রাজ্যের বর্তমান সরকার নেশামুক্ত সমাজ গঠনে বদ্ধপরিকর। নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়তে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মাদকদ্রব্য ও নেশাকে চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। আজ বিশ্রামগঞ্জে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট সুসংহত নেশামুক্তি কেন্দ্রের ভূমিপূজা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বিশ্রামগঞ্জে জেলা পরিবহণ কার্যালয়ের নতুন ভবন ও সিপাহীজলা সার্কিট হাউসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বিশ্রামগঞ্জ বাজার থেকে চিকনছড়া হয়ে বরকোবাড়ি সড়ক, জম্পুইজলা ব্লকের লাটিয়াছড়া উচ্চতর বিদ্যালয়ের নতুন ভবন এবং চড়িলামস্থিত অটল বিহারী বাজপেয়ী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ ও বাউন্ডারি ওয়ালের উদ্বোধন করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এই লক্ষ্যেই অষ্টলক্ষ্মীর পরিকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছে। তিনি বলেন, নেশা একটি মারাত্মক ব্যাধি। নেশা থেকে নানা রকম দুরারোগ্য রোগেও একজন আক্রান্ত হতে পারেন। এজন্যই সমাজকে নেশার করাল গ্রাস থেকে মুক্ত রাখার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই কাজে শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। সমাজকে নেশার মারাত্মক ছোবল থেকে মুক্ত রাখার জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে অন্যান্য অনেক রাজ্যের তুলনায় ত্রিপুরায় অপরাধ প্রবণতা কমেছে। স্বসহায়ক দল গঠনের মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার উদ্যোগ জারি রয়েছে। গত কয়েক বছরে রাজ্যে ৫৬ হাজার স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্রামগঞ্জের এই নেশামুক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রটি হবে রাজ্যের সর্ববৃহৎ পুনর্বাসন কেন্দ্র। শুধুমাত্র এই ধরনের আধুনিক কেন্দ্র গড়ে তুলে বসে থাকলেই হবে না। নেশাকারবারীদের চিহ্নিত করে তারা যাতে বিপথে পরিচালিত না হতে পারেন সে বিষয়েও বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই নেশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সফলতা আসবে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণে পর্যটন ও পরিবহণমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, নেশা সেবনকারীদের সুস্থ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই এবং উন্নয়নমূলক কাজে তাদের যুক্ত করার লক্ষ্যে এই বৃহৎ আকারের পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে রাজ্যে আমূল পরিবর্তন এসেছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠায় উন্নয়নমূলক কাজেও দারুণ গতি এসেছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পূর্ত ও স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুশান্ত দেব, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, বিধায়ক তফাজ্জল হোসেন, বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব, বিধায়ক সুবোধ দেববর্মা, সিপাহীজলা জেলার পুলিশ সুপার বি জে রেডি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় স্তরে কলা উৎসবে, জাতীয় স্তরে খেলাধুলায় এবং টিবি রোগ প্রতিরোধে সেবামূলক কাজের জন্য বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সিপাহীজলা জেলার বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে পুরস্কার তুলে দেন।