আগামী ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠান আগরতলার হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী হলে অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্যভিত্তিক এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। এবছরের আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের উদযাপনের মূল ভাবনা (থিম) হচ্ছে ‘এক পৃথিবী এক স্বাস্থ্য’। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলন একথা জানান যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উপলক্ষে ভারতে এক লক্ষ জায়গায় এক সাথে যোগা দিবস উদযাপন এবং এক হাজার যোগা পার্ক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। ক্রীড়া মন্ত্রী জানান, রাজ্যভিত্তিক যোগা দিবস অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা পুলিশ, বিএসএফ, সিআরপিএফ, টিএসআর, এনওয়াইকেএস, এনসিসি, এনএসএস, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের স্কাউটস এন্ড গাইডস, বিভিন্ন সমাজসেবী সংস্থা, যোগা সংস্থা, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারিরা অংশ গ্রহণ করবেন। তাছাড়াও এই উপলক্ষে এক মেগা রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হবে। রাজ্যের সমস্ত জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরেও একই সাথে যোগা দিবস অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ২০ জুন স্বচ্ছ ভারত অভিযান ও যোগাসন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক যোগা দিবসে রাজ্য ভিত্তিক আইকনিক লোকেশন হিসেবে ঊনকোটি প্রাঙ্গণেও যোগা দিবস অনুষ্ঠিত হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন উদ্যোগসমূহের কথা উল্লেখ করে জানান, রাজ্যের সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর ১০ বছর বা এর অধিক বয়সের ৬০ শতাংশ-এর অধিক দিব্যাঙ্গজন, যাদের পারিবারিক বাৎসরিক আয় সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকা এমন দিব্যাঙ্গজনের জন্য সামাজিক ভাতা সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ডিসেম্বর মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখে এক অনুষ্ঠানে মোট ২৫৩৭ জন দিব্যাঙ্গজনকে সামাজিক ভাতার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এরা সবাই নিজ নিজ ব্যাঙ্ক একাউন্টে প্রতি মাসে ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। এরই অঙ্গ হিসেবে এই মাসে দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৫৮ জন দিব্যাঙ্গজনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তাদের সামাজিক ভাতা প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং আজ থেকে তাদের সামাজিক ভাতা চালু হচ্ছে।
ক্যান্সার রোগীদের ১০০ শতাংশ সামাজিক ভাতা প্রদানের কথা চিন্তা করে গত ১ মে তারিখে অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হসপিটালে একটি হেল্প ডেক্স চালু করা হয়। ইতিমধ্যেই এই হেল্প ডেক্স এর মাধ্যমে ১১৮টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে এবং উক্ত আবেদনপত্রগুলোর অনুমোদনের পর আজ থেকে তাদের সামাজিক ভাতা চালু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনমূলে ত্রিপুরার প্রত্যেক জেলায় ১টি করে ওয়ান স্টপ সেন্টার রয়েছে এবং বর্তমানে সবকয়টি ওয়ান স্টপ সেন্টারে প্রকল্প অনুযায়ী পরিষেবা চলছে। আগরতলা ও কৈলাসহরে ২টি নতুন ওয়ান স্টপ সেন্টার খোলার অনুমোদন দিয়েছে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী জানান, ত্রিপুরায় ১০,২২২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু আছে এবং ৫৩টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র মে মাসে চালু হয়েছে। এছাড়াও জনজাতিদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ভারত সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক ‘ধরত্রী আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানে (ডিএজেজিইউএ) ত্রিপুরার জন্য আরও ১১৯টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দিয়েছে। এরজন্য ১৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার মঞ্জুর করেছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দুই কিস্তিতে পিএম-জনমন প্রকল্পে মোট ১৪১টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দিয়েছিল। একই প্রকল্পে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার আরও ৮৫টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দিয়েছে। এরজন্যে ১০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার মঞ্জুর করেছে।
সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু হলে ত্রিপুরায় মোট ১০,৫৬৭টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র হবে। এতে নতুন ৩৪৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্যে মোট ৩৪৫ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ৩৪৫ জন অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা নিয়োগের সুযোগ হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ডা. পি কে চক্রবর্তী, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সত্যব্রত নাথ উপস্থিত ছিলেন।
