১৩৫৫ বঙ্গাব্দের ২৩ আশ্বিন দিনটিতেই গোলাঘাটি এলাকায় জুমিয়াদের পুনর্বাসন, ভূমিহীনদের খাস জমি বন্ধবস্ত, বকেয়া খাজনা মুকুব, মহাজনদের ঋণের সুদের হার কমানোর দাবিতে কৃষকরা যখন আন্দোলনে নামেন, তখন আন্দোলনের মেজাজ বুঝে সুদখোর মহাজন সরকারি লোককে সাক্ষী রেখে ধান দেওয়া হবে বলে কথা দেন। কিন্তু সেদিন কৃষকদের ধানের বদলে মিলেছিল গুলি। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৩ জন কৃষকের। শুধু তাই নয়, আহত হয়েছিলেন শতাধিক কৃষক। এরপর থেকেই প্রতিবছর ২৩ আশ্বিন দিনটিকে সারা ভারত কৃষকসভা ও গণমুক্তি পরিষদ গোলাঘাটি শহীদান দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বিগত দিনের মতো বুধবার আগরতলা সহ গোটা রাজ্যে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে গোলাকাটি শহীদান দিবস পালনের মধ্য দিয়ে শহীদ কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে এই শহীদান দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হয় আগরতলা মেলার মাঠ স্থিত কৃষক ভবনে। সেখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ কৃষকদের প্রতিকৃতিতে ও শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান দুই সংগঠনের নেতৃত্ব। এতে উপস্থিত ছিলেন কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি প্রাক্তন মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা, সম্পাদক পবিত্র কর, প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ মতিলাল সরকার সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। দিবসটি পালনের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক পবিত্র কর বলেন, রাজ্যের কৃষক আন্দোলনে এই গোলাঘাটি শহীদান দিবস একটি প্রতিরোধ প্রতিবাদ দিবস আন্দোলন। কৃষকদের আন্দোলন আজকের দিনেও অব্যাহত। মহাজনি প্রথা এখনো শেষ হয়নি। এখন তাদের চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় কর্পোরেটরায় এখন নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের কৃষি ব্যবস্থা। দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ও সবচেয়ে বেশি কৃষক বিরোধী। তাই কৃষক বিরোধী এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরো বেশি জাগ্রত করার জন্য দিবসটি পালনের তাৎপর্য রয়েছে অনেক।