গোমতী জেলা পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স হলে আজ মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ এবং তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের গোমতী জেলাভিত্তিক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ এবং তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস। এই পর্যালোচনা সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জেলা আধিকারিকগণ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পর্যালোচনা সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলি সুবিধাভোগীদের কাছে সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া তিনি তপশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীরা যাতে তাদের স্টাইপেন্ড সময়মত পায় তা সুনিশ্চিত করার জন্য দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
সভায় মৎস্য দপ্তরের উপ অধিকর্তা কৃষ্ণহরি ত্রিপুরা জানান, গোমতী জেলায় মাছ চাষের জন্য মোট ৮ হাজার ৪৪৯ হেক্টর জলাভূমি রয়েছে। মৎস্যচাষি রয়েছে ২৯ হাজার ৩৪০ জন। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে গোমতী জেলায় ১৫ হাজার ৬২৪ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়েছে। মৎস্যচাষিদের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য গোমতী জেলায় ৪টি নলেজ সেন্টার রয়েছে। জেলায় মোট ২৩টি হ্যাচারিতে মাছের পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত মালিকানায় ২টি অর্নামেন্টাল ফিস হ্যাচারি চালু রয়েছে। তিনি জানান, অমরপুরের তিনঘড়িয়াতে নতুন ফিস মার্কেট, উদয়পুরে মৎস্য নলেজ সেন্টার, ধূনিসাগর দীঘিতে মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মৎস্য বিকাশ যোজনায় ৭০০ জন সুবিধাভোগীকে ৬০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপ অধিকর্তা ডা. বিল্ল দেববর্মা জানান, উদয়পুরে ডিস্ট্রিক্ট ভেটেরিনারি হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। হাসপাতাল উদ্বোধন করা হবে ১৮ জুলাই।
পূর্ব মির্জা গ্রাম পঞ্চায়েতে গোশালা নির্মাণ করা হবে। তিনি জানান, কাঁকড়াবন এবং নতুন বাজারে ভেটেরিনারি ডিসপেন্সারির পাকাবাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৯টি ভেটেরিনারি সাব সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে।
ইতিমধ্যে ৩টির কাজ শেষ হয়েছে। বাগমা ও কিল্লাতে ২টি ভেটেরিনারি ডিসপেন্সারি নির্মাণ করার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। খুব শীঘ্রই অমরপুরের থাকছড়াতে নির্মিত পিগ ফার্ম এর উদ্বোধন করা হবে। তাছাড়া তিনি জানান, গোমতী জেলায় ১ লক্ষ ১ হাজার ২৮৪ টি গাভী, ৭৮৬টি ভেড়া, ৬৬৮টি মহিষ, ৫২ হাজার ৭০৪টি ছাগল, ৩০ হাজার ৩৪টি শূকর, ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯২৭টি হাঁস রয়েছে। তিনি জানান, গোমতী জেলায় বর্তমানে ২টি হাসপাতাল ও ৯টি ভেটেরিনারি ডিসপেন্সারি এবং একটি ডিস্ট্রিক্ট পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। এছাড়া এদিন তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, জেলার বিভিন্ন ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানগণ, উদয়পুর পুর পরিষদ এবং অমরপুর নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সনগণ, গোমতী জেলার জেলাশাসক রিঙ্কু লাথের, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ড. এন চঞ্চল, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস এবং তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত দে, জেলার তিনটি মহকুমার মহকুমা শাসকগণ।