কৃত্রিমতা নয়। প্রাকৃতিক নিয়মে চললে আমাদের দেহ, মন যেমন ভাল থাকবে তেমনি প্রকৃতিও সুরক্ষিত থাকবে। আমরা যদি আমাদের জীবন শৈলীকে পরিবর্তন করতে চাই তাহলে ভারতবর্ষের পরম্পরাগত সংস্কৃতি ও ব্যবস্থাপনাকে আমাদের অবলম্বন করতে হবে। সেলক্ষ্যেই ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ছাত্রছাত্রীদের মনে উদ্ভাবনী শক্তি সৃষ্টির প্রয়াস নিয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা আজ প্রজ্ঞাভবনের ১নং হলে আয়োজিত ‘সবুজ ত্রিপুরার লক্ষ্যে সাশ্রয়ী ও টেকসই জীবন ধারা’ এই থিমের উপর রাজ্যস্তরীয় মডেল প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে একথা বলেন। ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এই মডেল প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে রাজ্যের ৮ জেলা থেকে ৪০টি মডেল প্রদর্শন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা বলেন, রাজ্য সরকার সবুজ ত্রিপুরা গড়ার যে প্রয়াস নিয়েছে তার সঙ্গে সংগতি রেখেই ছাত্রছাত্রীরা এই মডেল প্রদর্শন করেছে। যা পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে স্বল্প ব্যয়ে মডেলগুলি উপস্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তী সময় এগুলিকে শিল্প, কারখানা বা অন্যান্য বাণিজ্যিক ভাবেও ব্যবহার করা যাবে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে প্রকৃতিতে যে সম্পদ আছে তা যথাযথভাবে আমাদের রক্ষা করতে হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। বন্যা প্রতিরোধে আমাদের অধিক বন সৃজন করতে হবে। তিনি বলেন, পরিবেশকে স্বল্প ব্যয়ে যাতে ভাল রাখা যায় সে উদ্যোগ সকলকে গ্রহণ করতে হবে। কেননা পরিবেশকে আমরা যত বেশী ভালবাসব পরিবেশ ততবেশী সবুজ, সুন্দর, টেকসই ও স্বাস্থ্যবান থাকবে। তিনি ছাত্রছাত্রীদের উপস্থাপিত মডেলগুলির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সমাজকে সচেতন করতে ছাত্রছাত্রীদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী সৃষ্টি উপহার দিতে হবে। তবেই সমাজ বদলে যাবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ত্রিপুরা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের সচিব ড. কে শশীকুমার ‘সবুজ ত্রিপুরার লক্ষ্যে সাশ্রয়ী ও টেকসই জীবন ধারা’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের অধিকর্তা মহেন্দ্র সিং এবং বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা। মডেল প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করেছে ড. বি আর আম্বেদকর দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়, পিত্রা দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয় এবং তুলাশিখর রাজনগর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী সহ অতিথিগণ ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানাধিকারীর হাতে যথাক্রমে ১০ হাজার টাকার চেক, ট্রফি, শংসাপত্র, ৭ হাজার টাকর চেক, ট্রফি, শংসাপত্র এবং ৫ হাজার টাকার চেক, ট্রফি ও শংসাপত্র তুলে দেন। এছাড়া অন্যান্য মডেলকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া ১২টি থিমের উপর হ্যাকাথন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১২ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রত্যকেকে ৩ হাজার টাকার চেক, ট্রফি ও শংসাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়াও স্পট ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় মোট ২০ জনকে ট্রফি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। সকলকে ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্যসচিব ড. বিশু কর্মকার। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় ১১০০টি ইকো ক্লাব রয়েছে।