ভারতরত্ন ক্লাবের সম্পাদক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের মানসিক নির্যাতনে এক নিরীহ ব্যক্তি জীবনে চরম সিদ্ধান্ত নিল ।মঙ্গলবার বিষ পান করেন তিনি ।বৃহস্পতিবার সকালে জিবি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় ।মৃত ব্যক্তির নাম বাবুল দত্ত।বাংলায় একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে ।প্রবাদটি হল,পাটা পোতার ঘসাঘসিতে যান যায় মরিচের।অনেকটা এমনই ঘটনা ঘটলো এক নিরিহ ব্যক্তির জীবনে। গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা রাতে আততায়ীর গুলিতে খুন হন উষা বাজারের ভারতরত্ন ক্লাবের সম্পাদক দুর্গা প্রসন্ন দেব ওরফে ভিকি। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ পশ্চিম ভুবন বন থেকে সুস্মিতা সরকার নামে এক যুবতীকে গ্রেফতার করে। এই যুবতীর সাথে ভালোবাসায় বন্ধনে জড়িয়ে পড়ে পশ্চিম নোয়াবাদীর আমতলী এলাকার বাবুল দত্তের ছেলে রাকেশ দত্ত ।রাকেশ এবং সুস্মিতার সম্পর্কে কথা ২ পরিবারের সদস্যরাই জানতেন। মাঝেমধ্যে সুস্মিতা রাকেশের বাড়িতে আসত। পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প করত। এরমধ্যে গত চার মাস আগে রাকেশ কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি দেয়। রাকেশ চলে যাওয়ার পরও সুস্মিতা রাকেশের কথা মত তাদের বাড়িতে এসে তার মা বাবার খোঁজ খবর করতো। ভিকি হত্যাকান্ডে সুস্মিতার গ্রেপ্তারের সংবাদে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে বাবুল দত্তের পরিবারের সদস্যদের।ঘটনার দুই দিন পর পুলিশ হঠাৎ করে বাবুল দত্তের বাড়িতে চড়াও হয়। পুলিশ বাবুল দত্তকে বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে বলে অভিযোগ। এরপর যাওয়ার সময় তার মোবাইল ফোনটি পুলিশ নিয়ে যায় ।অভিযোগ ,পুলিশ নাকি তাকে বাড়িঘর থেকে না বেরোবার পরামর্শ দেয়।এরপর আরো দুবার পুলিশ তাকে তার বাড়িতে জেরা করে।গত সোমবার সন্ধ্যা বেলায় ধৃত সুস্মিতা সরকারের বোন এবং মা তাদের বাড়িতে হাজির হয় ।তাদের সাথে আরও একজন পুরুষ এবং মহিলা ছিলেন ।তারা সুস্মিতার বোন এবং মাকে এই বাড়িতে রাখার জন্য বাবুল দত্তের উপর চাপ সৃষ্টি করেন ।এক প্রশ্নের জবাবে অপর পুরুষ এবং মহিলা নিজেদের নিরাপত্তা কর্মী বলে দাবি করেন বলে অভিযোগ। কিন্তু বাবুল দত্ত এতে রাজি হননি। পরে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান।এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবুল দত্ত ।মঙ্গলবার সকালে তিনি বাজারে যান ।বাজার থেকে বাসায় ফিরে এসে প্রচন্ড ঘামতে শুরু করেন ।এই সময়েই তিনি বিষ পান করেন বলে তার শোকার্ত কন্যা জানান ।সঙ্গে সঙ্গে তাকে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ।বৃহস্পতিবার সকালে জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বাবুল দত্ত।
বাবুল দত্তের মৃত্যুর ঘটনা এবং তার শোকার্ত পরিবারের অভিযোগ একাধিক প্রশ্নচিহ্ন উত্থাপিত করল ।ধৃত সুস্মিতা সরকারের মা এবং বোনের সাথে যে পুরুষ এবং মহিলা সাদা পোশাকে তাদের বাড়ি গিয়েছিলেন ,তাদের পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠলো ।এরা আদৌ পুলিশের লোক ছিলেন কিনা সেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি উঠেছে।