স্ট্রবেরী মূলত শীত প্রদান অঞ্চলের একটি ফল, তবে শীতের মৌসুমে ভারতীয় উপমহাদেশেও এই ফল চাষ করা হয়ে থাকে। ত্রিপুরা রাজ্যে স্ট্রবেরী চাষের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে রাজধানী আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকার উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র। কারণ এই গবেষণা কেন্দ্রে প্রথম পরীক্ষা মূলক ভাবে স্ট্রবেরী চাষ করা হয়। রাজ্যের মাটিতে শীতকালীন এই ফল চাষে সাফল্য আসার পর চাষীদেরকেও প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সহযোগিতা করা হয়। ফলে এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চাষীরা বাণিজ্যিক ভাবে স্ট্রবেরী চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। এখনো প্রতি বছর শীতের মৌসুমে অন্যান্য রাজ্য থেকে এই গবেষণা কেন্দ্রে নতুন নতুন জাতের স্ট্রবেরী চারা এনে পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করা হয়। এবছর এই গবেষণা কেন্দ্রে প্রথম বারের মতো ন্যাচারালি ভেন্টিলেটেড পলি হাউসের মধ্যে স্ট্রবেরী চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই গবেষণা কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সাগরিকা ভট্টাচার্য। নতুন এই পদ্ধতিতে স্ট্রবেরী চাষ করার কারণ হিসেবে তিনি জানান, খোলা মাঠে শীতকালীন এই ফল চাষ করা হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আবদ্ধ ঘরে চাষ করা হলে প্রয়োজন অনুসারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় এর ফলে খোলা মাঠের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি দিন স্ট্রবেরী গাছ থেকে ফলন পাওয়া যাবে। সাধারণত খোলা মাঠে চাষ করলে মার্চ মাস পর্যন্ত ফল আহরণ করা সম্ভব হয়, নতুন এই পদ্ধতিতে চাষ করা হলে আরো দুমাস বেশি সময় গাছগুলি থেকে ফলন পাওয়া যাবে। যার ফলে আর্থিক লাভের সম্ভাবনা বেশি। তিনি আরো জানান, ৫০০ বর্গমিটার জায়গায় জুড়ে নতুন এই পলি হাউসটি গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে মোট ১০ টি বেডে গাছ লাগানো হবে। এক একটি বেডের দৈর্ঘ্য ১৮ মিটার এবং প্রস্থ এক মিটার। এসপ্তাহের ভেটগুলির মধ্যে চারা রোপন করা হবে। এই পলি হাউজের মধ্যে অত্যাধুনিক এবং স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি লাগানো হয়েছে, যেগুলো পলি হাউজের ভিতরের তাপমাত্রা পরিমাপ করে স্বয়ংক্রিয় ভাবে জল ছিটিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সেই সঙ্গে গাছের প্রয়োজনীয় তরল খাবারও সরবরাহ করবে। এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রদান ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষও নিজে পলি হাউজের কাজকর্ম খতিয়ে দেখছেন।