়ে গড়া এই সৌন্দর্যায়ন নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।মূলত আগরতলা স্মার্ট সিটি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের অবৈজ্ঞানিক কান্ড কারখানা নিয়েই বিভিন্ন মহলের এই প্রশ্ন ।এর জন্য ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনে একটি মামলাও করা হয় ।এই মামলার ফলে মানবাধিকার কমিশন থেকে বিভিন্ন দপ্তরে নোটিশ জারি করা হয় ।এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাজ্য সরকারের ল্যান্ড এন্ড রেভিনিউ দপ্তরের এক সমীিক্ষক দল সংশ্লিষ্ট লেক পরিদর্শনে যান। সমিক্ষক দলের সদস্যরা এমবিবি কলেজ লেক এর এই কৃত্রিম উন্নয়ন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন ।এক সদস্য জানান ,এমবিবি কলেজ লেকের এই সুন্দর্যায়নের জন্য বিভিন্ন দপ্তর সহ আগরতলা পৌর নিগমের কোন অনুমতি  নেওয়া হয়নি ।এই কৃত্রিম সৌন্দর্যায়নের ফলে কলেজ লেকের জৈব বৈচিত্র্যের চরিত্রই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে ।শীতকালে একাধিক প্রজাতির পরিযায়ী পাখিদের আশ্রয় স্থল ছিল এটি ।২৭ থেকে ২৮ টি প্রজাতির পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসতো ।এখন আর সেই পাখির দল কলেজ লেকে আসবে না ।তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করে তিনি আরো জানান, এই সৌন্দর্যায়ন প্রক্রিয়াকে উন্নয়ন নয় ,উন্নয়নের ধ্বংসই বলা যায়।

সমীক্ষক দলের অপর এক সদস্য তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য জানান ,এই কলেজ লেকের সৌন্দর্যায়ন নিয়ে একটি স্টেট হোল্ডারদের বৈঠক হয় ।এই বৈঠকেই বিভিন্ন পরিবেশ ভিত্তিক সংঘটন দপ্তরের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ।বলা হয়েছিল এই ধরনের উন্নয়নের ফলে প্রাণীদের চলাচলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হবে ।আর হলোও তাই ।এতে মাইগ্রেটরি পাখিরা তাদের বাসস্থান হারিয়েছে ।এই এলাকা কে এবং জলাশয় কে কেন্দ্র করে বেড জোন অর্থাৎ বাদুরদের একটা পৃথক বাসস্থান গড়ে উঠেছিল ।এখন এরা এখানে থাকতে পারছে না ।তিনি আরো জানান ,সবচেয়ে খারাপ হয়েছে মাঝখানের ব্রীজ বানানো।লেকের জলকে বিভাজিত করে এটি তৈরি করা হয়েছে।

এদিন এই সমীক্ষক দলটি কলেজ লেক পরিদর্শন করে গিয়ে ল্যান্ড এন্ড রেভিনিউ দপ্তরে একটি রিপোর্ট জমা দেবে ।এই রিপোর্টের ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করবে দপ্তর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ,পরিবেশ দূষণের কারণে এমনিতেই ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে ভোর বেলার কাকের ডাক ,শালিক পাখির ডাক ,চড়াই পাখির কিচিরমিচির সহ ডাহুকের কোরাস। এবার পরিবেশ দূষণ এবং কলেজ লেকের কৃত্রিম সৌন্দর্যায়নের ঠেলায় শহর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পরিযায়ী পাখিদের ডাক। প্রকৃতির খেয়াল অবহেলা করে এই ধরনের কৃত্রিম সৌন্দর্যায়ন রাজধানীর একাংশের পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেই বিভিন্ন পরিবেশ বিদদের অভিমত।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

eleven + twenty =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য