Saturday, October 19, 2024
বাড়িখবররাজ্য৪০ তম আগরতলা বইমেলা সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে...

৪০ তম আগরতলা বইমেলা সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বইমেলার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে

উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বইমেলার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে । বইমেলার মধ্য দিয়ে সমাজে স্নিগ্ধতা ও সৌহার্দ্যতা আসে । বইমেলা তাকে আরও সুদৃঢ় করে তোলে । আর্থিক ব্যবস্থার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থাও হয় তাতে । আজ সন্ধ্যায় হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত ৪০ তম আগরতলা বইমেলার সম্মাপনা জ্ঞাপন ও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । অনুষ্ঠানে তিনি বলেন , ভারতীয় সংস্কৃতি ভারতের আত্মা । বইমেলার মধ্য দিয়ে আমাদের ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি বিকশিত হয় । বইমেলা প্রাঙ্গণে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মঞ্চে আয়োজিত বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , বইমেলায় সংস্কৃতি তখনই থাকবে যখন রাষ্ট্র স্বমহিমায় থাকবে । সংস্কৃতি এই মাটিতেই রয়েছে । এই মাটিকেই আমাদের ধরে রাখতে হবে । তিনি বলেন , সংস্কৃতির বিকাশে সরকার যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছে । ৪০ তম আগরতলা বইমেলা সফলভাবে আয়োজন করার জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর প্রশংসাও করেন তিনি ৷ তিনি বলেন , তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর শিল্পকলা ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । এবারের বাজেটেও তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের জন্য আগের তুলনায় অধিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে । অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , রাজ্য বাজেটে প্রতিবার আর্থিক বরাদ্দ সরকার বৃদ্ধি করে চলেছে । পূর্বতন সরকারের ৫ টি বাজেটে বৃদ্ধি হয়েছিল ৪ হাজার কোটি টাকার উপর । আর বর্তমান সরকারের ৫ টি বাজেটে বৃদ্ধি হয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকার উপর । এটাই প্রমাণ করে ত্রিপুরার অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে চলেছে । আগামী ২৫ বছরে ত্রিপুরা কোথায় যাবে সেই রূপরেখাও ইতিমধ্যেই নিরূপণ করা হয়েছে । ছেলেমেয়েরাও তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে অনেকটাই সুবিধা পাবে । কারণ তাদের সামনেও আগামী ২৫ বছরের রূপরেখা চলে এসেছে । এখন ত্রিপুরার যুবদের মধ্যে স্বরোজগারী মানসিকতা তৈরি হয়েছে । এই চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে তারা নিজেরা আর্থিকভাবে সমৃদ্ধি অর্জনের রাস্তা খুঁজে পেয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী আলোচনাকালে বলেন , দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মানুষের জন্য কাজ করছেন । মন কি বাত অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রীর মুখে বার বার ত্রিপুরার নাম উঠে এসেছে । ত্রিপুরার কাঁঠাল কিংবা আপেল কুলের মাধ্যমে স্বরোজগারী ভাবনার কথা বলেছেন তিনি । এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরা থেকে তিনজন পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রীর কথায় , কাজ করার মানসিকতা থাকতে হয় । সেই সঙ্গে কমিটমেন্ট থাকতে হয় । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরার প্রায় ৬ লক্ষ পরিবারের কাছে বিনামূল্যে চাল সরবরাহ করেছেন । বিনামূল্যে গণবন্টন আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে । ২ – এর পাতায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সমবায় মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল বলেন , ত্রিপুরার মধ্যে বইমেলা জনপ্রিয়তা অর্জন করছে । দিন দিন এই মেলার আরও উন্নতি এবং সমৃদ্ধি হবে । ৪০ তম আগরতলা বইমেলার সম্মাননা জ্ঞাপন ও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী । তিনি বলেন , বইমেলা শহর থেকে দূরে হলেও আগরতলা বইমেলার জনপ্রিয়তায় কোনও ভাটা পড়েনি । জ্ঞানের যেমন কোনও পরিধি নেই তেমনি দূরত্ব কখনও জ্ঞান আহরণে বাধা হতে পারে না । তার প্রমাণ গত বছর বইমেলায় ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল । এবার প্রথম ১১ দিনেই বই বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার । ১২ তম দিনে অর্থাৎ শেষ দিনেও বিক্রির পরিমাণ আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে । গতবারের রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছে এবারের বইমেলা । মানুষের মধ্যে জ্ঞানের পরিধিকে আরও ছড়িয়ে দিতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে । এজন্য জেলায় জেলায় বইমেলা আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে সরকার । ইতিমধ্যেই উত্তর জেলা , ঊনকোটি জেলা , ধলাই জেলা ও খোয়াই জেলাতে বইমেলা করা হয়েছে । বাকি জেলাগুলিতে ক্রমান্বয়ে বইমেলার আয়োজন করা হবে । আগামীদিনেও এই বইমেলাকে যাতে আরও সফল করে তোলা যায় এজন্য সহযোগিতা কামনা করেছেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী । বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস । তিনি বলেন , এবছর বইমেলায় ১৬০ টির অধিক স্টল অংশ নিয়েছে । আগামীদিনে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে । পাশাপাশি বইমেলা আয়োজনের সাথে যুক্ত প্রতিটি সাবকমিটি ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেছেন তিনি । অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা দেব ( সরকার ) , আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার , ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা , তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব অভিষেক চন্দ্রা , বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশন কার্যালয়ের সহকারি হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ , ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ডের সম্পাদক শুভব্রত দেব , দি অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী , পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাখাল মজুমদার প্রমুখ ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

one × 5 =

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য